বাসস
  ১৩ আগস্ট ২০২৫, ১৯:৫৩
আপডেট : ১৩ আগস্ট ২০২৫, ১৯:৫৭

গণঅভ্যুত্থান ছাড়া ফ্যাসিবাদ সরানো যায় না: মাহমুদুর রহমান

আজ খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে সাংবাদিকদের ভূমিকা’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় আমার দেশ সম্পাদক মাহমুদুর রহমান এ সব কথা বলেন। ছবি: বাসস

খুলনা, ১৩ আগস্ট ২০২৫ (বাসস) : দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমান বলেছেন, ‘গণঅভ্যুত্থান ছাড়া ফ্যাসিবাদ সরানো সম্ভব নয়। জুলাই আন্দোলনের মাধ্যমে দেশের তরুণরা দেশকে নতুনভাবে পথ দেখিয়েছে।’ 

তিনি আরো বলেন, ‘বিগত ১৬-১৭ বছর ধরে একটি ফ্যাসিস্ট সরকার থাকার পরও তরুণ প্রজন্মের অকুতোভয় মনোবল সত্যিই চমকপ্রদ। এই প্রজন্মের আবেগ ও মননকে সমাজকে বোঝার জন্য গুরুত্ব দেওয়া উচিত।’

জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস উপলক্ষ্যে ধারাবাহিক কর্মসূচির অংশ হিসেবে আজ বুধবার খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে সাংবাদিকদের ভূমিকা’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে আমার দেশ সম্পাদক এসব কথা বলেন।

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি (খুবিসাস) ও ছাত্র বিষয়ক পরিচালকের দপ্তরের যৌথ উদ্যোগে সাংবাদিক লিয়াকত আলী মিলনায়তনে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

মাহমুদুর রহমান বলেন, ‘ফ্যাসিবাদ নিজে নিজে তৈরি হয় না। বিগত শাসনামলে ব্যবসায়ী, আমলা, তথাকথিত বুদ্ধিজীবী ও কিছু সাংবাদিক ফ্যাসিবাদের পক্ষে কাজ করেছেন এবং তার সমর্থনে ন্যারেটিভ তৈরি করেছেন।’ 

তিনি সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘সাংবাদিকদের অবশ্যই সৎ ও সাহসী হতে হবে। চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করতে হবে এবং উভয়পক্ষের বক্তব্য সমানভাবে তুলে ধরে সংবাদ পরিবেশন করতে হবে।’

তিনি আরো বলেন, ‘যদি সাংবাদিকরা চ্যালেঞ্জ নিতে না পারে, তবে তারা ভালো সাংবাদিক হতে পারবে না।’

জ্ঞানচর্চার ওপর গুরুত্বারোপ করে তিনি বলেন, ‘কিছু বলার আগে নিজেকে প্রস্তুত করতে হবে। জুলাই আন্দোলনে তরুণরা যে উদ্দীপনা দেখিয়েছে, সেই উদ্দীপনাই আমাদের দেশের অগ্রগতির মূল শক্তি।’ 

তিনি নির্বাচনের মাধ্যমে পুরোপুরি বাকস্বাধীনতা প্রতিষ্ঠার সম্ভাব্যতা যাচাই করার প্রয়োজনীয়তার কথাও তুলে ধরেন।

আলোচনা সভায় খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. রেজাউল করিম বলেন, ‘জুলাই আন্দোলন একটি গুরুত্বপূর্ণ ইতিহাস। যেখানে দেশপ্রেমী ছাত্র-জনতা ফ্যাসিবাদী শাসনব্যবস্থাকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে দেশের বাকস্বাধীনতা ফিরিয়ে এনেছে।’ 

তিনি বলেন, ‘গণমাধ্যম একটি স্বাধীন ও গণতান্ত্রিক সমাজের চারটি স্তম্ভের মধ্যে অন্যতম। ফ্যাসিবাদ মাথাচাড়া দিয়ে উঠলে প্রথমে আঘাত আসে গণমাধ্যমের ওপর। জুলাই আন্দোলন এই সত্য প্রমাণ করেছে।’

সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার প্রফেসর ড. মো. নূরুন্নবী, আইন অনুষদের ডিন (ভারপ্রাপ্ত) প্রফেসর শেখ মাহমুদুল হাসান এবং ছাত্র বিষয়ক পরিচালক প্রফেসর ড. মো. নাজমুস সাদাত। এছাড়া বক্তব্য রাখেন, জুলাই অভ্যুত্থান দিবস উদযাপন কমিটির সদস্য সচিব প্রফেসর শরিফ মোহাম্মদ খান, দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার খুলনা ব্যুরো প্রধান এহতেশামুল হক শাওন এবং জুলাই আন্দোলনের সক্রিয় কর্মী আয়মান আহাদ।

খুবিসাস সভাপতি আলকামা রমিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন, সাধারণ সম্পাদক মিরাজুল ইসলাম। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন, প্রিন্টমেকিং ডিসিপ্লিনের শিক্ষার্থী জারিন প্রভা এবং ইউআরপি ডিসিপ্লিনের শিক্ষার্থী মাহবুবুর রহমান আকাশ।

আলোচনা সভার শুরুতে জুলাই আন্দোলনের শহীদদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদের ডিন, রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত), ডিসিপ্লিন প্রধান, শিক্ষক, জুলাই আন্দোলনের কর্মী, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও গণমাধ্যমের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।