বাসস
  ১৫ জুন ২০২৫, ০০:৩৪

ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও তারেক রহমানের বৈঠক অনেকের মনে জ্বালা ধরিয়েছে : রিজভী

ছবি : বিএনপি মিডিয়া সেল

গাজীপুর, ১৪ জুন, ২০২৫ (বাসস) : বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবীর রিজভী  বলেছেন, লন্ডনে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এবং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের মধ্যে অনুষ্ঠিত বৈঠক কেন জানি অনেকের মনে জ্বালা ধরিয়েছে। অনেকেই এটা মেনে নিতে পারছেন না।

তিনি আজ শনিবার বিকেলে গাজীপুর সদর উপজেলার ভবানীপুরে মুক্তিযোদ্ধা কলেজ মাঠে দলের নতুন সদস্য সংগ্রহ ও নবায়ন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। 

রিজভী বলেন, আমাদের দেশের বিরুদ্ধে সব সময়ই ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত চলেছে। আমরা কেউই এই চক্রান্তের বাইরে নই। ছাত্র-জনতার আন্দোলন এবং বিএনপির ১৫-১৬ বছরের এক রক্তক্ষয়ী আন্দোলনের মধ্য দিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার, গঠিত হয়েছে। অত্যন্ত সম্মানিত ব্যক্তি ড. ইউনূস অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান হয়েছেন। 

নির্বাচন নিয়ে তিনি বলেন, রমজান মাসে কি নির্বাচনী প্রচারণা করা যায়? তবে ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি থেকে মার্চের পর পুরোটাই বলতে গেলে রমজান থাকবে আর থাকবে ঈদের আয়োজন। আপনি এপ্রিলের ১ তারিখ থেকে ১৫ তারিখের মধ্যে কোথায় প্রচারণা চালাবেন? কখন আইনি প্রক্রিয়া হবে। কখন নমিনেশন পেপার জমা দেবেন? কখন প্রচার চালাবেন? কীভাবে প্রচার চালাবেন? কি করে এপ্রিল মাসে নির্বাচন সম্ভব?  আমাদের এমন একটি সময় বেছে নিতে হবে, যে সময়ের মধ্যে ধর্মীয় কোনো অনুষ্ঠান, রোজা-ঈদ থাকবে না। ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহ কিংবা দ্বিতীয় সপ্তাহের মধ্যে নির্বাচনটা হলেতো এর মধ্যে কোনো রমজান নেই, কোরবানির ঈদ নেই, বড় কোনো অনুষ্ঠান নেই, পহেলা বৈশাখ নেই। আবহাওয়া ভালো থাকে, শুকনো মৌসুম, হালকা শীত থাকে। এই সময়ই বরাবরই আন্দোলন সংগ্রাম হয়, এই সময়ই নির্বাচন হয়। 

কোন দলের নাম উল্লেখ  না করে  রিজভী বলেন, আজকে আমাদের কিছু রাজনৈতিক বন্ধু তারা উষ্মা প্রকাশ করেছেন, লন্ডনের বৈঠককে তারা বলেছেন নিরপেক্ষতা ক্ষুণ্ন হয়েছে। ভাই আপনাদের ইতিহাসটা বলুন তো দেখি। আপনারা কখন নিরপেক্ষতার সঙ্গে কাজ করেছেন। পাকিস্তান আন্দোলনে আপনারা সমর্থন করেননি। আপনারা ৭১ সালে দেশের  জনগণের বিরোধিতা করেছেন। 

আওয়ামী লীগকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, এই দলটি  জুলাই আগস্ট আন্দোলনের শত শত মানুষকে হত্যা করেছে। আপনাদের রাজনীতিটা ভুলে ভরা। এই ভুলে ভরা রাজনীতি আপনারা শুরু থেকেই করে এসেছেন। আর বিএনপি সবসময় ইতিবাচক রাজনীতি করেছে। দেশের স্বাধীনতার প্রশ্নে, সার্বভৌমত্বের প্রশ্নে, আমাদের ভূ-খণ্ড রক্ষার ক্ষেত্রে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া যদি আপস করতেন, তাহলে তাকে ৫-৬ বছর জেলে থাকতে হতো না। তার ওপর যে নিপীড়ন নির্যাতন-এতখানি হতো না যদি তিনি আপস করতেন। তিনি জনগণকে রেখে কখনো যাননি, শেখ হাসিনা গেছেন।

খালেদা জিয়া কখনো মাথা নত করেননি উল্লেখ করে  রিজভী বলেন, এত বড় বড় কথা বলেছেন, বেগম জিয়ার বিরুদ্ধে কত অপপ্রচার, বেগম জিয়ার বিরুদ্ধে কত কুৎসা রটিয়েছেন। কত কি কথা বলেছেন, কিন্তু বেগম জিয়া তো দেশ ছেড়ে যাননি। 

গাজীপুর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ও সাবেক সংসদ সদস্য একেএম ফজলুল হক মিলনের সভাপতিত্বে ও জেলা বিএনপির যুগ্ম-আহ্বায়ক রিয়াজুল হান্নানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ, কেন্দ্রীয় গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক শামীমুর রহমান শামীম, কেন্দ্রীয় সহ-শ্রম বিষয়ক সম্পাদক হুমায়ুন কবির খান, সহ-স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম বাচ্চু, কেন্দ্রীয় সদস্য ও সাবেক এমপি বীর মুক্তিযোদ্ধা হাসান উদ্দিন সরকার, শ্রীপুর পৌর বিএনপির সদস্য সচিব বিল্লাল হোসেন বেপারী, সদর উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি আবু তাহের মুসল্লী, এমদাদুল হক মুসল্লী প্রমুখ।