শিরোনাম

ঢাকা, ২৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ (বাসস): দুর্যোগ ও জলবায়ু প্রেক্ষাপটে প্রতিবন্ধিতা-সমন্বিত সামাজিক সুরক্ষা বিষয়ক একটি জাতীয় সংলাপ আজ ঢাকার ব্র্যাক সেন্টার ইন-এ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
অ্যাকসেস বাংলাদেশ ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে, সিবিএম গ্লোবাল বাংলাদেশ ও নবলোক পরিষদের সহযোগিতায় এবং ‘এস্টাবলিশিং ডিজাস্টার রেজিলিয়েন্ট কমিউনিটিজ ইন সাতক্ষীরা’ প্রকল্পের আওতায় এ সংলাপের আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানে মোট ৫৩ জন অংশগ্রহণকারী উপস্থিত ছিলেন। অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের প্রতিনিধি, মূলধারার এনজিও, আন্তর্জাতিক এনজিও, সিভিল সোসাইটি সংগঠন (সিএসও), বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, প্রতিবন্ধী ব্যক্তি এবং জাতীয় ও সাতক্ষীরার শ্যামনগরভিত্তিক প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের সংগঠনের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. কামাল উদ্দিন বিশ্বাস।
বিশেষ অতিথি ছিলেন মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক শারমিন আরা, জাতীয় প্রতিবন্ধী উন্নয়ন ফাউন্ডেশনের উপপরিচালক ও উপসচিব মো. ফারুক আহমদ, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের পরিচালক নিতাই চন্দ্র দে সরকার এবং বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্টের পরিচালক ড. মোহাম্মদ নাজমুল হক।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন অ্যাকসেস বাংলাদেশ ফাউন্ডেশনের সহ-প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারপারসন মহুয়া পাল। সেশন পরিচালনা করেন সংস্থার সহ-প্রতিষ্ঠাতা ও নির্বাহী পরিচালক আলবার্ট মোল্লা। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন ইনক্লুশন লিড তাসলিম জাহান।
প্রধান অতিথি মো. কামাল উদ্দিন বিশ্বাস তার বক্তব্যে বলেন, সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচিগুলোকে প্রতিবন্ধিতা অন্তর্ভুক্তির দৃষ্টিকোণ থেকে সার্বিকভাবে পর্যালোচনা করা জরুরি। এতে কর্মসূচির কার্যকারিতা বোঝা যাবে এবং প্রয়োজনীয় পরিবর্তন আনা সম্ভব হবে।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের পরিচালক নিতাই চন্দ্র দে সরকার বলেন, অ্যাকসেস বাংলাদেশ ফাউন্ডেশনের গবেষণার ফলাফল ও সুপারিশ দুর্যোগ সংক্রান্ত স্থায়ী আদেশ ২০১৯ এবং জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা ২০২৬-২০৩০ পর্যালোচনার সময় বিবেচনায় নেওয়া হবে। তিনি আরও বলেন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের আওতায় পরিচালিত বিভিন্ন সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচিতে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের অন্তর্ভুক্ত করা সম্ভব।
বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্টের পরিচালক ড. মোহাম্মদ নাজমুল হক জানান, প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের ওপর জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় সরকারি সংস্থার পাশাপাশি এনজিওগুলোর সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করতে তারা আগ্রহী।
মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক শারমিন আরা বলেন, অধিদপ্তর বর্তমানে সাতক্ষীরার শ্যামনগরে একটি সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। তিনি বিশেষ করে প্রতিবন্ধী নারীসহ আরও বেশি সংখ্যক প্রতিবন্ধী ব্যক্তিকে অন্তর্ভুক্ত করার এবং প্রতিবন্ধিতার ধরন অনুযায়ী তথ্য সংরক্ষণের প্রতিশ্রুতি দেন।
জাতীয় প্রতিবন্ধী উন্নয়ন ফাউন্ডেশনের উপপরিচালক মো. ফারুক আহমদ বলেন, প্রতিবন্ধিতা-সমন্বিত সামাজিক সুরক্ষা কার্যক্রম জোরদার করতে ফাউন্ডেশন সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আরও সমন্বিতভাবে কাজ করবে।
অনুষ্ঠানে অ্যাকসেস বাংলাদেশ ফাউন্ডেশনের হেড অব প্রোগ্রাম মো. সোহেল রানা একটি প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। তিনি সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির বর্তমান চিত্র, প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের অংশগ্রহণ, বিদ্যমান চ্যালেঞ্জ এবং করণীয় বিষয়গুলো তুলে ধরেন।
তিনি জানান, ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরে বাংলাদেশে ২৪টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগের অধীনে মোট ৯৫টি সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি বাস্তবায়িত হচ্ছে। এর মধ্যে ১৯টি কর্মসূচি দুর্যোগ ও জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট। সাতটি কর্মসূচি প্রতিবন্ধিতা সংশ্লিষ্ট এবং একটি কর্মসূচি সরাসরি প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য-প্রতিবন্ধী ভাতা ও শিক্ষা উপবৃত্তি কর্মসূচি।
আলোচনায় নীতিগত ও প্রাতিষ্ঠানিক এবং বাস্তবায়ন পর্যায়ের বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ চিহ্নিত করা হয়। একই সঙ্গে সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচিকে প্রতিবন্ধীবান্ধব ও অন্তর্ভুক্তিমূলক করতে একাধিক সুপারিশ উপস্থাপন করা হয়।
২০২৬-২০২৭ অর্থবছরের সামাজিক সুরক্ষা বাজেটকে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের চাহিদা অনুযায়ী আরও অন্তর্ভুক্তিমূলক ও প্রাসঙ্গিক করার বিষয়ে একমত পোষণ করেন অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারীরা।