বাসস
  ০৮ নভেম্বর ২০২৫, ২১:৫৮

সাংবাদিকদের দলবাজি ত্যাগ করে পেশাদারিত্ব সমুন্নত রাখতে হবে : এম আবদুল্লাহ

শনিবার রংপুর টাউন হলে সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের অর্থবছরের অনুদানের চেক বিতরণ উপলক্ষ্যে এক মতবিনিময় সাংবাদিক এম আব্দুল্লাহ। ছবি : বাসস

ঢাকা, ৮ নভেম্বর, ২০২৫ (বাসস) : বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুহাম্মদ আবদুল্লাহ বলেছেন, সাংবাদিকদের দলবাজি পরিত্যাগ করে পেশাদারিত্বকে সমন্বিত রেখে কাজ করে যেতে হবে।

আজ শনিবার রংপুর টাউন হলে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরের অনুদানের চেক বিতরণ উপলক্ষ্যে এক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন। রংপুর জেলার ১৯ জন সাংবাদিকের মাঝে বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের অনুদানের চেক বিতরণ করেন তিনি।

‘সাংবাদিকদের আর্থিক সুরক্ষা ও কল্যাণে করণীয় এবং প্রস্তাবিত সংশোধনীসহ গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের সুপারিশ ও সাংবাদিক সুরক্ষা আইন বাস্তবায়ন’ শীর্ষক এ মতবিনিময় ও সমাবেশে এসব কথা বলেন তিনি।

এম আবদুল্লাহ বলেন, কোনো সরকারের লেজুরবৃত্তি না করে এমনকি নিজের মতাদর্শের সরকারের চোখে চোখ রেখে কথা বলতে ও লিখতে পারলেই আর্থিক এবং কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তা নিশ্চিত এবং স্বাধীন গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠা সম্ভব।

তিনি জানান, শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের কাছে একজন সাংবাদিক হিসেবে আমার ঋণ আছে। আজ আমি এই বক্তব্য দিতে পারতাম না যদি তিনি ক্ষমতার পাদদেশে এসে মিডিয়াকে উন্মুক্ত করে না দিতেন। 

কারণ বাকশাল কায়েম করে তখন চারটি পত্রিকা ছিল। সেই অবস্থা থেকে তিনি উন্মুক্ত করে না দিলে আমি সাংবাদিক হতে পারতাম না।

তিনি বলেন, একজন সাংবাদিক হিসেবে হতে হবে নির্মোহ। নইলে আমাদের সমস্যার সমাধান হবে না। আমি এখনও সরকারি চাকরিতে থেকেও যে কলাম লিখছি। সেখানেও সঠিকটা লেখার চেষ্টা করছি। এতটুকু সৎ সাহস থাকতে হবে। দলবাজির বাইরে থেকে নির্মোহ সাংবাদিকতা করতে হবে। ‘যখন বিএনপি ক্ষমতায় ছিল ১০ বছর, তখন আমি প্রধানমন্ত্রী বিটে কাজ করেছি বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে। কিন্তু কখনও সেখানে কোনো তদবিরবাজি করি নাই।’

আবদুল্লাহ বলেন, গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের সুপারিশের গণমাধ্যম সংস্কার কমিশন অধ্যাদেশ-২০২৫ তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের খসড়ায় আবারও নেয়া হয়েছে।

এ ছাড়াও সাংবাদিক সুরক্ষা অধ্যাদেশ থেকে যেগুলো বাদ দেওয়া হয়েছিল তার অনেক কিছু আবারও সংযোজন করা হয়েছে। 

এসময় তফসিল ঘোষণার আগেই গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নের বিষয়ে সাংবাদিকের দাবি সঙ্গেও একাত্মতা ঘোষণা করেন তিনি।

তিনি বলেন, শিগগিরই প্রবীণ সাংবাদিকদের অনুদানের বিষয়টি স্পষ্ট হবে। বিজ্ঞপ্তি দেয়া হরে সাংবাদিকদের সন্তানদের জন্য শিক্ষাবৃত্তির। সমাবেশে অন্যান্য বক্তারা তফসিল ঘোষণার আগেই গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নের দাবি জানান।

রংপুর সাংবাদিক ইউনিয়ন-আরপিইউজে ও বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের যৌথ উদ্যোগে বেলা ১২টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত এই সমাবেশে তিনশতাধিক গণমাধ্যম কর্মী অংশ নেন।

রংপুর জেলাপ্রশাসক মোহাম্মদ রবিউল ফয়সালের সভাপতিত্বে ও আরপিইউজে সাধারণ সম্পাদক সরকার মাজহারুল মান্নানের সঞ্চালনায় এতে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন ট্রাস্টের উপ-পরিচালক (অর্থ ও প্রশাসন) এ বি এম রফিকুল ইসলাম, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) আবু সাঈদ, আরপিইউজে সভাপতি সালেকুজ্জান সালেক।

সমাবেশে বক্তব্য দেন রংপুর সম্মিলিত সাংবাদিক সমাজের সদস্য সচিব লিয়াকত আলী বাদল, রংপুর প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি ও দৈনিক আমাদের প্রতিদিনের সম্পাদক মাহবুব রহমান হাবু, সিটি প্রেসক্লাব সভাপতি স্বপন চৌধুরী, আরপিইউজে সিনিয়র সহ-সভাপতি চঞ্চল মাহমুদ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম মানিক প্রমুখ।