বাসস
  ০৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ২০:৩৬

‘গণতান্ত্রিক সংস্কার জোট’ নামে নতুন রাজনৈতিক জোটের ঘোষণা নাহিদের

আজ ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক সংবাদ সম্মেলনে ‘গণতান্ত্রিক সংস্কার জোট’ এর ঘোষণা দেন নাহিদ ইসলাম। ছবি: বাসস

ঢাকা, ৭ ডিসেম্বর ২০২৫ (বাসস): আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে দেশে নতুন রাজনৈতিক জোটের আত্মপ্রকাশ ঘটেছে। 

জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), এবি পার্টি ও রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের সমন্বয়ে ‘গণতান্ত্রিক সংস্কার জোট’ আজ (রোববার) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ঘোষণা করা হয়। 

জুলাই গণঅভ্যুত্থানের এক দফার ঘোষক ও এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম আনুষ্ঠানিকভাবে নতুন জোটের ঘোষণা দেন। 

সেসময় তার সঙ্গে ছিলেন এবি পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু এবং রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের নেতা হাসনাত কাইয়ূম। নতুন এ জোটের মুখপাত্রের দায়িত্ব পালন করবেন নাহিদ ইসলাম।

‘জুলাই অভ্যুত্থানের অঙ্গীকার রক্ষা ও নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত বিনির্মাণে আগ্রহীদের রাজনৈতিক ও নির্বাচনী ঐক্য ঘোষণা’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনের তিন দলের শীর্ষ নেতারা উপস্থিত ছিলেন। 

নাহিদ ইসলাম বলেন, দীর্ঘদিন ধরে আমরা একটি ঐক্যপ্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে আসছি। গণঅভ্যুত্থানের লক্ষ্যগুলো নিয়ে আমরা এগিয়ে যাব। পরিবর্তনের পক্ষে থাকা অন্যান্য রাজনৈতিক দলকেও এই ঐক্যপ্রক্রিয়ায় যুক্ত হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

এনসিপির আহ্বায়ক আরও বলেন, চব্বিশের পর গত দেড় বছরে আমাদের অনেক জায়গা হতাশা রয়েছে। ঐকমত্য কমিশনে প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে নানা শক্তি নানাভাবেই সংস্কারের বিরোধিতা করেছে এবং বাধাগ্রস্ত করার চেষ্টা করেছে। এ অবস্থায় সংস্কারের পক্ষে আমরা তিন দল ঐক্যবদ্ধ হয়েছি। 

তিনি বলেন, এটা কেবল নির্বাচনী জোট না, এটা রাজনীতিক জোটও। আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে নির্বাচন করব। আরও কয়েকটি রাজনৈতিক শক্তি ও দলের সঙ্গেও আলোচনা চলছে। আগামী নির্বাচনে আমরা একসঙ্গে একই মার্কায় অংশগ্রহণ করব।

পাশপাশি নাহিদ সতর্ক করে বলেন, কেউ যদি মনে করে আগামী নির্বাচনে গায়ের জোর কিংবা ধর্মের দোহাই দিয়ে বিজয়ী হবে, তারা সফল হবে না।

এসময় এবি পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের জন্য সবাই ঐক্য চায়। পুরোনো বন্দোবস্তে মানুষ অতিষ্ঠ। ভুল-ত্রুটি থাকতে পারে, তবে আজ নতুন যাত্রা শুরু হল। আমরা ঘোষণা করছি, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের স্পিরিট নিয়ে তিনটি দল ঐক্যবদ্ধভাবে পথচলা অব্যাহত রাখবে। 

তিনি আরও জানান, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের অঙ্গীকার ও প্রত্যাশা অনুযায়ী বাংলাদেশকে একটা নতুন রাজনৈতিক ব্যবস্থা দেওয়ার লক্ষ্যে এ জোট গঠন করেছি।

রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের নেতা হাসনাত কাইয়ূম বলেন, ভবিষ্যতে এই জোট আরও বিস্তৃত হবে বলে বিশ্বাস করি। কারণ আমরা মনে করি, শুধু এই তিনটি দল নয় অভ্যুত্থান কিংবা পরিবর্তনের আকাঙ্ক্ষাকে ধারণ করে আরও অনেকেই। 

তিনি আরও বলেন, চব্বিশের অভ্যুত্থান টিকবে কিনা তা নির্ভর করবে সংস্কারের আকাঙ্ক্ষা কতটুকু বাস্তবায়ন হয়েছে, তার উপর। আমরা সংস্কার প্রস্তাব বাস্তবায়নের জন্য ‘হ্যাঁ’ ভোটের ওপর প্রচার চালাব। 

নতুন এই জোট ভবিষ্যৎ রাজনীতি ও আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে যৌথভাবে কাজ করবে এবং গণতান্ত্রিক সংস্কার, ন্যায়ভিত্তিক রাষ্ট্রব্যবস্থা ও দায়িত্বশীল রাজনৈতিক ব্যবস্থার প্রতিষ্ঠায় সমন্বিত উদ্যোগ নেবে বলে নেতারা সংবাদ সম্মেলনে জানান।