বাসস
  ২৬ আগস্ট ২০২৫, ১৩:৪০

ভরা মৌসুমে মিলছে না ইলিশ, হতাশ জেলেরা

ছবি: বাসস

।। মজিবুর রহমান ।।

শরীয়তপুর, ২৬ আগস্ট, ২০২৫ (বাসস) : শরীয়তপুরে পদ্মা ও মেঘনা নদীতে ভরা মৌসুমেও জেলেদের জালে মিলছে না ইলিশ। আড়ৎগুলোও রয়েছে সংকটে। এ অবস্থায় হতাশ জেলেরা। এদিকে জেলেদের কাছ থেকে দাদনের টাকা আদায়ে দুশ্চিন্তায় আড়ৎদাররা।

জেলার গোসাইরহাট উপজেলার কোদালপুরের নাছির হাওলাদার পেশায় একজন জেলে। গত ১১ দিন ধরে ১০/১২ জন জেলে বহর নিয়ে নদীতে মাছ ধরার লড়াই করছেন তিনি। নদীতে কেমন মাছ পাওয়া যাচ্ছে জিজ্ঞাসা করতেই এক বাক্যে বললেন, এ বছর নদীতে মাছ নেই। খরচের টাকাই উঠছে না। অন্যান্য জেলেদের মুখেও একই কথা।

জানা গেছে, জেলার প্রায় ২১ হাজার জেলে পরিবার জীবন-জীবিকার জন্য পদ্মার ইলিশের উপর নির্ভরশীল। 

অধিকাংশ জেলেরা ঋণগ্রস্ত। জালে মাছ না উঠায় ঋণের বোঝা কাঁধে নিয়ে হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন জেলেরা। 

পরিবার-পরিজন নিয়ে অর্থাভাবে কষ্টে দিন কাটছে তাদের।  অনেকেই এ পেশা ছেড়ে নতুন পেশা খুঁজছেন।

এদিকে জেলার নড়িয়া উপজেলার সুরেশ্বর, ভেদরগঞ্জ উপজেলার গৌরাঙ্গ বাজার, সখিপুরের বালার বাজার, গোসাইরহাটের কোদালপুরের আড়ৎগুলোতে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ভরা মৌসুমেও এসব ইলিশের আড়তে নেই পাইকারদের ভিড়। বন্ধ রয়েছে অনেক মৎস্য আড়ৎ। জেলেদের দেয়া অগ্রিম দাদনের টাকা উত্তোলনের বিষয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন আড়ৎদাররা। 

ভেদরগঞ্জ উপজেলার সখিপুরের বালারবাজারের মৎস্য আড়ৎদার মো. আলী ও নাজমুল হাসান বলেন, এ বছর নদীতে ইলিশ নেই। ৫০/৬০ লাখ টাকা করে জেলেদের অগ্রিম দাদন দিয়েছেন। জেলেরা মাছ না পেলে তাদের কাছ থেকে দাদনের টাকা উত্তোলন করতে হিমশিম খেতে হবে। 

গোসাইরহাটের কোদালপুরের আড়ৎদার সুলতান মৃধা বলেন, নদীতে নেই ইলিশের দেখা। জেলেরা রাতভর নদীতে জাল টেনে কাঙ্খিত মাছ না পেয়ে শূন্য হাতে ফিরে আসছে। কোনো কোনো জেলের জালে ২/১ টা ইলিশ ধরা পড়লেও তা চড়াদামে বিক্রি হচ্ছে। ১ কেজি বা তার বেশি ওজনের ইলিশ ২ থেকে আড়াই হাজার টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে ইলিশের দাম।

জেলা মৎস্য কার্যালয় সূত্র জানিয়েছে, নড়িয়া উপজেলার সুরেশ্বর থেকে গোসাইরহাট উপজেলার কোদালপুর পর্যন্ত ইলিশের বিচরণ ক্ষেত্র হিসেবে পরিচিত। কিন্তু দীর্ঘ প্রায় ৪০ কিলোমিটারে পদ্মা ও মেঘনায় মিলছে না ইলিশ। 

নৌকা নিয়ে নদীতে মাছ ধরতে গিয়েও জেলেদের শূন্য হাতে ডাঙ্গায় ফিরতে হচ্ছে।