বাসস
  ১৯ মে ২০২৫, ১৭:৪৮

জিয়া স্মৃতি জাদুঘরকে পূর্ণাঙ্গ মিউজিয়ামে রূপান্তর করা হবে: ফারুকী 

সোমবার দুপুরে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউস সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী কথা বলেন। ছবি: বাসস

চট্টগ্রাম, ১৯ মে ২০২৫ (বাসস): সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী বলেছেন, চট্টগ্রামে জিয়া স্মৃতি জাদুঘর ১৬ বছর বন্ধ ছিল। আমরা দায়িত্ব নেওয়ার পর জাদুঘরের যে বাজেট ছিল তা দ্বিগুণ করা হয়েছে। জিয়া স্মৃতি জাদুঘরকে পূর্ণাঙ্গ মিউজিয়ামে রূপান্তর করা হবে। সেজন্য বিভিন্ন উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। 

তিনি বলেন, ‘যেহেতু জিয়া স্মৃতি জাদুঘর, তাই এ জাদুঘরে জিয়াউর রহমানের পুরো জীবনের স্মৃতি সংরক্ষণ করা হবে। এটি সময়সাপেক্ষ বিষয়। এর জন্য জিয়াউর রহমানের জীবনী নিয়ে গবেষণা করা দরকার এবং জাদুঘরের বিষয়ে সুন্দর করে জানানোর জন্য কিউরেটর নিয়োগ করা দরকার।’

আজ সোমবার দুপুরে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউস সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সংস্কৃতি উপদেষ্টা এসব কথা বলেন। এ সময় সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মফিদুর রহমান ও চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক ফরিদা খানম উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে সকালে চট্টগ্রামে অবস্থিত জিয়া স্মৃতি জাদুঘর পরিদর্শন করেন সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। 

সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে সংস্কৃতি উপদেষ্টা বলেন, ‘আপনারা জানেন যে, আমরা অল্প কয়েকদিনের সরকার। ফলে আমাদের কাজ মূলত কালচারাল ক্ষেত্রে কিছু বড় পরিসরে কাজ করা। সেটা আপনারা ইতোমধ্যেই দেখেছেন যে স্বাধীনতার পরে এই বছর সবচেয়ে বড় নববর্ষ পালন করা হয়েছে। চাঁদ রাতে ঈদের অনুষ্ঠান হয়েছে আবার বৌদ্ধ পূর্ণিমার অনুষ্ঠানও হয়েছে। এগুলোর মূল কারণ হচ্ছে- বাংলাদেশের সংস্কৃতি যেন বাংলাদেশের সবার হয়ে ওঠে। কোনো একটা নির্দিষ্ট গোষ্ঠীর যেন না হয়। সেই কাজটা আমরা কিছু কিছু করছি।’

চট্টগ্রামের ঐতিহ্য তুলে ধরে সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী বলেন, ‘জব্বারের বলি খেলা দেশের সংস্কৃতির বড় একটি অংশ। চট্টগ্রামের নাম বললেই জব্বারের বলি খেলা চলে আসে। আগামী বছর থেকে জব্বারের বলিখেলা ও সাম্পান বাইচের সঙ্গে যুক্ত হবে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়। 

তিনি বলেন, ‘আমরা এটুকু বলতে পারি যে, জব্বারের বলি খেলা এখন থেকে বাংলাদেশের কালচার হেরিটেজের একটা গুরুত্বপূর্ণ  জিনিস হিসেবে যুক্ত হয়েছে। এটা আরও অনেক আগে হওয়া উচিত ছিল।’

সংস্কৃতি উপদেষ্টা বলেন, ‘এগুলো মানুষেরই আয়োজন, স্থানীয় পর্যায়ে হচ্ছে। সরকারের সাহায্যের দিকে তারা কখনো তাকায়নি। কোনো স্বীকৃতিও তারা চায়নি। তারা তাদের কাজ করছে। কিন্তু রাষ্ট্রের দায়িত্ব হচ্ছে- তার দেশের মানুষের করা গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলো পৃথিবীর কাছে তুলে ধরা, এবং সেই কাজটা আমাদের করা উচিত। কিন্তু ৫৪ বছর দেরি হয়ে গেছে। জব্বারের বলিখেলা ও সাম্পান বাইচকে আমাদের কালচারাল হেরিটেজ হিসেবে আমাদের ক্যালেন্ডারে অন্তর্ভুক্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এটা চট্টগ্রাম থেকে শুরু হলো। শুধু চট্টগ্রামে হবে তা না, সারাদেশের হবে। আমরা তালিকা করার কাজ শুরু করেছি।’ 

তিনি বলেন, ‘সাম্পান চট্টগ্রামের হার্ট। নিউইয়র্ক শহর যেমন কল্পনা করা যায় না হলুদ ট্যাক্সি ছাড়া তেমনি চট্টগ্রাম কল্পনা করা যায় না সাম্পান ছাড়া। তাই এবার চট্টগ্রাম আসার আগে প্রথমে এইসব উৎসবের তালিকা করার জন্য কাজ দিয়েছি আপাতত শিল্পকলা একাডেমিকে। তারা তালিকাটা করছে। এই তালিকা হওয়ার পরে এগুলো আমাদের ক্যালেন্ডারের মধ্যে ঢুকবে এবং ঢাকা থেকে আমরা এই কাজগুলোকে ফ্যাসিলেটেইড করার চেষ্টা করবো।’ 

দায়িত্ব ছেড়ে যাওয়ার আগে ‘নোট টু সাকসেস’ নিয়ে প্রেস কনফারেন্স করা হবে জানিয়ে সংস্কৃতি উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা অনেকগুলো কাজ করছি। যাওয়ার আগে আমরা একটা ব্লু-প্রিন্ট তৈরি করছি; আগামী ৫ বছরে কী করা উচিত, ১০ বছরে কী করা উচিত। যাওয়ার আগে আমি একটা প্রেস কনফারেন্স করে নোট টু সাকসেস তৈরি করে যাবো। পরবর্তীতে আমার পরে যে আসবে নির্বাচিত হয়ে, তার উদ্দেশ্যে আমার উপলব্ধি নোট আকারে দিয়ে যাবো। উনি যদি ফিল করেন এখান থেকে উনার নেয়ার মতো কিছু আছে তাহলে উনি নিবেন। আশা করি দেশের কাজে লাগাবেন।’ 

এসময় চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী আবদুল জব্বারের বলিখেলা নিয়ে বক্তব্য রাখেন বলিখেলা আয়োজক কমিটি ২০২৫ এর আহ্বায়ক হাফিজুর রহমান ও সাম্পান বাইচ নিয়ে বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম নদী ও খাল রক্ষা আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক সাংবাদিক আলীউর রহমান।