বাসস
  ০৩ নভেম্বর ২০২৫, ১৮:৪৬

সালমান এফ রহমানসহ ৩৪ জনের বিরুদ্ধে দুদকের পাঁচ মামলা

সালমান এফ রহমান। ফাইল ছবি

ঢাকা, ৩ নভেম্বর, ২০২৫ (বাসস): শেয়ারবাজার ও ঋণ জালিয়াতির মাধ্যমে হাজার হাজার কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে বেক্সিমকো গ্রুপের চেয়ারম্যান ও সাবেক প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি, শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান এ.এস.এফ. রহমানসহ মোট ৩৪ জনের বিরুদ্ধে পৃথক পাঁচটি মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

আজ দুদক প্রধান কার্যালয়ে এক নিয়মিত মিডিয়া ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান দুদকের মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন।

মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, আসামিরা পিয়ারলেস গার্মেন্টস লিমিটেড ৫ কোটি ২ লাখ ৫০ হাজার ৭৭২ মার্কিন ডলার, প্লাটিনাম গার্মেন্টস লিমিটেড কর্তৃক ১ কোটি ৮৮ লাখ ৩ হাজার ৬৫৮ মার্কিন ডলার, কাঁচপুর এপারেলস লিমিটেড কর্তৃক ৮ কোটি ৪০ লাখ ২৯ হাজার ৫৪৭ মার্কিন ডলার, স্কাইনেট এ্যাপারেলস লিমিটেড কর্তৃক ১ কোটি ৪৭ লাখ ২৯ হাজার ৩৪০ মার্কিন ডলার এবং নিউ ঢাকা ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড কর্তৃক ৪ কোটি ৭৭ লাখ ১৫ হাজার ৪৮২ মার্কিন ডলারসহ সর্বমোট ২১ কোটি ৫৫ লাখ ২৮ হাজার ৮০১ মার্কিন ডলার জনতা ব্যাংক পিএলসি এর লোকাল অফিস থেকে ঋণের নামে আত্মসাৎপূর্বক পাচার করেছেন বলে দুদকের প্রাথমিক অনুসন্ধানে প্রমাণিত হয়েছে।

মামলায় আসামির তালিকায়- সালফান এফ রহমান, তার ভাই এ.এস.এফ. রহমান, তার ছেলে শায়ান ফজলুর রহমান এবং ভাতিজা আহমেদ শাহরিয়ার রহমান রয়েছেন। এছাড়া ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সংশ্লিষ্ট আসামিরা হলেন- বেক্সিমকো লিমিটেডের পরিচালক ইকবাল আহমেদ, এ বি সিদ্দিকুর রহমান, মাসুদ ইকরামুল্লাহ খান, শাহ মঞ্জুরুল হক, রীম এইচ শামসুদ্দোহা, ব্যবস্থাপনা পরিচালক ওসমান কাওসার চৌধুরী, স্কাইনেট অ্যাপারেলস লিমিটেডের এমডি আনোয়ারুল বাশার, পরিচালক নাসরিন আহমেদ, ক্রিসেন্ট অ্যাক্সেসরিজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবু নাঈম মাহমুদ সালেহিন, পরিচালক মো. মোস্তাফিজুর রহমান তানভীর, প্লাটিনাম গার্মেন্টস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আলিফ ইবনে জুলফিকার, মোসা. নুসরাত হায়দার, নিউ ঢাকা ইন্ডাস্ট্রিজ লি. এর চেয়ারম্যান সালাউদ্দিন খান মজলিস, পরিচালক আব্দুর রউফ, কাঁচপুর অ্যাপেরেলস লিমিটেডের এমডি মাহফুজুর রহমান খান, পরিচালক সৈয়দ তানভীর এলাহী, পিয়ারলেস গার্মেন্টস লিমিটেড এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ওয়াসীউর রহমান, পরিচালক রিজিয়া আক্তার।

আসামিদের মধ্যে জনতা ব্যাংকের সংশ্লিষ্টরা হলেন- প্রধান কার্যালয়ের সিইও আব্দুছ ছালাম আজাদ, সাবেক মহাব্যবস্থাপক মিজানুর রহমান, অবসরপ্রাপ্ত উপ-মহাব্যবস্থাপক আব্দুর রহিম, সাবেক মহাব্যবস্থাপক শহিদুল ইসলাম, ডিজিএম (অব.) মো. মমতাজুল ইসলাম, সিনিয়র অফিসার রফিকুল ইসলাম, ব্যবস্থাপক সালেহ আহমেদ, অবসরপ্রাপ্ত সহকারী মহাব্যবস্থাপক মোহাম্মদ মোয়াজ্জেম হোসেন, সাবেক এজিএম মোহাম্মদ শাজাহান, ব্যবস্থাপক হুমায়ুন কবির ঢালী ও ম্যানেজার শ ম মাহাতাব হোসাইন বাদশা।

দুদক জানায়, আসামিদের বিরুদ্ধে শেয়ারবাজার জালিয়াতি, প্লেসমেন্ট শেয়ার কারসাজি ও প্রতারণার মাধ্যমে শেয়ার হোল্ডারদের হাজার হাজার কোটি টাকা লোপাট, অবৈধ প্রভাব খাটিয়ে দেশের সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন ব্যাংক থেকে প্রায় ৩৬ হাজার কোটি টাকা ঋণ গ্রহণপূর্বক আত্মসাৎসহ হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচারের অভিযোগ অনুসন্ধানে এসব অর্থ আত্মসাতের তথ্য পাওয়া গেছে।

দুদকের ভাষ্য অনুযায়ী, আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে দণ্ডবিধির ৪০৯/৪২০/৪৬৭/৪৬৮/৪৭১/৪৭৭এ/১০৯ ধারা, দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন ১৯৪৭ এর ৫(২) ধারা এবং মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ২০১২ (সংশোধিত ২০১৫) এর ৪ ধারার আওতাভুক্ত অপরাধ করেছেন।