শিরোনাম
ঢাকা, ৭ মে, ২০২৫ (বাসস) : জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমান বলেছেন, বাংলাদেশের অভ্যন্তরে লোকজনকে ঠেলে দেওয়ার (পুশ ইন) ক্ষেত্রে ভারতের কর্মকাণ্ড যথাযথ চ্যানেলে পরিচালিত হয়নি। তিনি এটিকে একটি অন্যায্য পদ্ধতি বলে অভিহিত করেছেন।
আজ বুধবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তের বিভিন্ন সীমান্ত পয়েন্ট পার করে ভারত বিভিন্ন ব্যক্তিকে ঠেলে দিয়েছে (পুশ ইন) এমন প্রতিবেদন সম্পর্কে মন্তব্য জানতে চাওয়া হলে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘এটি আনুষ্ঠানিক চ্যানেলের মাধ্যমে করা দরকার।’
উপদেষ্টা পুশ ইন করার বিষয়ে প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ার কথা স্বীকার করে বলেছেন, বাংলাদেশ একটি দৃঢ় অবস্থান বজায় রেখেছে। বাংলাদেশ কেবল বাংলাদেশি নাগরিকত্বের যাচাইযোগ্য প্রমাণসহ প্রত্যাবর্তনকারীদের গ্রহণ করবে।
তিনি বলেন, ‘আমরা প্রতিটি ঘটনা পরীক্ষা করছি। আমাদের সিদ্ধান্ত হচ্ছে যে, তারা বাংলাদেশি নাগরিক কিনা তার প্রমাণ থাকলেই কেবল আমরা তাদেরকে গ্রহণ করব।’
ঢাকা আনুষ্ঠানিকভাবে বিষয়টি নয়াদিল্লির কাছে উত্থাপন করবে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমরা ইতিমধ্যে ভারত সরকারের সাথে এই বিষয়ে যোগাযোগ স্থাপনের চেষ্টা করছি।’
গণমাধ্যমের খবর অনুসারে, ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) বুধবার সকালে খাগড়াছড়ি সীমান্ত পার করে ৬৬ জন ভারতীয় নাগরিককে - যাদেরকে মুসলিম ও বাংলাদেশী হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে - বাংলাদেশে ঠেলে দিয়েছে বলে জানা গেছে।
এর আগে একই ব্রিফিংয়ে রহমান ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে চলমান উত্তেজনা সম্পর্কে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিও পড়ে শোনান।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ ভারত ও পাকিস্তান উভয়কেই শান্ত থাকার, সংযম প্রদর্শন করার এবং পরিস্থিতি আরও খারাপ করতে পারে এমন কোনও পদক্ষেপ নেওয়া থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়েছে।
বিবৃতিতে রহমান বলেন, ‘বাংলাদেশ সরকার ভারত ও পাকিস্তানের ক্রমবর্ধমান পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। বাংলাদেশ পরিস্থিতি নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছে।’
এতে আরও বলা হয়েছে, আঞ্চলিক শান্তি, সমৃদ্ধি এবং স্থিতিশীলতার চেতনায়, বাংলাদেশ আশাবাদী যে, কূটনৈতিক প্রচেষ্টার মাধ্যমে উত্তেজনা প্রশমিত হবে।
ঢাকা আশা করছে যে, এই অঞ্চলের জনগণের স্বার্থে শান্তি শেষ পর্যন্ত জয়লাভ করবে।
এদিকে, ভারত-পাকিস্তান সংঘর্ষের কারণে বাংলাদেশের নিরাপত্তা যাতে বিঘ্নিত না হয়, সেজন্য সীমান্তবর্তী জেলাগুলির পুলিশ সুপারদের সতর্ক থাকতে বলেছেন পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম।
তাকে উদ্ধৃত করা হয়েছে পুলিশ সদর দপ্তরের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘ভারত-পাকিস্তান সংঘর্ষের কারণে বাংলাদেশের নিরাপত্তা যাতে বিঘ্নিত না হয়, সেজন্য সীমান্তবর্তী জেলাগুলির পুলিশ সুপারদের সতর্ক করা হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এই প্রেক্ষাপটে আমাদের নিরাপত্তা যাতে বিঘ্নিত না হয়, সেজন্য আমরা সর্বাত্মক চেষ্টা করব।’
বাংলাদেশের ত্রিশটি জেলার সাথে ভারতের এবং তিনটি জেলার সাথে মিয়ানমারের সীমান্ত রয়েছে।