শিরোনাম

ঢাকা, ২৯ ডিসেম্বর, ২০২৫ (বাসস): ভুয়া ও অস্তিত্বহীন প্রতিষ্ঠান ‘দিয়া শিপিং লিমিটেড’- এর নামে জাল কাগজপত্র তৈরি করে ৪৪ কোটি টাকা ঋণ আত্মসাতের অভিযোগে পিকে হালদারসহ ১৮ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
আজ দুদক প্রধান কার্যালয়ের জনসংযোগ বিভাগের সহকারী পরিচালক মো. তানজির আহমেদ এ তথ্য জানান।
দুদক জানায়, দিয়া শিপিং লিমিটেড নামে একটি ভুয়া প্রতিষ্ঠান দেখিয়ে ২০১৪ সালে এফএএস ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড থেকে ছয় বছর মেয়াদে ৪৪ কোটি টাকা ঋণ নেওয়া হয়। প্রতিষ্ঠানটির নিবন্ধিত অফিস দেখানো হয় গেন্ডারিয়ায় এবং কার্যক্রমের ঠিকানা ধানমন্ডিতে। তবে তদন্তে প্রতিষ্ঠানটির বাস্তব অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি।
দুদকের তদন্তে উঠে আসে, ঋণের বিপরীতে গাজীপুরের কালিয়াকৈরে ৩৩২ শতক জমি জামানত হিসেবে দেখানো হলেও ঋণ অনুমোদনের সময় ওই জমির মূল্য অতিমূল্যায়ন করা হয়। ২০১৪ সালে একটি সার্ভে প্রতিষ্ঠান জমির বাজারমূল্য দেখায় ১২ কোটি ৬১ লাখ টাকা, কিন্তু ২০২৫ সালে অন্য একটি সার্ভে প্রতিষ্ঠানের মূল্যায়নে একই জমির বর্তমান মূল্য নির্ধারিত হয় মাত্র ৮০ লাখ টাকা।
তদন্তে আরও দেখা যায়, কোনো প্রকার যাচাই-বাছাই ছাড়াই গ্রাহকের দাখিলকৃত কাগজপত্রের ওপর নির্ভর করে ঋণ প্রস্তাব তৈরি ও অনুমোদন করা হয়। ২০১৪ সালের ২২ ডিসেম্বর এফএএস ফাইন্যান্সের পরিচালনা পর্ষদের ১৬৩তম সভায় ঋণটি অনুমোদন পায়।
ঋণের অর্থের মধ্যে ৪২ কোটি টাকা বাংলাদেশ ব্যাংকের চেকের মাধ্যমে বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠানের হিসাবে স্থানান্তর করা হয় এবং বাকি অর্থও বিভিন্ন ব্যাংকের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের হিসাবে সরিয়ে নেওয়া হয়। পরে একাধিক ধাপে (লেয়ারিং) অর্থ স্থানান্তর ও রূপান্তরের মাধ্যমে টাকা আত্মসাৎ ও পাচার করা হয়।
দুদক জানায়, তদন্তে প্রমাণ পাওয়া গেছে যে পিকে হালদার চক্রের সদস্যরা এই অর্থ আত্মসাৎ ও মানিলন্ডারিংয়ে জড়িত ছিলেন।
এ ঘটনায় দিয়া শিপিং লিমিটেডের চেয়ারম্যান ও সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক শিবপ্রসাদ ব্যানার্জি, পরিচালক পাপিয়া ব্যানার্জি, রিলায়েন্স ফাইন্যান্স লিমিটেডের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রশান্ত কুমার হালদারসহ এফএএস ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেডের চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান, পরিচালক ও সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ মোট ১৮ জনকে আসামি করা হয়েছে।
আসামিদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধি ১৮৬০-এর ৪০৯, ৪২০, ৪৬৮, ৪৭১ ও ১০৯ ধারা, দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন ১৯৪৭-এর ৫(২) ধারা এবং মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ২০১২-এর ৪(২) ও ৪(৩) ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে।