শিরোনাম
ঢাকা, ৩১ মে, ২০২৫ (বাসস): ৭২তম আন্তর্জাতিক সাগরমাথা (মাউন্ট এভারেস্ট) দিবসে বাংলাদেশি পর্বতারোহী ও অ্যাডভেঞ্চারপ্রেমীদের প্রশংসা করেছে ঢাকাস্থ নেপালের দূতাবাস।
দূতাবাস বলেছে, দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে সম্পর্ক গভীর করার ক্ষেত্রে তারা অসাধারণ অবদান রেখেছেন।
আন্তর্জাতিক সাগরমাথা দিবস উপলক্ষে শুক্রবার সন্ধ্যায় ঢাকার নেপালের দূতাবাস ‘স্টোরিজ ফ্রম দ্য সামিট: মাউন্টেইনস থ্রু দ্য বাংলাদেশ আইস’ শীর্ষক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। এতে নেপালের দুর্গম ভূখণ্ডজুড়ে ভ্রমণকারী, পর্বতারোহী, ট্রেকার ও আলোকচিত্রীরা তাদের অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন। এর মাধ্যমে বাংলাদেশ ও হিমালয় পর্বতমালার মধ্যে স্থায়ী সংযোগকে সম্মান জানানো হয়।
শনিবার নেপাল দূতাবাসের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। তিনি বিশ্বের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ জয়ে বাংলাদেশি পর্বতারোহীদের সাহসিকতার প্রশংসা করেন।
উপদেষ্টা জলবায়ু পরিবর্তনজনিত প্রভাবে পর্বত ও নদীর বাস্তুতন্ত্র রক্ষায় সম্মিলিত পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান। এগুলো দক্ষিণ এশিয়াজুড়ে জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ ও লাখ লাখ মানুষের জীবিকা নির্বাহে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
বাংলাদেশে নিযুক্ত নেপালের রাষ্ট্রদূত ঘনশ্যাম ভাণ্ডারি বলেন, সাগরমাথার (এভারেস্টের নেপালি নাম) প্রতি বাংলাদেশিদের বিশেষ টান রয়েছে।
তিনি বাংলাদেশি পর্বতারোহী ও অ্যাডভেঞ্চারপ্রেমীদের দুঃসাহসিক মনোভাবের ভূয়সী প্রশংসা করেন।
ঘনশ্যাম ভাণ্ডারি বিশ্বব্যাপী জলবায়ু আলোচনায় পর্বত-সম্পর্কিত উদ্বেগগুলোকে অগ্রাধিকার দেওয়ার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন এবং পর্বতের বাস্তুতন্ত্রের ক্রমবর্ধমান দুর্বলতা সম্পর্কে সতর্ক করেন।
অনুষ্ঠানে সম্প্রতি এভারেস্টজয়ী বাংলাদেশি পর্বতারোহী ইকরামুল হাসান শাকিলকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়। উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান ও রাষ্ট্রদূত ঘনশ্যাম ভাণ্ডারি তার হাতে ক্রেস্ট তুলে দেন।
গত ১৯ মে ইকরামুল হাসান শাকিল পৃথিবীর সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ মাউন্ট এভারেস্ট জয় করেন। এই পর্বতারোহী কক্সবাজারের সমুদ্র উপকূল থেকে ১৩শ কিলোমিটার হেঁটে এভারেস্টের চূড়ায় উঠেন, যেটিকে বলা হয় ‘সি টু সামিট’ অভিযান।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ থেকে প্রথম নারী পর্বতারোহী দলকেও সম্মাননা জানানো হয়। দলটিতে ছিলেন- নিশাত মজুমদার, ইয়াসমিন লিসা, অর্পিতা দেবনাথ, মৌসুমি আক্তার ও তাহুরা সুলতানা রেখা। তারা ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে নেপালের ল্যাংটাং অঞ্চলের তিনটি শৃঙ্গ জয় করেন।
পর্যটন ও প্রকৃতি বিষয়ক লেখক এনামুল হকের সঞ্চালনায় আলোচনায় অংশ নেন এভারেস্ট জয়ী এম এ মোহিত, নিশাত মজুমদার, বাবর আলী ও ইকরামুল হাসান শাকিল। অনুষ্ঠানে তারা তাদের ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা, পরিবেশগত চ্যালেঞ্জ ও হিমালয়ের সঙ্গে তাদের আবেগঘন সম্পর্কের অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন।
দূতাবাসের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আয়োজনটি শুধু পর্বতারোহণের গৌরব উদযাপন হিসেবেই নয়, বরং জলবায়ু পরিবর্তন ও পরিবেশ রক্ষায় আন্তঃসীমান্ত সহযোগিতায় জোরালো প্রচারণার একটি প্ল্যাটফর্ম হিসেবেও কাজ করেছে।