শিরোনাম
ঢাকা জেলা (দক্ষিণ), ২৬ আগস্ট, ২০২৫ (বাসস): স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, ভূমি দস্যুদের কঠোর হস্তে দমন করা হবে। তাদের কোনো ছাড় দেওয়া হবে না। সবাইকে আইনের আওতায় আনতে হবে।
আজ মঙ্গলবার সকালে কেরানীগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী শুভাঢ্যা খাল পুনঃখনন এবং খালের উভয় পাড়ের উন্নয়ন ও সুরক্ষা প্রথম পর্যায়ের প্রকল্পের বাস্তব কাজের উদ্বোধনকালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি আরো বলেন, ‘এই খাল দিয়েই আমি একসময় আমার জন্মস্থান সিরাজদিখান থেকে ঢাকায় আসতাম।
এই খালের অবস্থা আগের মতো আর নেই। জীবিকা নির্বাহের জন্য ও পরিবেশের ভারসাম্যের জন্য, পানি নির্গমনের জন্য, কৃষি কাজে ব্যবহারের জন্য খালটি অতীতে এলাকার মানুষের কাছে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ছিল।
কিন্তু সময়ের সাথে বর্জ্য অব্যবস্থাপনা, পানি চলাচলে বিঘ্ন, অনবরত ডাম্পিং ও স্থানীয় কতিপয় ভূমিদস্যুদের স্বেচ্ছাচারিতায় ক্রমান্বয়ে খালটির কার্যকারিতা ধ্বংস হয়ে গেছে।’
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘অত্র এলাকার পানি প্রবাহের ঐতিহ্যবাহী খালটি আজ হুমকির সম্মুখীন। এক সময়ে খালটি বুড়িগঙ্গা ও ধলেশ্বরী নদীর সংযোগ ছিল এবং দেশীয় মাছের অভয়ারণ্যে পরিণত ছিল। এক সময় খাল দিয়ে নৌকা চলতো, মাছ ধরা যেত এবং খালের পানি কৃষি কাজে ব্যবহার করা যেত। অথচ এই খালটি বর্তমানে পুরোটাই বর্জ্য ও পলিথিনে ভরা। খুবই দুঃখের বিষয় খালের কিছু অংশ এমনভাবে ভরাট হয়ে গেছে, যেন সেখানে হেঁটে পার হওয়া যায়। ৭ কিলোমিটার দীর্ঘ এই শুভাঢ্যা খালের অস্তিত্ব বর্তমানে বিলীনের পথে।’
তিনি বলেন, ‘খালটি উদ্ধার হলে পানি প্রবাহ হবে। জীব বৈচিত্র্য ফিরে আসবে। খালের পানি যেন আর দূষিত না হয় সেজন্য আমাদেরকে লক্ষ্য রাখতে হবে। ভুলক্রমেও যেন কোনো অসাধু ভূমি দস্যুরা খাল দখল করতে না পারে সেই দিকে সবাইকে লক্ষ্য রাখতে হবে। খাল দখলকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।’
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘খালটি প্লাস্টিকে ভরে গেছে।
খালের দুই পাড় ঘেঁষে বড় বড় ভবন হয়েছে। আমরা সেনাবাহিনীর সাথে কথা বলে তাদেরকে এই কাজটি দিয়েছি। এই খালটি অন্য খালগুলোর মতো নয়। পরিবেশগত বিবেচনায় এই খালটির গুরুত্ব অন্যরকম।
খালটি গভীরভাবে খনন করার কথা ভাবা হচ্ছে। আর যেন অবৈধ দখল না হয় এজন্য খালের দুই পাড় ঢালাই করতে হবে।’
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ, সেনা সদরের ইঞ্জিনিয়ার ইন চিফ মেজর জেনারেল মোহাম্মদ হাসান উজ্জামান, ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার শরীফ উদ্দিন আহমদ, পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের পরিচালক এনায়েত উল্লাহ চৌধুরী, ঢাকা জেলা প্রশাসক তানভীর আহমেদ, কেরানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রিনাত ফৌজিয়া প্রমুখ।
এই প্রকল্প ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে ৩১৭ কোটি টাকা। এই প্রকল্পের প্রথম পর্যায়ের কাজ এক বছর মেয়াদি।