শিরোনাম
ঢাকা, ৩১ মে, ২০২৫ (বাসস) : পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানি সম্পদ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান ইয়ুথ ক্লাইমেট কোয়ালিশন উদ্বোধনকালে বলেছেন, জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ঝুঁকি মোকাবিলায় তরুণদের ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন।
উপদেষ্টা শনিবার ঢাকার আগারগাঁওয়ে পরিবেশ অধিদপ্তরে ‘ম্যানিফেস্টো টক: ইয়ুথ, এনভায়রনমেন্ট এন্ড ক্লাইমেট’ শীর্ষক আলোচনায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।
সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ঝুঁকি মোকাবিলায় তরুণদের ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। যেকোনো ধরনের লোভ, ক্ষমতার মোহ, আর্থিক অনিয়ম ও দুর্নীতি থেকে দূরে থেকে তাদের এই দেশের জন্য কাজ করতে হবে।
এসময় পরিবেশ রক্ষার্থে সরকারের পরিকল্পনা সম্পর্কে জানাতে গিয়ে তিনি বলেন, বায়ুদূষণ মোকাবেলায় সরকার তিনটি বড় উদ্যোগ নিয়েছে-পুরনো বাস অপসারণ, ইলেকট্রিক যানবাহন চালু এবং ঢাকার চারপাশে নতুন ইটভাটা স্থাপন নিষিদ্ধ। আমরা উন্নয়ন চাই, তবে প্রকৃতিকে ধ্বংস করে নয়। জলাশয় ভরাট, পাহাড় কাটা কিংবা বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় অবহেলা চলতে পারে না। প্রকৃতিকে সম্মান জানিয়ে উন্নয়ন পরিকল্পনা করতে হবে।
পলিথিন বন্ধে নাগরিক সমাজের ভূমিকার কথা উল্লেখ করে উপদেষ্টা বলেন, শুধু সরকারের নয়, সকলের দায়িত্ব পরিবেশ রক্ষা করা। বাজারে গেলে পাট বা কাপড়ের ব্যাগ ব্যবহার করুন।
এসময় তিনি উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে তিনটি মডেল প্রকল্প নেওয়ার প্রস্তাব করেন।
তিনি বলেন, টেকসই, পচনশীল ও পুনর্ব্যবহারযোগ্য উপায়ে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা করতে হবে। সিঙ্গল-ইউজ প্লাস্টিক দ্রুত নিষিদ্ধ করতে হবে।
আমিনবাজার ও মাতুয়াইলের ময়লার স্তূপ থেকে সৃষ্ট আগুন জনস্বাস্থ্যের জন্য হুমকি উল্লেখ করে উপদেষ্টা বলেন, এতে আশপাশের মানুষের ফুসফুস ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ছে।এ সমস্যার দ্রুত সমাধান করতে হবে।
উপদেষ্টা বলেন, রাস্তা সম্প্রসারণের নামে পুরোনো গাছ কাটা চলবে না। গাছ রেখে উন্নয়ন পরিকল্পনা করতে হবে। বন বিভাগ ও গণপূর্ত অধিদপ্তর মিলে জাদুঘরের নকশা পরিবর্তনের মাধ্যমে গাছ রক্ষার চেষ্টা করছে-এটাই আশার বার্তা।
তিনি আরো জানান, ইউক্যালিপটাস ও আকাশমণি গাছ পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর প্রমাণিত হওয়ায় তা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। পরিবেশবান্ধব গাছ লাগানোর ওপর জোর দেওয়া হচ্ছে।
অনুষ্ঠানে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ, পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক জিয়াউল হক ও স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. আহমদ কামরুজ্জামান মজুমদার উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়াও, তরুণদের নেতৃত্বাধীন ১৬টি সংগঠনের সমন্বয়ে গঠিত ইয়ুথ ক্লাইমেট কোয়ালিশন আয়োজিত অনুষ্ঠানে তরুণ জলবায়ুকর্মীসহ দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দও অংশ নেন এবং নিজ নিজ দলের পক্ষ থেকে জলবায়ু ও পরিবেশ বিষয়ে তাদের অবস্থান তুলে ধরেন। আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের ইশতেহারে পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তনকে গুরুত্ব দেওয়া হবে বলেও তারা জানান।