বাসস
  ২৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৯:১২
আপডেট : ২৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৯:১৪

জাতীয় নির্বাচন সুষ্ঠু ও সুন্দর হবে, আস্থা রাখতে চায় জামায়াত

ঢাকা, ২৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ (বাসস): জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এবং কেন্দ্রীয় প্রচার ও মিডিয়া বিভাগের প্রধান অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের বলেছেন, আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি জাতীয় নির্বাচন সুষ্ঠু, সুন্দর ও উৎসবমুখর হবে, আমরা আস্থা রাখতে চাই।

আজ রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশন ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসির উদ্দিনের সঙ্গে জামায়াতে ইসলামীর একটি প্রতিনিধিদলের বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি।

এহসানুল মাহবুব জুবায়ের বলেন, ‘আমরা নির্বাচন কমিশনে (ইসি) যে সমস্ত বিষয়ে পরামর্শ দিয়েছি এবং দৃষ্টি আর্ষণ করেছি, এটা নিশ্চিত করা উচিত। জনগণের যাতে আস্থা থাকে যে, আগামী ১২ ফেব্রুয়ারির নির্বাচন সুষ্ঠু, সুন্দর এবং সবদিক থেকে একটা উৎসবমুখর নির্বাচন হবে। আমরা এখন আস্থা রাখতে চাই।

তিনি বলেন, আজকের প্রধান বিষয় ছিল আচরণবিধি। গত ১১ ডিসেম্বর নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হয়েছে। ঘোষণার পরপরই আচরণবিধির বিধি অনুসরণ করে আমরা নিজেরাই নির্বাচনী যে সমস্ত প্রচার প্রকাশনা সামগ্রীগুলো ছিল অর্থাৎ পোস্টার, ব্যানার, বিলবোর্ড— আমরা নিজেরাই সরিয়ে ফেলেছি। যেহেতু আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন খুবই গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচন। জাতির প্রত্যাশা এই নির্বাচন যাতে ফ্রি-ফেয়ার এবং ক্রেডিবল হয়। এখানে আমাদের পক্ষ থেকে যাতে কোনো ধরনের ত্রুটি না থাকে। কিন্তু আমরা দেখতে পাচ্ছি যে, বিভিন্ন স্থানে নির্বাচনী আচরণবিধি মানার ক্ষেত্রে বড় ধরনের ব্যত্যয় হচ্ছে এবং লঙ্ঘন হচ্ছে। আজকে এই সমস্ত বিষয়ে আমরা ইসির দৃষ্টি আকর্ষণ করেছি উনাদের পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে আরো সক্রিয় হওয়া ও দায়িত্ব পালন করার জন্য।

তিনি বলেন, বিভিন্ন জায়গায় ম্যানুয়ালি যেসব ব্যানারগুলো লাগানো হয়েছে। বিভিন্ন বিলবোর্ড ইত্যাদির  সাথে আবার ভার্চুয়াল অনেকগুলো আছে। এগুলো উনাদের পক্ষ থেকে যাতে অপসারণ করা হয় এবং একটি লেভেল প্লেইং ফিল্ড নিশ্চিত করার।

তিনি অভিযোগ করেন, বড় একটি দলের পক্ষ থেকে উনারা বিভিন্ন ধরনের ওয়াদা করছেন। আমরা এতো লাখ কার্ড দিব। একটা কার্ডে এতো হাজার, এতো লাখ টাকা পাবেন। এই ধরনের অনেকগুলো ওয়াদা করছেন। আমরা বলেছি এটা নির্বাচন আচরণবিধির সুনির্দিষ্ট খেলাফ। এ ব্যাপারে উনাদেরকে পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য আমরা বলেছি। অর্থাৎ যেখানেই যতটুকু আচরণবিধি লঙ্ঘিত হচ্ছে তাদের দৃষ্টি আকর্ষণে এনেছি। বলছি যে, এগুলোর বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে উনারা যাতে ব্যবস্থা নেন।

এহসানুল মাহবুব জুবায়ের বলেন, আমরা নির্বাচন কেন্দ্রগুলোতে সিসি ক্যামেরা স্থাপনের কথা বলেছি। সিসি ক্যামেরা স্থাপন না হলে সন্ত্রাসীরা এবং যাদের উদ্দেশ্য অসৎ থাকবে, তারা নির্বাচনকে ভণ্ডুল করার জন্য, বানচাল করার জন্য একটা বড় ধরনের সুযোগ পেয়ে যাবে। সিসি ক্যামেরা থাকলে সেই সুযোগটা আশা করি আর থাকবে না। উনারা বলেছেন, আমরা উদ্যোগ নিয়েছি। বিভিন্ন ধরনের প্রস্তাব বা বিভিন্ন ধরনের পরিকল্পনার কথা বলেছেন। আমরা বলেছি, যাই করেন, এটা সুনিশ্চিত হতে হবে— জনগণ যাতে নির্বাচনে মানসিক প্রশান্তিসহ আসে। কোনো ধরনের ভয় যেন তাদের মধ্যে না থাকে এবং ভয়শূন্য পরিবেশে যাতে আসে। যেখানে এসে নির্বাচনে ভোট দিলে কোনো সন্ত্রাসের শিকার হবে না, কোনো ধরনের সমস্যার মুখোমুখি হতে হবে না।

তিনি বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে আমরা কথা বলেছি। অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারের কথা বলেছি। চিহ্নিত সন্ত্রাসীদেরকে গ্রেফতারের কথা বলেছি। উনাদের গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় হচ্ছে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার করা, সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার করা। এ ব্যাপারে উনারা বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছেন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রধানদের সাথে, অন্যান্য বাহিনীর প্রধানদের সাথে মিটিং করেছেন। আমরা বলেছি— জনমনে আইনশৃঙ্খলা নিয়েও উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা আছে। ইসির পক্ষ থেকে আরো দৃশ্যমান পদক্ষেপ আমরা দেখতে চাই।’

জামায়াত নেতাদের নিরাপত্তার প্রসঙ্গে এহসানুল মাহবুব জুবায়ের বলেন, ‘আমাদের আমিরে জামায়াত, সেক্রেটারি জেনারেল, কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ ও শীর্ষ নেতৃবৃন্দ ব্যাপক সফর করবেন। নির্বাচনের সময় বিভিন্ন স্থানে তাদেরকে যেতে হবে। তাদের নিরাপত্তার বিষয়টি আমরা দৃষ্টি আকর্ষণ করেছি। যে কেউ অনেক ফ্যাসিলিটিস পাবেন। ভিভিআইপি ফ্যাসিলিটিস পাবেন। আবার কেউ পাবেন না। এটা তো লেভেল প্লেইং ফিল্ড হলো না। এ বিষয়ে ইসির পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় ভূমিকা উনারা রাখবেন, এই সমস্ত বিষয় নিয়ে আমরা আলোচনা করেছি।’

বৈঠকে জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য মোবারক হোসাইন এবং কেন্দ্রীয় কর্ম পরিষদ সদস্য অ্যাডভোকেট জসীম উদ্দীন সরকার অংশ নেন।

এ সময় নির্বাচন কমিশনার আব্দুর রহমানেল মাছউদ এবং নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিবালয়ের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।