শিরোনাম

ঢাকা, ৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ (বাসস) : স্বাগতিক হিসেবে ঘরের মাঠের সুবিধাতো থাকছেই, তার উপর এ বছর ১৮টি আন্তর্জাতিক ম্যাচ জয়ের রেকর্ডকে সঙ্গী করে ২০২৫ আফ্রিকান নেশন্স কাপে মাঠে নামতে যাচ্ছে অধিনায়ক আশরাফ হাকিমিকে নিয়ে অনুপ্রাণীত মরক্কো।
এ কারনেই মরক্কোকে নিয়ে প্রত্যাশার মাত্রাটা একটু বেশী। আগামী ২১ ডিসেম্বর থেকে ১৮ জানুয়ারি পর্যন্ত মরক্কোতে অনুষ্ঠিত হবে আফ্রিকান নেশন্স কাপের ৩৫তম আসর। উদ্বোধনী ম্যাচে রাবাতে ফেবারিট মরক্কোর প্রতিপক্ষ কোমোরোস।
মরক্কো ছাড়াও বর্তমান চ্যাম্পিয়ন আইভরি কোস্ট, মোহাম্মদ সালাহর নেতৃত্বাধীন মিশর, ভিক্টর ওশিমেনের নাইজেরিয়া ও সাদিও মানের সেনেগালও নিজেদের প্রমানে মুখিয়ে আছে। এই দেশগুলো যেকোন সময়ই মরোক্কানদের স্বপ্ন ভেঙ্গে দিয়ে টুর্ণামেন্টে এগিয়ে যেতে পারে।
১৯৫৭ সালে শুরু হওয়া আফ্রিকান ফুটবলের এই সর্বোচ্চ আসর ইতোমধ্যেই বিশ্ব ফুটবলে একটি অনন্য ঐতিহ্য রচনা করেছে। এবারের টুর্নামেন্ট ঘিরে সে কারনেই বিশ্বব্যাপী টেলিভিশন দর্শকদের আগ্রহ নিয়ে এখন থেকেই আলোচনা শুরু হয়েছে।
বার্তা সংস্থা এএফপি আফ্রিকান নেশন্স কাপের কিছু বিষয় খোঁজার চেষ্টা করেছে : পটভূমি ১৯৫৭ সালের প্রথম আসরে স্বাগতিক সুদান, চ্যাম্পিয়ন মিশর ও ইথিওপিয়া- এই তিনটি দল অংশ নিয়েছিল। দক্ষিণ আফ্রিকার অংশ নেবার কথা থাকলেও অল-হোয়াইট অথবা অল-ব্ল্যাক দলের কোনটা অংশ নিবে এই দ্বিধায় ঐ সময়কার স্থানীয় সরকারের নীতির কারনে তাদের দলকে বাতিল ঘোষনা করা হয়। সময় যত গড়িয়েছে বাছাইপর্বে পরিধি বেড়েছে, আর সে কারনে অংশগ্রহণকারী দলের সংখ্যাও বহুগুনে বৃদ্ধি পেয়েছে। ১৯৬৩ সালে ৬টি, পাঁচ বছর পর ৮টি, ১৯৯২ সালে ১২টি, চার বছর পর ১৬টি এবং ২০১৯ সালে মিশরে অনুষ্ঠিত টুর্ণামেন্টে ২৪টি দল অংশ নেয়।
জায়ান্টস :
মিশর (সাতটি শিরোপা), ক্যামেরুন (পাঁচটি), ঘানা (চারটি), আইভরি কোস্ট ও নাইজেরিয়া (তিনটি করে) সবসময়ই আফ্রিকান নেশন্স কাপে ফেবারিট হিসেবে মাঠে নামে। এই কয়টি দেশ ৩৪টি টুর্নামেন্টের মধ্যে ২২টিতেই শিরোপা জয় করেছে। গোলরক্ষক ইসাম আল হাদারি, সেন্টার-ব্যাক ওয়ায়েল গোমা ও মিডফিল্ডার মোহাম্মদ আবুট্রেইকা ও মোহাম্মদ বারাকাতের মত তারকাদের নিয়ে মিশর ২০০৬-২০১০ সাল পর্যন্ত রেকর্ড টানা তিনটি শিরোপা জয় করেছে।
অনুপস্থিত দল :
২০২৬ বিশ্বকাপের মূল পর্বের টিকিট পাওয়া কেপ ভার্দে ও ঘানা এবারের আসর থেকে বাদ পড়েছে। বাছাইপর্বে নিজেদের প্রমানে ব্যর্থ হওয়া এই দুই দলকে নিয়ে সমালোচনাও কম হয়নি। ছয় ম্যাচে কেপ ভার্দে মাত্র একটিতে জিতেছে এবং চারবারের চ্যাম্পিয়ন ঘানার পারফরমেন্স আরো খারাপ। বাছাইপর্বে তিন ম্যাচে ড্র ও তিনটিতে পরাজিত হয়েছে।
ফেবারিট দল :
আফ্রিকান নেশন্স কাপের বেশ কয়েকটি আসরে টানা ব্যর্থ হওয়া মরক্কো শেষ পর্যন্ত নিজেদের গায়ে ফেবারিটের তকমা লাগাতে পেরেছে। গত বছর আইভরি কোস্টের আসরে তারা সফল ছিল। শেষ ১৬’তে গিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে ২-০ ব্যবধানে পরাজিত হয়। চ্যালেঞ্জারদের মধ্যে রয়েছে ২০২৬ বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের বাঁধা পেরুতে না পারা নাইজেরিয়া, ক্যামেরুন। ১৫ বছর আগে সর্বশেষ শিরোপা জয়ী মিশরও রয়েছে ফেবারিটের তালিকায়।
ডার্ক হর্সেস :
এবারের আসরে খেলতে আসা যে ১২টি দল এখনো শিরোপা জিতেনি তাদের মধ্যে মালিকে নিয়ে আশা করাই যায়। গত বছর কোয়ার্টার ফাইনালে আইভরি কোস্টের কাছে হেরে দূর্ভাগ্যজনক বিদায় হয়েছিল।
তারকা খেলোয়াড় :
২০২৫ সালে আফ্রিকান বর্ষসেরা খেলোয়াড় হাকিমির উপরই থাকবে সবার নজড়। এছাড়াও এই তালিকায় থাকা শীর্ষ ১০ জনের মধ্যে আটজনই এবারের আসরে খেলছে।
প্রস্তুতি :
শেষ মুহূর্তে এসে ফিফা ইউরোপীয়ান ক্লাবগুলো থেকে আফ্রিকান খেলোয়াড়দের ছাড়ার তারিখ পিছিয়ে দিয়েছে। আগে যেখানে সিদ্ধান্ত ছিল ৮ ডিসেম্বর তাদের ছাড়া হবে, নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এই তারিখ নির্ধারিত হয়েছে ১৫ ডিসেম্বর। এই সিদ্ধান্তে বেশ কিছু দলের কোচ প্রস্তুতি নিয়ে শঙ্কায় পড়েছে এবং একইসাথে হতাশা ব্যক্ত করেছে।
লাভ :
ক্যামেরুনে অনুষ্ঠিত ২০২২ আফ্রিকান নেশন্স কাপ যখন সেনেগাল জয় করে কনফেডারেশন অব আফ্রিকান ফুটবল (সিএএফ) ১০ মিলিয়ন ডলারেরও কম লাভ করেছিল। এবারের আসর থেকে সিএএফ ১১০ মিলিয়ন ডলার বেশী আয়ের প্রত্যাশা করছে। লভ্যাংশের এই বিশাল বৃদ্ধি হয়েছে কার্যত টিভি স্বত্ব থেকে।