শিরোনাম

/মুহাম্মদ নূরুজ্জামান/
খুলনা, ২৭ অক্টোবর ২০২৫ (বাসস): টানা ২২ দিন ইলিশ ধরায় নিষেধাজ্ঞা শেষে ২৫ অক্টোবর মধ্যরাত থেকে রুপালী ইলিশ শিকারে সাগর ও নদীতে নেমেছেন জেলেরা।
জালে ধরা পড়ছে ইলিশ। ফলে খুলনা নগরীর বাজারগুলোতে শুরু হয়েছে রুপালী ইলিশের সরবরাহ। গতকাল রোববার থেকে নগরীর পাইকারী মৎস্য আড়ৎসহ স্থানীয় বাজারগুলোতে দেখা মিলছে ইলিশের। তবে নিষেধাজ্ঞার পর প্রথম দিনে বাজারগুলোতে ইলিশের সরবরাহ কম থাকায় দাম ছিল চড়া।
এর আগে ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুমে মা ইলিশ সংরক্ষণে গত ৩ সেপ্টেম্বর রাত ১২ টা থেকে ২২ দিন মাছ ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে সরকার। এই সময়ে ‘মৎস্য সংরক্ষণ আইন ১৯৯০’ অনুযায়ী ইলিশ আহরণ, ক্রয়-বিক্রয়, পরিবহণ, মজুত ও বিনিময়ও নিষিদ্ধ করা হয়।
মৎস্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা জানান, জাতীয় মাছ ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুমে মা ইলিশ সংরক্ষণে এ বছর ইলিশ শিকারে নিষেধাজ্ঞা কঠোরভাবে বাস্তবায়নের প্রচেষ্টা চালানো হয়। ফলে গত বছরের তুলনায় এ বছর ইলিশের উৎপাদন বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে।
নগরীর টুটপাড়া জোড়াকল বাজার, রুপসা, সন্ধ্যা বাজার, নিরালা, নিউমার্কেট, খালিশপুর চিত্রালী, দৌলতপুর, ফুলবাড়ীগেট ও শিরোমনি বাজারসহ নগরীর বিভিন্ন বাজারে দেখা মিলেছে রুপালী ইলিশের। অনেকে ভ্যানে ফেরি করেও মাছ বিক্রি করেছেন। তবে দাম ছিল চড়া।
খুচরা বিক্রেতারা জানান, রোববার রূপসা পাইকারী বাজারে ইলিশের সরবরাহ ছিল কম। ১ কেজি ওজনের ইলিশ বিক্রি হয়েছে ৩০০০ টাকা ৩২০০ টাকায়, ৭০০ থেকে ৯০০ গ্রাম ইলিশের কেজি বিক্রি হয়েছে ১৮০০ থেকে ২০০০ টাকায়। আকারভেদে বাচ্চা ইলিশ বিক্রি হয়েছে ৮০০ থেকে ১০০০ টাকায়। তবে, প্রথম দিনে খুচরা বাজারে ইলিশের ক্রেতাও ছিল তুলনামূলক কম।
রূপসা বাজারের পাইকারী মাছ বিক্রেতা আব্দুল্লাহ জানান, জেলেরা ২৫ অক্টোবর মধ্যরাত থেকে সমুদ্রে মাছ ধরার উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছেন। যে কারণে বাজারে ইলিশের সরবরাহ শুরু হয়েছে সবেমাত্র। জেলেদের জালে পর্যাপ্ত মাছ ধরা পড়লেই বাজারে মাছের আমদানী বাড়বে। এখন থেকে প্রতিদিনই বরিশাল, পাথরঘাটা ও পটুয়াখালির মহিপুরসহ চট্টগ্রাম অঞ্চল থেকে ইলিশ আসবে পাইকারী বাজারে।
অপর পাইকারী মাছ ব্যবসায়ী আসলাম বাসসকে বলেন, যাতায়াত ব্যবস্থা অত্যন্ত ভালো হওয়ায় দুই একদিনের মধ্যেই বাজারে ইলিশের সরবরাহ বাড়বে।
খুচরা বাজারের বিক্রেতা আব্দুর রাজ্জাক বলেন, রোববার থেকে বাজারে ইলিশের বেচাকেনা শুরু হয়েছে। প্রথম দিন ইলিশ বিক্রি করেছি, ক্রেতা কম ছিল। দীর্ঘ নিষেধাজ্ঞার কারণে বাজারে ইলিশের সরবরাহ কম। সরবরাহ যত বাড়বে, দামও তত কমবে।
খুচরা বিক্রেতা জয়নাল জানান, প্রথম দিন খুলনার নতুন বাজারে গিয়ে তেমন ইলিশ পাইনি। বাচ্চা ইলিশ পেয়েছিলাম, তাই এনে বিক্রি করেছি। নিষেধাজ্ঞার পর সবেমাত্র পাইকারী বাজারে মাছ আনতে শুরু করেছে জেলেরা। সরবরাহ বাড়লে দামও কমে যাবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
মৎস্য অধিদপ্তরের খুলনা বিভাগীয় পরিচালক মো. জাহাঙ্গীর আলম জানান, ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুমে মা ইলিশ সংরক্ষণে সারাদেশের মতো খুলনা বিভাগের চারটি জেলায় ইলিশ শিকারে নিষেধাজ্ঞা কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করা হয়। ফলে গত বছরের তুলনায় এ বছর ইলিশের উৎপাদন বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে।