বাসস
  ২০ মে ২০২৫, ১৫:০৬

সিরিজ জয়ের লক্ষ্য নিয়ে কাল সংযুক্ত আরব আমিরাতের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ

ঢাকা, ২০ মে, ২০২৫ (বাসস) : স্বাগতিক সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে তিন টি-টোয়েন্টি সিরিজ জয়ের লক্ষ্য নিয়ে আগামীকাল শারজাহ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে তৃতীয় ও শেষ ম্যাচ খেলতে নামছে বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দল।

বাংলাদেশ সময় রাত ৯টায় শুরু হবে  ম্যাচটি। 

প্রথম ম্যাচে ওপেনার পারভেজ হোসেন ইমনের রেকর্ড সেঞ্চুরিতে ২৭ রানের জয় দিয়ে স্বাগতিকদের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজ শুরু করে সফরকারী বাংলাদেশ। তবে দ্বিতীয় ম্যাচে নাটকীয়ভাবে আরব আমিরাতের কাছে ২ উইকেটে হেরে যায় টাইগাররা। 

দ্বিতীয় ম্যাচে ৫ উইকেটে ২০৫ রান করেও হার মানতে হয়েছে  বাংলাদেশকে। শেষ ওভারে ১২ রানের প্রয়োজন মিটিয়ে ১ বল বাকী থাকতে অবিস্মরনীয় জয় পায় আরব আমিরাত। বাংলাদেশের বিপক্ষে যেকোনো ফরম্যাটে আবর আমিরাতের প্রথম জয়ের মঞ্চ তৈরি করেন দলটির অধিনায়ক ও ওপেনার মোহাম্মদ ওয়াসিম। ৪২ বলে ৮৪ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেলেন তিনি।

টি-টোয়েন্টিতে আইসিসির পূর্ণ সদস্য কোন দলের বিপক্ষে সহযোগী কোন দেশের ২০৬ রান তাড়া করে ম্যাচ জয়ে এটি নয়া রেকর্ড। এর আগে ২০১৫ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ১৯১ রান তাড়া করে জিতেছিল আফগানিস্তান। টি-টোয়েন্টিতে এই প্রথম ২শ’র বেশি রান তাড়া করে ম্যাচ জিতল আরব আমিরাত। 

জয়ের জন্য আরব আমিরাত অসাধারণ দক্ষতা এবং ধৈর্য প্রদর্শন করলেও নিজেদের  কিছু কিছু ভুলে হারতে হয় বাংলাদেশকে। 

শেষ ওভারে জয়ের জন্য যখন সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুই বলে দুই রান প্রয়োজন ছিল, তখনই বড় ভুল করে বসেন বাংলাদেশ ফিল্ডার তাওহিদ হৃদয়। বল ছুঁড়ে মারতে দেরি করলে রান আউটের সুযোগ নষ্ট করে টাইগাররা। ফলে দুই রান নিয়ে জয় নিশ্চিত করে আবর আমিরাত। হায়দার আলীর ৬ বলে ১৫ রানের ক্যামিও ইনিংস স্বাগতিক দলের জয়ে অবদান রাখে। 

ব্যাটাররা নিজেদের সেরাটা দিলেও বাংলাদেশের বোলিং-ফিল্ডিং আশানুরূপ হয়নি। নিজের অভিষেক ম্যাচে ৪ ওভারে ৫০ রানে ২ উইকেট নেন নাহিদ। এছাড়া তানজিম হাসান ৩.৫ ওভারে ৫৫ রানে ১ উইকেট নেন। 

আরেক পেসার শরিফুল ইসলাম ও স্পিনার রিশাদ হোসেন বল হাতে সফল ছিলেন। ৪ ওভার করে বল করে শরিফুল ৩৪ রানে ও রিশাদ ২৮ রানে ২টি করে উইকেট নেন। 

অবশ্য দলের বাজে ফিল্ডিংয়ের কথা স্বীকার করলেও হারের জন্য শিশিরকে দায়ী করেছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক লিটন দাস। তিনি বলেন, ‘যেকোনো হারই কষ্টের। এই উইকেটে আমরা ভালো ব্যাটিং করেছি। উইকেট ভালো ছিল। যখন তারা ব্যাট করেছে তখন শিশিরের সুবিধা পেয়েছে। ফিল্ডিং এবং মাঝের ওভারে আমরা খারাপ বোলিং করেছি।’

তিনি আরও বলেন, ‘ যখন আপনি এমন ধরনের মাঠে খেলবেন যেটা দেখতে ছোট এবং শিশির একটি বড় ফ্যাক্টর, তখন পরিকল্পনা করে বল করতে হয়। রানা প্রথম দিকে যেভাবে বল করেছিল. আমরা তার কাছ থেকে আরও বেশি আশা করেছিলাম। ভালো-খারাপ দিন আসতেই পারে। আমরা আলোচনা করব এবং ঘুরে দাঁড়াব (তৃতীয় ম্যাচে)।’

বাংলাদেশের বিপক্ষে ঐতিহাসিক জয়ে উচ্ছ্বসিত সংযুক্ত আরব আমিরাত। জয়ের ধারা অব্যাহত রেখে ২-১ ব্যবধানে সিরিজ জয়ের লক্ষ্য তাদের। 

আরব আমিরাতের অধিনায়ক ওয়াসিম বলেন, ‘আমরা আমাদের সেরাটা উজার করে দিতে মাঠে (তৃতীয় ম্যাচ) নামব। আশা করি, আমরা ২-১ ব্যবধানে সিরিজ জিততে পারব।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমি অত্যন্ত খুশি যে, আমরা বাংলাদেশকে হারিয়েছি। দলের পারফরমেন্সেও খুশি। আমি সবাইকে এই স্কোর তাড়া করার সাহস দিচ্ছিলাম। কারণ আমরা এখানকার কন্ডিশন সর্ম্পকে জানি।’

টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে এখন পর্যন্ত পাঁচবার মুখোমুখি হয়েছে বাংলাদেশ-সংযুক্ত আরব আমিরাত। এরমধ্যে প্রথম চার ম্যাচেই জয় পেয়েছিল টাইগাররা। পঞ্চম দেখায় আরব আমিরাতের কাছে হার বরণ করে নেয় লিটন দাস-তাওহিদ হৃদয়রা। 

বাংলাদেশ দল : লিটন দাস (অধিনায়ক), মাহেদি হাসান, তানজিদ হাসান তামিম, পারভেজ হোসেন, সৌম্য সরকার, নাজমুল হোসেন শান্ত, তাওহিদ হৃদয়, শামীম হোসেন, জাকের আলী অনিক, রিশাদ হোসেন, তানভীর ইসলাম, হাসান মাহমুদ, তানজিম হাসান সাকিব, নাহিদ রানা ও শরিফুল ইসলাম। 

সংযুক্ত আরব আমিরাত দল : মুহাম্মদ ওয়াসিম (অধিনায়ক), আলিশান শরাফু, আরিয়ানশ শর্মা, আসিফ খান, ধ্রুব পরাশার, ইথান ডি’সুজা, হায়দার আলী, মতিউল্লাহ খান, মুহাম্মদ জাওয়াদুল্লাহ, মুহাম্মদ জোহাইব, মুহাম্মদ জুহাইব, রাহুল চোপড়া, সাগির খান, সঞ্চিত শর্মা এবং সিমরঞ্জিত সিং।