শিরোনাম

ঢাকা, ১ ডিসেম্বর, ২০২৫ (বাসস): গুলশানের একটি পরিত্যক্ত সরকারি প্লট প্রতারণা ও জাল দলিলের মাধ্যমে আত্মসাতের চেষ্টার অভিযোগে তাসলিমা ইসলাম ও সাবেক সাব-রেজিস্ট্রার মো. আবদুল আওয়ালের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
আজ দুদক প্রধান কার্যালয়ে এক নিয়মিত মিডিয়া ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান দুদকের মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন। ২০১৪ সালের ১৬ জুন গুলশান থানায় দণ্ডবিধির ১৬৭/২১৭/২১৮/১০৯/৪২০/৪৬৭/৪৬৮/৪৭১/৫১১ ধারাসহ ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারায় দায়ের করা হয়। মামলাটির বাদি ছিলেন সরকারি আবাসন পরিদপ্তরের তৎকালীন সহকারী পরিচালক মো. মাসুদুল আলম। মামলার তদন্ত করেছেন দুদকের উপ-পরিচালক মোজাম্মিল হোসেন।
দুদকের তদন্তে উঠে আসে, পাকিস্তান আমলে গুলশান মডেল টাউনের সিডাব্লিউএস (বি)-৮৪ নম্বরের ১১ কাঠা ৬ ছটাক আয়তনের প্লটটি ১৯৬১ সালে মো. আলী হোসেনের নামে লিজ হয় এবং ১৯৬৬ সালে নতুন লিজ দলিল সম্পাদন করে আসামি আনিসুল ফাতেমার নামে বরাদ্দ দেওয়া হয়। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি দেশত্যাগ করলে সম্পত্তিটি প্রেসিডেন্ট অর্ডিন্যান্স ১৬/১৯৭২ অনুযায়ী পরিত্যক্ত ঘোষণা করে সরকারি আবাসন পরিদপ্তরের নিয়ন্ত্রণে নেয়া হয়।
কিন্তু তদন্তে দেখা যায়, প্রকৃত মালিক আনিসুল ফাতেমার কোনও অস্তিত্ব নেই। এই সুযোগে আসামি তাসলিমা ইসলাম একজন ভূয়া নারীকে আসল মালিক সাজিয়ে প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে প্লটটি নিজের দখলে নেয়ার চেষ্টা করেন। এই উদ্দেশ্যে তিনি গুলশান সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের তৎকালীন সাব-রেজিস্ট্রার মো. আবদুল আওয়ালের যোগসাজশে ‘অপ্রত্যাহারযোগ্য সাধারণ আমমোক্তারনামা’ দলিল নং-৭৭৭ (১৩ জানুয়ারি ২০০৫) তৈরি করেন- যা তৎকালীন দি পাওয়ারস-অফ-এটর্নি এ্যাক্ট, ১৮৮২-এ কোনও বিধান না থাকা সত্ত্বেও প্রতারণামূলকভাবে সৃজিত একটি মিথ্যা দলিল।
দুদকের তদন্তে দলিলে ব্যবহৃত ঠিকানা ‘৩২ হাটখোলা রোড, ঢাকা’ ও ভূয়া প্রমাণিত হয় এবং দলিলের কোনও সাক্ষীর অস্তিত্বও পাওয়া যায়নি।
তদন্তকারী কর্মকর্তার পর্যবেক্ষণে বলা হয়, আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে ক্ষমতার অপব্যবহার, জালিয়াতি, প্রতারণা ও মিথ্যা দলিল সৃজনের মাধ্যমে সরকারিকৃত পরিত্যক্ত সম্পত্তি আত্মসাতের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত ছিলেন।
তদন্ত প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে কমিশন আসামি তাসলিমা ইসলাম ও মো. আবদুল আওয়ালের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট ধারায় চার্জশিট দাখিল করা হয়েছে।