বাসস
  ২৪ আগস্ট ২০২৫, ১৭:৩৬
আপডেট : ২৪ আগস্ট ২০২৫, ১৮:১০

সিলেটে নিজ উদ্যোগে সাদাপাথর ফিরিয়ে দিচ্ছেন অনেকে

হাজারো পর্যটক এক সময় এই সাদাপাথরের সৌন্দর্য উপভোগ করতে ছুটে আসতেন। ছবি: সংগৃহীত

সিলেট, ২৪ আগস্ট, ২০২৫ (বাসস): সিলেটের সাদাপাথর লুটপাটের ঘটনায় জেলা প্রশাসনের আল্টিমেটামের পর থেকে অনেকে নিজ উদ্যোগে পাথর ফিরিয়ে দিচ্ছেন। 

গতকাল শনিবার সিলেটের জেলা প্রশাসক মো. সারওয়ার আলম ২৬ আগস্ট, মঙ্গলবার সন্ধ্যার মধ্যে লুট হওয়া সব পাথর ফেরত পাঠানোর নির্দেশ দেন।

এরপর থেকে নিজ উদ্যোগে পাথর ফিরিয়ে দিচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। শনিবার রাত থেকেই অনেক পাথর ব্যবসায়ী নিজ খরচে ট্রাক যোগে সাদাপাথর ফিরিয়ে দেন।

এই ব্যাপারে সিলেট সদর উপজেলার ধোপাগুল এলাকার স্টোন ক্রাশার মিল ব্যবসায়ী কাজী ফরহাদ হোসেন বলেন, আমি তিন মাস আগে পাথর কিনেছিলাম। এরপর আর কোন পাথর কিনিনি। তবু জেলা প্রশাসক যেহেতু বলেছেন, তাই আমি তার প্রতি সম্মান রেখে আমার মিলে থাকা সব সাদা পাথর ফিরিয়ে দিয়েছি।

এদিকে, ব্যবসায়ীরা ফেরত দেওয়ার পাশাপাশি পাথর উদ্ধারে অভিযানও চলছে। এসব পাথর সাদাপাথর পর্যটন স্পটে প্রতিস্থাপনের কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।

সিলেট সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) খুশনূর রুবাইয়াত জানান, শনিবার রাত ১২টা থেকে রোববার দুপুর পর্যন্ত অন্তত ১০০ ট্রাক সাদাপাথর এলাকায় পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। 

তিনি বলেন, সিলেটের ধোপাগুল এলাকার কয়েকজন ব্যাবসায়ী নিজ উদ্যোগে তাদের সংগ্রহে থাকা সাদাপাথর স্পটে পৌঁছে দিয়েছেন। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সদস্যরা বিষয়টি তদারকি করছেন।

এদিকে, পাথর ফিরিয়ে দিতে প্রশাসনের মাইকিংসহ প্রচারণা কার্যকমও অব্যাহত রয়েছে।

এর আগে, শনিবার সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার ভোলাগঞ্জের সাদাপাথর থেকে লুট হওয়া পাথর মঙ্গলবার সন্ধ্যার মধ্যে নিজ উদ্যোগে, নিজে খরচে পৌঁছে দেওয়ার নির্দেশ দেয় জেলা প্রশাসন। 

এ সময়ের পর কারো কাছে সাদাপাথর পাওয়া গেলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জেলা প্রশাসন থেকে জানানো হয়। 

শনিবার এই ব্যাপারে একটি গণবিজ্ঞপ্তি জারি করে জেলা প্রশাসন। কোম্পানীগঞ্জ ও গোয়াইনঘাট  উপজেলায় মাইকিংও করা হয়।

সিলেটের ডিসি সারওয়ার আলম জানান, এখনো কোম্পানীগঞ্জ ও সিলেট সদর উপজেলায় কিছু পাথর অনেকে লুকিয়ে রেখেছেন। এসব পাথর উদ্ধারে শনিবার এই দুই উপজেলায় স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে সভা করা হয়েছে। 

সভাশেষে তিনটি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

যার মধ্যে রয়েছে-মঙ্গলবার বিকেল ৫টার মধ্যে যাদের কাছে এখনো সাদাপাথর আছে তারা নিজ খরচে, নিজ উদ্যোগে ভোলাগঞ্জ সাদাপাথর এলাকায় পৌঁছে দেবেন। যেহেতু জনপ্রতিনিধিরা সরকারের অংশ, তাই এ পাথর উদ্ধারে তাদেরও দায় রয়েছে। যার যার এলাকায় খোঁজ খবর নিয়ে পাথর ভোলাগঞ্জে পৌঁছানোর বিষয়ে উদ্যোগ নেবেন তারা।

নির্ধারিত সময়ের পর যার কাছে সাদা পাথর পাওয়া যাবে, তার বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

এমনকি নির্ধারিত সময়ের পর যে এলাকায় অভিযান চালিয়ে পাথর পাওয়া যাবে, ওই এলাকার জনপ্রতিনিধিদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান সারওয়ার আলম।