বাসস
  ০৩ নভেম্বর ২০২৫, ১৮:০৪

২০৩০ সালের মধ্যেই অপারেশনে যাবে বে টার্মিনাল: চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান

সোমবার চট্টগ্রাম বন্দর অডিটোরিয়ামে এক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এস.এম. মুনিরুজ্জামান। ছবি: বাসস

চট্টগ্রাম, ৩ নভেম্বর, ২০২৫ (বাসস): চট্টগ্রাম বন্দরের বহুল প্রতীক্ষিত বে টার্মিনাল ২০৩০ সালের মধ্যে অপারেশনে যাবে বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এস.এম. মুনিরুজ্জামান।

তিনি জানান, নানা জটিলতা কাটিয়ে বাস্তবায়নের পথে আলো দেখাচ্ছে চট্টগ্রাম বন্দরের গুরুত্বপূর্ণ মেগা প্রকল্প বে টার্মিনাল। এরইমধ্যে ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্ট ফ্যাসিলিটেশন কোম্পানিকে (আইআইএফসি) ট্রানজ্যাকশন অ্যাডভাইজার নিয়োগ দেয়া হয়েছে। আগামী বছরের জুনে বে টার্মিনালের স্রোতরোধী প্রাচীর নির্মাণ ও এক্সেস চ্যানেল নির্মাণ কাজের দরপত্র আহ্বান করা হবে। 

আজ সোমবার (৩ নভেম্বর) বন্দর অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত ‘জেনারেল মার্কেট এনগেজমেন্ট কনফারেন্স ফর দ্য বে টার্মিনাল মেরিন ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ তথ্য জানান।

অনুষ্ঠানে এ প্রকল্পের অগ্রগতি তুলে ধরে বন্দর চেয়ারম্যান বলেন, আগামী ১০০ বছরের চাহিদাকে বিবেচনায় নিয়ে এ টার্মিনাল নির্মিত হবে। এটি হবে দেশের অর্থনীতির গেম চেঞ্জার। যা চট্টগ্রাম বন্দরকে বিশ্বমানের বন্দরে কাতারে নিয়ে যাবে। পণ্য রপ্তানিতে বৈচিত্র্য আসবে। বিদেশি বিনিয়োগের দুয়ার খুলবে।

মুনিরুজ্জামান বলেন, বে টার্মিনাল শুধু চট্টগ্রাম নয়, পুরো দক্ষিণ এশিয়ার বাণিজ্য মানচিত্রে বাংলাদেশের অবস্থান আরো শক্তিশালী করবে। এটি চালু হলে দেশের রপ্তানি সক্ষমতা ও জাহাজ আগমনের সময় নাটকীয়ভাবে কমে আসবে। দেশের সামগ্রিক অর্থনীতিতেও আসবে আমূল পরিবর্তন।

সবকিছু ঠিকঠাক এগোলে আগামী বছরের জুনে কাজ শুরুর প্রত্যাশা জানিয়ে তিনি আরো বলেন, বে টার্মিনাল নির্মাণ প্রকল্পের নকশা ও প্রস্তুতিমূলক কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে। সরকার ও বন্দর কর্তৃপক্ষ ইতোমধ্যে দেশি-বিদেশি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে প্রাথমিক আলোচনা সম্পন্ন করেছে।

চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সদস্য (প্রকৌশল) কমডোর কাওছার রশিদ বলেন, চট্টগ্রাম বন্দরের ক্রমবর্ধমান চাপ কমাতে বে টার্মিনাল প্রকল্পটি সময়ের দাবি। চট্টগ্রাম বন্দরের সব স্টেকহোল্ডার চান, বে টার্মিনাল দ্রুত বাস্তবায়িত হোক। প্রকল্পের আওতায় সাগরে ব্রেকওয়াটার ও নেভিগেশন চ্যানেল নির্মাণের পাশাপাশি টার্মিনাল এলাকায় রেল ও সড়ক সংযোগ, কনটেইনার ইয়ার্ড, জেটি এবং আধুনিক সেবা অবকাঠামো তৈরি করা হবে।

প্রেজেন্টেশন প্রদর্শনীতে তিনি বলেন, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ ২০২৫ সালের এপ্রিল থেকে ২০৩১ সালের জুন পর্যন্ত মেয়াদে ‘বে টার্মিনাল মেরিন ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট’ বাস্তবায়ন করবে। প্রকল্পটি নগরীর উত্তর হালিশহরের আনন্দবাজার এলাকায় গড়ে তোলা হবে।

বন্দর কর্তৃপক্ষের আশা, বে টার্মিনাল চালু হলে বছরে কমপক্ষে ৩০ লাখ টিইইউ (২০-ফুট ইকুইভ্যালেন্ট) কনটেইনার হ্যান্ডলিং সম্ভব হবে, যা বর্তমান সক্ষমতার প্রায় দ্বিগুণ।

মতবিনিময় সভায় অংশগ্রহণ করেন- প্রকল্পের সম্ভাব্য দেশি ও বিদেশি ঠিকাদারদের প্রতিনিধিরা, বন্দর ব্যবহারকারী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ, প্রকৌশলী ও পরিকল্পনা কমিশনের কর্মকর্তারা।

সভায় বক্তারা বলেন, বে টার্মিনাল সফলভাবে বাস্তবায়িত হলে বাংলাদেশ আঞ্চলিক বাণিজ্যের অন্যতম লজিস্টিক হাব হিসেবে গড়ে উঠবে এবং চট্টগ্রাম বন্দরের শতবর্ষী ঐতিহ্য নতুন উচ্চতায় পৌঁছাবে।