শিরোনাম

ঢাকা, ৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ (বাসস) : সীমান্তে অব্যাহতভাবে বাংলাদেশি নাগরিকদের হত্যার প্রতিবাদ জানিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু)।
আজ বুধবার ডাকসুর জিএস এস এম ফরহাদ স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এসব হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদ জানিয়ে কূটনৈতিক ও আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানিয়েছে ছাত্রসংসদের নেতৃবৃন্দ।
বিবৃতিতে বলা হয়, গত রোববার (৩০ নভেম্বর) মধ্যরাতে চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার সীমান্তবর্তী এলাকায় ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) বাংলাদেশি দুই যুবক ইব্রাহিম রিংকু (২৮) ও মমিন মিয়া’কে (২৯) নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করে হাত-পা বেঁধে পদ্মা নদীতে নিক্ষেপ করার অভিযোগ উঠেছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) সীমান্তে অব্যাহত বাংলাদেশি নাগরিক হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় গভীর নিন্দা ও তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, স্বাধীনতার পর থেকে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) অব্যাহতভাবে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করে বাংলাদেশি নাগরিকদের সীমান্তে গুলি করে হত্যা করছে। কিশোরী ফেলানীর কাঁটাতারে ঝুলে থাকা লাশ কিংবা স্বর্ণা দাসকে নির্মমভাবে হত্যার ঘটনা সারা বিশ্বের বিবেক নাড়া দিলেও বিএসএফ’র মনোভাব বদলায়নি।
বিবৃতিতে বলা হয়, ভারত বারবার সীমান্তে হত্যাকাণ্ড ‘শূন্যে নামিয়ে আনার’ প্রতিশ্রুতি দিলেও বাস্তবে তার উল্টো চিত্রই দেখা গেছে। মানবাধিকার সংস্থা ও গণমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, ২০০৯ থেকে ২০২৫ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত বিএসএফ’র গুলিতে ও নির্যাতনে প্রায় ৬৫৩ জন বাংলাদেশি নিহত হয়েছেন; আহত হয়েছেন সহস্রাধিক। আজ পর্যন্ত এসব হত্যাকাণ্ডের কোনো তদন্ত বা বিচার হয়নি।
বিএসএফ, অবৈধভাবে মানুষকে বাংলাদেশে ঠেলে দেওয়া বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বের গভীর উদ্বেগ সৃষ্টি করছে উল্লেখ করে বিবৃতিতে বলা হয়, চলতি বছরেই ভারত থেকে প্রায় ২ হাজার মানুষকে অবৈধভাবে ‘পুশ-ইন’ করে বাংলাদেশে ঠেলে দেওয়া হয়েছে, যার মধ্যে রোহিঙ্গা ও ভারতীয় নাগরিকও রয়েছে। সীমান্ত এলাকায় বিস্ফোরণ, ড্রোন ওড়ানো এবং গুলিবর্ষণের মতো ঘটনাও ঘটেছে। ভারত থেকে অবৈধ পুশ-ইন ও বাংলাদেশি নাগরিক হত্যাকাণ্ডের বিচার না হওয়া দেশের নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্বের ক্ষেত্রে গভীর উদ্বেগ সৃষ্টি করছে।
পতিত ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের নতজানু ও দুর্বল পররাষ্ট্র নীতির কারণে বিএসএফ বছরের পর বছর সীমান্তে হত্যাকাণ্ড অব্যাহত রেখেছে।
বিবৃতিতে আরো বলা হয়, ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে বিএসএফ কর্তৃক সংঘটিত প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের জন্য হত্যাকারী বিএসএফ’র বিরুদ্ধে অবশ্যই কূটনৈতিক ও আইনি পদক্ষেপ নিতে হবে। সীমান্ত হত্যার মতো গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনাকে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে উত্থাপন করে বিচার নিশ্চিত করতেও জরুরি পদক্ষেপ নিতে হবে।