বাসস
  ১৫ অক্টোবর ২০২৫, ০৯:১২

প্রথমবারের মত আফগানিস্তানের কাছে হোয়াইটওয়াশ বাংলাদেশ

ছবি : সংগৃহীত

ঢাকা, ১৪ অক্টোবর ২০২৫ (বাসস) : ওয়ানডেতে প্রথমবারের মত আফগানিস্তানের কাছে হোয়াইটওয়াশ হল বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। আজ সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডেতে আফগানদের কাছে ২০০ রানের বড় ব্যবধানে হেরেছে টাইগাররা। ওয়ানডেতে আফগানিস্তানের কাছে রান বিবেচনায় এটিই সবচেয়ে বড় হার বাংলাদেশের। আগেরটি ছিল ২০২৩ সালে চট্টগ্রামে ১৪২ রানে হেরেছিল টাইগাররা। 

সিরিজের প্রথম দুই ম্যাচে যথাক্রমে- ৫ উইকেটে ও ৮১ রানে হেরেছিল বাংলাদেশ। ফলে তিন ম্যাচের সিরিজ ৩-০ ব্যবধানে হেরে হোয়াইটওয়াশের লজ্জা পেল মেহেদি হাসান মিরাজের দল। এই সফরে ওয়ানডের আগে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজে আফগানিস্তানকে হোয়াইটওয়াশ করেছিল বাংলাদেশ। 

আবু ধাবির জাহেদ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে প্রথমে ব্যাট হাতে নেমে দারুণ সূচনা করে আফগানিস্তান। উদ্বোধনী জুটিতে দলকে ৯৮ বলে ৯৯ রান এনে দেন দুই ওপেনার রহমানুল্লাহ গুরবাজ ও ইব্রাহিম জাদরান। 

১৬তম ওভারের শেষ বলে গুরবাজকে ৪২ রানে থামিয়ে বাংলাদেশকে প্রথম উইকেট এনে দেন স্পিনার তানভীর ইসলাম। 

গুরবাজ ফেরার পর নতুন ব্যাটার সেদিকুল্লাহ আতালকে নিয়ে রানের চাকা সচল রেখে আফগানিস্তানের স্কোর দেড়শ পার করেন জাদরান। এই জুুটিতে ওয়ানডে ক্যারিয়ারের নবম হাফ-সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন জাদরান। 

৩২তম ওভারে প্রথমবারের মত আক্রমণে এসে আতাল-জাদরান জুটি ভাঙেন স্পিনার সাইফ হাসান। আতালকে ২৯ রানে শিকার করেন তিনি। 

নিজের দ্বিতীয় ওভারেও উইকেটের দেখা পান সাইফ। সুইপ শট খেলে স্কয়ার লেগে তাওহিদ হৃদয়ের দারুণ ক্যাচে ২ রানে থামেন আফগানিস্তান অধিনায়ক হাসমতুল্লাহ শাহিদি।

৪ রানের ব্যবধানে ২ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে আফগানিস্তান। সেই চাপ আরও বাড়িয়ে দেন জাদরান। নাভার্স নাইন্টিতে রান আউটের ফাঁদে পড়েন তিনি। গত ম্যাচের মত এবারও ৯৫ রানে আউট হন জাদরান। তার ১১১ বলের ইনিংসে ৭টি চার ও ২টি ছক্কা ছিল। 

দলীয় ১৮৬ রানে জাদরান ফেরার পর ষষ্ঠ উইকেটে মোহাম্মদ নবী ও আজমতুল্লাহ ওমারজাইর ২৩ বলে ২৩ রানের জুটিতে আফগানিস্তানের রান ২শ পার হয়। ৩টি চারে ২০ রান করে তানভীরের বলে বোল্ড হন ওমারজাই। 

এরপর রশিদ খান ৮ রানে আউটের পর অষ্টম উইকেটে নবী ও নাঙ্গোলিয়া খারোতের ২৫ বলে ২৮ রানের জুটিতে আড়াইশর কাছাকাছি পৌঁছে যায় আফগানিস্তান। খারোতি ১০ এবং এএম গাজানফার শূন্য হাতে পেসার হাসান মাহমুদের শিকার হন। ৪৮ ওভার শেষে ২৪৯ রানে নবম উইকেট হারায় আফগানরা। তখনও ক্রিজে ছিলেন নবী। 

মিরাজের করা ৪৯তম ওভারে ৩ ছক্কায় ২৫ রান তুলেন নবী। হাসানের করা ইনিংসের শেষ ওভার থেকে ৩টি চার ও ১টি ছক্কায় ১৯ রান তুলে আফগানিস্তানকে বড় সংগ্রহ এনে দেন নবী। ৫০ ওভারে ৯ উইকেটে ২৯৩ রান তুলে আফগানরা। ৪টি চার ও ৫টি ছক্কায় ৩৭ বলে ৬২ রান নিয়ে অপরাজিত থাকেন নবী।

বাংলাদেশের হয়ে সাইফ ৬ রানে ৩টি, হাসান ও তানভীর ২টি করে এবং মিরাজ ১ উইকেট নেন।

জবাব দিতে নেমে ৫১ বলে ৩৫ রানের সূচনা করেন বাংলাদেশের দুই ওপেনার সাইফ হাসান ও মোহাম্মদ নাইম। নবম ওভারে বাংলাদেশের প্রথম ব্যাটার হিসেবে সাজঘরে ফিরেন নাইম। ২৪ বলে ৭ রান করে আফগানিস্তান পেসার ওমারজাইর শিকার হন তিনি।

দলীয় ৩৫ রানে প্রথম উইকেট পতনের পর আফগানিস্তানের পেসার বিলাল সামি ও স্পিনার রশিদ খানের তোপে ২৭.১ ওভারে ৯৩ রানে অলআউট হয় বাংলাদেশ। আফগানদের বিপক্ষে এটিই সর্বনিম্ন রান টাইগারদের। 

সাইফ ছাড়া বাংলাদেশের কোন ব্যাটারই দুই অংকে পা রাখতে পারেনি। সাইফ ২টি চার ও ৩টি ছক্কায় ৫৪ বলে সর্বোচ্চ ৪৩ রান করেন। 

নাইমের ৭ রানের পর নাজমুল হোসেন শান্ত ৩, তাওহিদ হৃদয় ৭, মিরাজ ৬, শামীম হোসেন শূন্য, নুরুল হাসান ২, রিশাদ হোসেন ৪, তানভীর ৫, হাসান ৯ ও নাহিদ রানা অপরাজিত ২ রান করেন। 

আফগানিস্তানের বিলাল ৩৩ রানে ৫ উইকেট নেন। ওয়ানডে ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় ম্যাচেই প্রথমবারের মত ইনিংসে ৫ উইকেটের দেখা পেলেন বিলাল। রশিদ ১২ রানে নেন ৩ উইকেট।  

সংক্ষিপ্ত স্কোর :

আফগানিস্তান : ২৯৩/৯, ৫০ ওভার (জাদরান ৯৫, নবি ৬২*, সাইফ ৩/৬)। 

বাংলাদেশ : ৯৩/১০, ২৭.১ ওভার (সাইফ ৪৩, হাসান ৯, বিলাল ৫/৩৩)। 

ফল : আফগানিস্তান ২০০ রানে জয়ী।