শিরোনাম
ঢাকা, ১৫ অক্টোবর, ২০২৫ (বাসস) : তিনটি পৃথক মামলায় এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাইফুল আলম, রিলায়েন্স ফাইন্যান্স লি.-এর (বর্তমানে আভিভা ফাইন্যান্স লি.) সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রশান্ত কুমার (পিকে) হালদারসহ ৩৪ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
আজ দুদকের প্রধান কার্যালয়ে এক নিয়মিত মিডিয়া ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান দুদকের মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন। তাদের বিরুদ্ধে এ বছরের ২ জুলাই নামসর্বস্ব প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ঋণ আত্মসাৎ ও মানিলন্ডারিংয়ের অভিযোগে এসব মামলাগুলো দায়ের করা হয়েছিল।
প্রথম মামলায় উল্লেখ্য করা হয়, আসামি মোহাম্মদ সাইফুল আলম ও রিলায়েন্স ফাইন্যান্স লি. (বর্তমানে আভিভা ফাইন্যান্স লি.)-এর কর্মকর্তারা মেসার্স এ এম ট্রেডিং নামক নামসর্বস্ব প্রতিষ্ঠানের মালিক মো. আবদুল্লাহ আল মামুনের সাথে যোগসাজশে জালিয়াতির মাধ্যমে ২০১৩ সালের ১২ আগস্ট ৩৪ কোটি টাকার একটি মেয়াদি ঋণ অনুমোদন করেন। ২০১৩ সালের ৯ সেপ্টেম্বর এ ঋণের টাকা বিতরণ করা হয়। ঋণ প্রদানের ক্ষেত্রে সিআইবি রিপোর্ট না নেয়া, ঠিকানা যাচাই না করা, এমআইসিআর চেক না নেয়াসহ নানা অনিয়মের আশ্রয় নেয়া হয়।
ঋণের টাকা পরবর্তীতে ব্যাংক লেনদেনের মাধ্যমে এস আলম গ্রুপ সংশ্লিষ্ট এস আলম সুপার এডিবল অয়েল লি.-এ স্থানান্তর করা হয়। এ মামলায় মোট ১৩ জন আসামি অভিযুক্ত।
দ্বিতীয় মামলার অভিযোগে বলা হয়, এ মামলায় একই পদ্ধতিতে ২০১৩ সালের ১২ আগস্ট মেসার্স মোস্তফা এন্ড কোং নামক নামসর্বস্ব প্রতিষ্ঠানের নামে ৩২ কোটি ৫০ লাখ টাকার একটি মেয়াদি ঋণ অনুমোদন ও ২০১৩ সালের ৯ অক্টোবরে বিতরণের অভিযোগ আনা হয়। এই টাকাও একইভাবে এস আলম সুপার এডিবল অয়েল লি.-এ স্থানান্তর করা হয়। এ মামলায়ও ১৩ জন আসামি অভিযুক্ত।
তৃতীয় মামলায় বলা হয়, এ মামলায় ২০১৩ সালের ৩ অক্টোবর মেসার্স সাইফুল এন্ড কোং নামক নামসর্বস্ব প্রতিষ্ঠানের নামে ২৪ কোটি টাকার একটি মেয়াদি ঋণ অনুমোদন ও ২০১৩ সালের ৪ নভেম্বর বিতরণের অভিযোগ রয়েছে। এই টাকাও একই পদ্ধতিতে এস আলম সুপার এডিবল অয়েল লি.-এ স্থানান্তরিত হয়। এ মামলায়ও ১৩ জন আসামি অভিযুক্ত।
তিন মামলায় উল্লেখযোগ্য আসামিরা হলেন, এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাইফুল আলম, ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুস সামাদ, পরিচালক মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ হাসান ও শাহানা ফেরদৌস। এছাড়া রিলায়েন্স ফাইন্যান্স লি.-এর (বর্তমানে আভিভা ফাইন্যান্স লি.) সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রশান্ত কুমার হালদার, সাবেক ইভিপি রাশেদুল হক, সাবেক ম্যানেজার নাহিদা রুনাই, সাবেক এসভিপি কাজী আহমেদ জামাল ও সাবেক ডেপুটি ম্যানেজার জুমারাতুল বান্না এবং মারিন ভেজিটেবল অয়েলস লি.-এর পরিচালকবৃন্দ ও নামসর্বস্ব প্রতিষ্ঠানগুলোর মালিকগণ।
আসামিদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৪০৯, ১০৯, ৪২০, ৪৬৭, ৪৬৮, ৪৭১ ও ১২০বি ধারা, দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন, ১৯৪৭-এর ৫(২) ধারা এবং মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২-এর ৪(২) ও ৪(৩) ধারায় মামলাগুলো দায়ের করা হয়েছে।
দুদক জানায়, উল্লিখিত তিন মামলায় প্রাপ্ত তদন্ত প্রতিবেদন ও সাক্ষ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে আদালতে চার্জশিট দায়ের করা হয়েছে।