শিরোনাম

বিপুল আশরাফ
চুয়াডাঙ্গা, ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫ ( বাসস): ঘন কুয়াশা ও মেঘাচ্ছন্ন আবহাওয়ার কারণে চুয়াডাঙ্গায় গত দুই দিন ধরে সূর্যের দেখা মেলেনি। এতে দিনভর বেড়েছে শীতের প্রকোপ। তীব্র শীতে বিপর্যস্ত জনজীবন। বিশেষ করে যারা নিম্নআয়ের খেটে খাওয়া মানুষ তাদের দুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে।
দিনভর ঘন কুয়াশা আর বাতাসের তীব্রতা অনেক বেশি। শীত ও ঠাণ্ডার কারণে জেলাজুড়ে বেড়েছে সর্দি, জ্বর, কাশি, নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়া রোগ। চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে এসব রোগীর সংখ্যা বেড়েই চলেছে।
শীতের কারণে খেটে খাওয়া মানুষকে বেশি বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে। বেলা বাড়লেও গুড়ি গুড়ি বৃষ্টির মত কুয়াশা ঝরছে। আজ সোমবার জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১২.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
বাতাসের আর্দ্রতা ৯১ ভাগ। আজ বেলা সাড়ে ১১টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত সূর্যের দেখা মেলেনি। গতকাল রবিবারও সারাদিন মেঘলা আকাশ ও কুয়াশায় ঢাকা ছিলো। আগামীকাল মঙ্গলবার থেকে তাপমাত্রা আরো কমতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস।
এদিকে তীব্র ঠাণ্ডার কারণে রাস্তাঘাটে মানুষের উপস্থিতি তেমন একটা দেখা যাচ্ছে না। অসহায় মানুষগুলো সড়কের পাশে খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছে।
দিনমজুর ছমির উদ্দিন বলেন, সকালে কাজে এসেছি। ঘন কুয়াশা ও তীব্র ঠাণ্ডার কারণে শরীরে কাঁপুনি ধরে যাচ্ছে। তবুও কিছু করার নেই। পেটের দায়ে কাজে আসতে হয়।
গাইদঘাট এলাকার কাপড় ব্যবসায়ী শরিফুল ইসলাম বলেন, তীব্র শীতে মানুষজন কেউ বাইরে বের হচ্ছে না।
তাই ঠিকমতো পোষাক বিক্রি হচ্ছে না। তবে যেদিন আবহাওয়া পরিষ্কার ছিল সেদিন কাপড়ের দোকানে ভিড় ছিল বেশ। এই তীব্র শীতে গরম কাপড়ের চাহিদা বেশি।
দামুড়হুদা উপজেলার কোমরপুর এলাকার বাসিন্দা ইসমাইল বলেন, সকাল থেকে ঠাণ্ডায় অবস্থা খুব খারাপ।
মাঠে কাজ করা যাচ্ছে না। ক্ষণিকেই হাত-পা বরফ হয়ে যায়। সকালে বৃষ্টির মতো কুয়াশা পড়ছে। আমরা যারা দিন এনে দিন খাই, তারা সবাই কষ্টে আছি।
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক বিদ্যুৎ কুমার বিশ্বাস বলেন, হাসপাতালের ডায়রিয়া ওয়ার্ডে শতাধিক রোগী ভর্তি রয়েছে। এর মধ্যে বেশিরভাগই শিশু ডায়রিয়া রোগী।
এই শীতে শিশু ও বৃদ্ধদের পুষ্টিকর খাবারের পাশাপাশি উষ্ণ স্থানে থাকার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। এছাড়া কুসুম গরম পানি পান করা এবং ঘরের মধ্যে থাকার অনুরোধ করা হয়েছে।
চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আউলিয়ার রহমান বলেন, এই শীতে শিশু ও বৃদ্ধরা সাধারণত স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে থাকে। এ সময় ঘরের মধ্যে থাকতে পারলে ভালো হয়। বাইরে বের হলে গরম পোশাক পরে বের হতে হবে। এ্যাজমা রোগীদের আরো সচেতন হতে হবে। অনেকেই ঠাণ্ডার কারণে গোসল করতে চায় না। কম পানি পান করে। এতে শরীরে পানি শূন্যতা দেখা দিতে পারে। তাই পরিমাণমতো পানি পান করতে হবে ও নিয়মিত গোসল করতে হবে।
চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জামিনুর রহমান বলেন, জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১২.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। আজ সারাদিন মেঘলা আকাশ ও কুয়াশা থাকতে পারে। আগামীকাল থেকে তাপমাত্রা আরো কমে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।