বাসস
  ১৪ জুন ২০২৫, ১৯:১১

হাতিয়ার উন্নয়নের কথা বললেই কিছু মানুষের গায়ে ‘জ্বালাপোড়া’ শুরু হয়: আবদুল হান্নান মাসউদ

ছবি: বাসস

নোয়াখালী, ১৪ জুন, ২০২৫ (বাসস): জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সিনিয়র যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক আবদুল হান্নান মাসউদ বলেছেন, হাতিয়ার উন্নয়নের কথা বললেই কিছু মানুষের গায়ে ‘জ্বালাপোড়া’ শুরু হয়।

তিনি বলেন, উপকূলীয় দ্বীপ হাতিয়ার ইতিহাস বহু পুরানো। স্বাধীনতার এত বছর পার হলেও এই দ্বীপে এখনো কোনো উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি। এখনো অবহেলিত এই দ্বীপের মানুষ।

হান্নান মাসউদ আরো বলেন, গত ১৭ বছরে এই দ্বীপের কোনো উন্নয়নমূলক কাজ মানুষের চোখে পড়েনি। তিনি সকলকে নিয়ে এই দ্বীপের উন্নয়ন কাজে শরিক হতে চান।

আবদুল হান্নান মাসউদ শনিবার হাতিয়া দ্বীপ সরকারি কলেজ হল রুমে ভূমিহীন পরিবার সমূহের উদ্যোগে আয়োজিত “ভূমিহীন পরিবারের জীবনে নতুন ভোর, একটি স্বপ্নের যাত্রা, সম্মান ও স্বীকৃতির উৎসব” শীর্ষক এক আলোচনা সভা ও সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব বলেন।

হান্নান মাসউদ বলেন, তারা যদি হাতিয়াতে ফেরির ব্যবস্থা করতে চান তাহলে স্পিডবোট, ট্রলার মালিকদের গায়ে জ্বালাপোড়া শুরু হয়ে যাবে। কারণ, তাঁদের ব্যবসা হুমকির মুখে পড়বে। তারা যদি ভূমিহীনদের ভূমি বুঝিয়ে দিতে চায়, গরীব দুঃখী অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে চায়, তাহলে ভূমিদস্যুদের গায়ে জ্বালাপোড়া শুরু হয়ে যাবে।

তিনি বলেন, তারা যদি হাতিয়ার সড়ক, রাস্তাঘাট ও অবকাঠামোগত উন্নয়নমূলক কাজ শুরু করেন, তাহলে যারা অপরাজনীতি করছে তাদের অপরাজনীতি বন্ধ হয়ে যাবে। সবদিক বিবেচনা করেই তারা এখানে এসেছেন।

হান্নান মাসউদ বলেন, “আমরা মনে করি একটা লড়াই প্রয়োজন। হাতিয়ার মাটি ও মানুষের স্বার্থে সেই লড়াইটা আমাকে-আপনাকে সকলকে মিলেই করতে হবে। আমরা মনে করি, একটা দীর্ঘ সংগ্রাম প্রয়োজন, যে সংগ্রামের মধ্য দিয়ে হাতিয়াতে একটিও ভূমিহীন পরিবার থাকবে না”।

ভূমিহীনদের যুগ যুগ ধরে রাজনৈতিক নেতারা লাঠিয়াল হিসেবে ব্যবহার করে আসছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এই মানুষগুলোর কথা মিডিয়ায় আসে না, সুশীল সমাজের চোখে ভাসে না, সাংবাদিকদের দৃষ্টিতে আসে না। অসহায় এসব মানুষের কি অবস্থা সেটি দেখার মতো কোনো লোক নেই।

হাতিয়ার নদী ভাঙনের কথা উল্লেখ করতে গিয়ে হান্নান মাসউদ বলেন, হাতিয়ায় নদী ভাঙন রোধে গত ৫০ বছরে কেউ একটি জিও ব্যাগ ও ফেলতে পারে নাই, তিনি গত দশ মাসে প্রশাসনের ঊর্ধ্বতনদের সঙ্গে সমন্বয় করে হাতিয়ার প্রায় সাড়ে পাঁচ কিলোমিটারের বেশি জায়গায় ইতোমধ্যে জিও ব্যাগ ফেলার কাজ সম্পন্ন করেছেন।

তিনি আরও বলেন, ‘আপনারা যদি আমার সঙ্গে থাকেন, সঙ্গ দেন তাহলে হাতিয়াতে স্থায়ী ব্লক বাঁধ দেয়া হবে। ৫ আগস্টের পর দৌড়াদৌড়ি করে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের হাত ধরে আমি আমার হাতিয়ার নদী ভাঙনের কথা তাকে বলেছি।’

হাতিয়া কলেজের সাবেক শিক্ষক অধ্যাপক মফিজ উদ্দিনের সভাপতিত্বে ও ভূমিহীন পরিবারের সদস্য শরিফ উদ্দিনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সভায় হাতিয়া প্রেসক্লাবের সভাপতি মো. ফিরোজ উদ্দিন, জাতীয় নাগরিক পার্টির সংগঠক ইউসুফ, হাতিয়া নিউমার্কেটের সাধারণ সম্পাদক আবদুল কাদেরসহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন।

সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে আবদুল হান্নান মাসুদকে ‘ভূমিহীনদের বন্ধু’ উপাধি দেন আয়োজকরা।