বাসস
  ১৮ আগস্ট ২০২৫, ১৩:২২
আপডেট : ১৮ আগস্ট ২০২৫, ১৩:৩০

খুলনায় কৃষি ব্যাংকে চুরির রহস্য উন্মোচন, হোতা গ্রেপ্তার

ছবি: বাসস

।। মুহাম্মদ নূরুজ্জামান ।।

খুলনা, ১৮ আগস্ট, ২০২৫ (বাসস): খুলনার রূপসায় কৃষি ব্যাংকের ভল্ট ভেঙে ১৬ লাখ ১৬ হাজার টাকা লুটের তিন দিনের মধ্যে রহস্য উন্মোচন করেছে পুলিশ। 

ঘটনার সঙ্গে জড়িত একমাত্র হোতা ইউনূস শেখকে গ্রেপ্তার করা করা হয়েছে। এ সময় তার কাছ থেকে চুরির দেড় লাখ টাকা উদ্ধার করা করেছে পুলিশ।

গ্রেপ্তারকৃত ইউনূস উপজেলার নিকলাপুর গ্রামের ইনছান শেখের ছেলে। রোববার ভোর রাতে তাকে রূপসা কৃষি ব্যাংক ভবন থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। 

আজ সোমবার ইউনূস শেখকে আদালতে পাঠিয়ে রিমান্ডের আবেদন করা হবে বলে জানান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. সাইফুল ইসলাম।

তিনি জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ইউনূস টাকা লুটের কথা স্বীকার করেছেন। তার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী পুলিশ ইতোমধ্যে প্রায় দেড় লাখ টাকা উদ্ধার করেছে। বাকি টাকা উদ্ধারের চেষ্টা চলছে। তদন্তে প্রমাণ মিলেছে, এই চুরির ঘটনাটি ইউনূস একাই ঘটিয়েছে। 

গ্রেপ্তার ইউনূস শেখ কৃষি ব্যাংক ভবনের ৪র্থ তলায় ভাড়া থাকতেন। এছাড়া একই ভবনের নিচতলায় তার একটি ওয়ার্কশপ রয়েছে।

পুলিশ জানায়, ইউনূস পেশায় একজন লেদ মিস্ত্রি, ট্রাকের যন্ত্রপাতি নিয়ে কাজ করতেন তিনি। লোহা কাটার দক্ষতাকে কাজে লাগিয়েই তিনি ব্যাংকের ভল্ট ও তালা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করতে সক্ষম হন। ভোর রাতে ব্যাংকে কোনো নিরাপত্তাকর্মী না থাকার সুযোগ কাজে লাগিয়ে টাকা নিয়ে পালিয়ে যান তিনি।

এদিকে, জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক ব্যাংকের তিনজন নিরাপত্তা প্রহরী এখনো পুলিশ হেফাজতে রয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে তেমন কোন অভিযোগ না থাকায় তাদের পরিবারের জিম্মায় দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

রূপসা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মাহফুজুর রহমান জানান, কৃষি ব্যাংক পূর্ব রূপসা ঘাট শাখার ৬টি তালাসহ ভল্ট ভেঙ্গে ১৬ লাখ টাকা লুট হওয়ার ঘটনায় ইউনূসকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তার কাছ থেকে চাঞ্চল্যকর তথ্য পাওয়া গেছে। আরও তথ্য জানা এবং লুট হওয়া টাকা উদ্ধারের জন্য পুলিশী অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

গ্রেপ্তারকৃত ইউনূস শেখের ঘনিষ্ঠ সূত্রে জানা গেছে, ইউনূস মোটা অংকের ঋণের টাকার চাপে ছিলেন। চুরি করা টাকা থেকে কিছু ঋণ পরিশোধও করেছেন তিনি।

উল্লেখ্য, গত ১৫ আগস্ট (শুক্রবার) রাত ১০ টার দিকে ব্যাংক নিরাপত্তা প্রহরী ব্যাংকে এসে দেখেন মেইন গেটের তালা ভাঙ্গা, এমন অবস্থা দেখে নিরাপত্তা প্রহরী আবুল কশেম বিষয়টি ব্যাংক কর্তৃপক্ষকে জানান। পরে ব্যাংকের ক্যাশিয়ার পুলিশের উপস্থিতিতে লেজার ও ক্যাশ মিলিয়ে দেখেন ১৬ লাখ ১৬ হাজার টাকা নেই। এ ঘটনায় ব্যাংকের শাখা ব্যবস্থাপক মো. কামরুল ইসলাম বাদী হয়ে শনিবার (১৬ আগস্ট) বিকেলে অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে রূপসা থানায় মামলা করেন। 

এদিকে ব্যাংক লুটের ঘটনায় কর্তৃপক্ষ রোববার তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করে। কমিটির সদস্যরা হলেন, বিভাগীয় অফিসের ডিজিএম আসলাম হোসেন, এজিএম মশিউর রহমান ও এজিএম হামিম শেখ। 

কৃষি ব্যাংক খুলনার উপ-মহাব্যবস্থাপক মো. রিয়াজুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।