বাসস
  ১৬ আগস্ট ২০২৫, ১৬:২১

আবার সেই একমাত্রিক দেশ গড়ার গভীর ষড়যন্ত্র চলছে : রিজভী

ছবি : বাসস

ঢাকা, ১৬ আগস্ট, ২০২৫ (বাসস) : বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব এডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ‘আবার সেই একমাত্রিক একটি দেশ গড়ার গভীর ষড়যন্ত্র চলছে।শেখ হাসিনা পালিয়ে গেলেও তার ভূত, তার আত্মারা আবার নতুন করে নতুন কায়দায় নতুন চেতনায় ভর করেছে।এটার জন্য তো এই দেশের ছেলেরা জীবন দেয়নি।’

তিনি বলেন, ‘আজকে আমরা যেখানেই যাই শুনি একটি সংগঠনের লোক সেখানে বসে আছে।ডিসির দপ্তর থেকে সবখানে।তারা বলছে, এইটা একটি বিশেষ দলের লোক। বলছে, ওরা ডিসিগিরি করছে না, ঐখানে তারা তাদের সংগঠনের কাজ করছে।'

আজ জাতীয় প্রেসক্লাবে জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থান ও ফ্যাসিবাদ পতনের বর্ষপূর্তি উপলক্ষ্যে শহীদ ও আহতদের স্মরণে ঢাকা কলেজের প্রাক্তন ছাত্রবৃন্দ আয়োজিত আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, 'আমি এমনও শুনেছি  ইসলামিক ফাউন্ডেশনের যিনি ডিজি তিনি তার কর্মকর্তা কর্মচারীদেরকে বলেছেন তোমরা রুকন না হলে তোমাদের চাকরি থাকবে না, এটা একদম সত্য কথা। আমি আপনাদের সামনে কোন মিথ্যা কথা বানিয়ে বলছি না।এইজন্য কি আহনাফ,মুগ্ধ,আবু সাঈদ,ওয়াসিম শেখ হাসিনার পুলিশের গুলিতে জীবন দিয়েছে? নিজের শার্টের বোতাম খুলে দিয়ে পুলিশের গুলি বরণ করে নিয়েছে এই গণতন্ত্রের জন্য?

তিনি বলেন, শেখ হাসিনা যে চেতনা তৈরি করেছিলেন সেই পাতানো চেতনার জন্যই কি এত রক্তপাত এত হানাহানি?শেখ হাসিনা যেমন তার অপশাসনের বিরুদ্ধে কেউ প্রতিবাদ করলেই বলতো একে ধরো, এদের বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে দাও। আবার নতুন করে আমরা দেখছি অন্য চেতনা ধর্মের নামে যে রুকন না হলে চাকুরি করতে পারবে না।

রিজভী বলেন, ‘আমাদের অনেকেই উপদেষ্টার পদ পেয়েছেন, অনেকেই ভালো আছেন।তাহলে কি আবার নতুন করে নতুন আঙ্গিকে শেখ হাসিনার যে অপশাসন,দুঃশাসন এবং চুরি,ডাকাতি,সন্ত্রাস টাকা লুট, চাঁদাবাজি, ভর্তি বাণিজ্য, চাকুরি বাণিজ্যের সেটার কি আবার পুনরাবৃত্তি মানুষ দেখতে চায়?এই জন্য কি প্রায় দেড় হাজারের মতো শিশু-কিশোর, তরুণ শ্রমিক, রিক্সাওয়ালা জীবন দিয়েছে? এই উপলদ্ধি তো সবার হওয়া উচিত।’

বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, 'এখনো তো নির্বাচন হয়নি। কে ক্ষমতায় যাবে, জনগণ কাকে ভোট দেবে, এটা তো এখনো নির্দিষ্ট হয়নি। তাহলে এই কথাগুলো এখনই কেন আসছে?এগুলো কেন আমাদেরকে শুনতে হচ্ছে?অনেক সরকারি দপ্তর থেকে অনেকেই আসছে তারা বলছেন, আমরা কি করব ভাই আমরা যদি ওই দলের সদস্য বা রুকন না হই আমরা তো চাকুরি করতে পারবো না।শেখ হাসিনা পালিয়ে গেলেও তার ভূত, তার আত্মারা আবার নতুন করে নতুন কায়দায় নতুন চেতনায় ভর করেছে।এটার জন্য তো এই ছেলেরা জীবন দেয়নি।'

রিজভী আরও বলেন,'আমরা সেই গণতন্ত্র চেয়েছি যে গণতন্ত্রে এই দেশের ভোটাররা ভোট দিয়ে যাকে ইচ্ছা তাকে রাষ্ট্র ক্ষমতায় বসাবে।এজন্যই আমাদের লড়াই, এজন্যই আমাদের এত সংগ্রাম, এত ত্যাগ।এজন্যই স্কুল, কলেজের ছেলেরা এত রক্ত দিয়েছে, নিজেদের জীবন দিয়েছে।

তিনি বলেন, 'এক চেতনাধারী বিদায় নিয়ে আরেক চেতনাধারী ক্ষমতায় বসবে এটা তো জনগণ প্রত্যাশা করে না। বড় বড় ইউনিভার্সিটিতে সেই চেতনাধারীদের লোক ছাড়া এপয়েন্টমেন্ট হবে না, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হতে পারবেনা, কোন চাকরি হবে না। আবার সেই একমাত্রিক একটি দেশ গড়ার প্রচেষ্টা চলছে, গভীর ষড়যন্ত্র চলছে। এ ষড়যন্ত্রের জন্য তো দীর্ঘ ১৬ বছর দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া লড়াই করেনি। এজন্য গোটা দেশকে সংগঠিত করেননি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।'

সংগঠনের সভাপতি মীর সরফৎ আলী সপুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড.আব্দুল মঈন খান,সহ-প্রচার সম্পাদক আসাদুল করিম,সহ যুব বিষয়ক সম্পাদক মীর নেওয়াজ আলী নেওয়াজ প্রমুখ।