শিরোনাম

ঢাকা, ২১ নভেম্বর, ২০২৫(বাসস) : ভূমিকম্পে আতংকিত হয়ে হুড়োহুড়ি করে উঁচু ভবন থেকে নামতে গিয়ে নরসিংদী জেলার বিভিন্ন স্থানে শতাধিক লোকজন আহত হয়েছেন এবং এখন পর্যন্ত চার জন নিহত হয়েছে।
নরসিংদী জেলা প্রশাসনের বরাত দিয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং জানায়, জেলার সদর উপজেলার চিনিশপুর ইউনিয়নের গাবতলি নামক স্থানে নির্মাণাধীন ভবনের মালামাল নিচে পড়ে ৪ জন আহত হয়; এরমধ্যে মারাত্মকভাবে মাথায় আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে আহত দুই জনকে চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজে পাঠানো হয়। এই দুই জনের মধ্যে ঢাকা মেডিকেল কলেজে কর্তব্যরত চিকিৎসক শিশু হাফেজ ওমর (৮) কে মৃত ঘোষণা করেন এবং তার বাবা দেলোয়ার হোসেন উজ্জ্বল এর অবস্থা আশংকাজনক।
নরসিংদীর পলাশ উপজেলার চরসিন্দুর ইউনিয়নের মালিতা পশ্চিমপাড়া গ্রামের বৃদ্ধ কাজেম আলী ভূইয়া (৭৫) মাটির ঘরের নিচে চাপা পড়েন এবং পরবর্তীতে তাকে জেলা হাসপাতালে নেওয়ার পথে মারা যান।
এদিকে পলাশ উপজেলার ডাংগা ইউনিয়নের ইসলামপাড়া নয়াপাড়া গ্রামের সিরু মিয়ার পুত্র নাসিরউদ্দিন (৬০) ভূমিকম্পের সময় ফসলী জমি থেকে আতঙ্কিত হয়ে দৌড়ে আসার পথে রাস্তা থেকে নিচে লাফ দিয়ে পড়ে মারা যান। তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে মারা যাওয়ায় নিকটাত্মীয়রা লাশ হাসাপাতালে নেননি।
এ ছাড়া শিবপুর উপজেলার জয়নগর ইউনিয়নের আজকিতলা (পূর্বপাড়া) গ্রামের ফোরকান (৪০) ভূমিকম্পের সময় গাছ থেকে পড়ে যান এবং তাৎক্ষণিক নরসিংদী জেলা হসপিটালে নিলে ঢাকা মেডিক্যাল রেফার্ড করে। ঢাকায় নেওয়ার পথে রাস্তায় তিনি মারা যান।
ভূমিকম্পের ফলে ক্ষয়ক্ষতির সম্পর্কে জানানো হয়, ঘোড়াশাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের সাবস্টেশনে অগ্নিকাণ্ডের সূচনা হলে ফায়ার সার্ভিস ঘটনাস্থলে প্রেরণের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণে নিয়ে বন্ধ করে দেওয়া হয়। এছাড়াও ওই সাবস্টেশনের বিপুল পরিমাণ পিটি (প্রডাকশন ট্রান্সফরমার) ভূ-কম্পনের ফলে ভেঙে পড়ে।
ঘোড়াশাল পলাশ ফার্টিলাইজার কারখানার ইউরিয়া প্রডাকশন ভূমিকম্পনজনিত কারণে সাময়িক বন্ধ হয়ে যায়। ভূ-কম্পনের সময় ইঞ্জিন মেশিনারিজ ভাইব্রেশনের মাধ্যমে বন্ধ হয়ে যায় এবং মেশিনারিজ চেকিং অপারেশনে রয়েছে।
জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ও সার্কিট হাউসসহ শতাধিক ভবনে ফাটল দেখা দিয়েছে। ভূমিকম্প সৃষ্ট ক্ষয়ক্ষতি ও দুর্যোগ সংশ্লিষ্ট তথ্যের জন্য জেলা প্রশাসন থেকে কন্ট্রোল রুম খুলে সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে খোঁজ খবর রাখা হচ্ছে বলে জেলা প্রশাসন জানায়।