বাসস
  ০৯ আগস্ট ২০২২, ১১:৫৮

নতুন প্রজন্মকে অজানা অধ্যয় জানাচ্ছে গোপালগঞ্জে বঙ্গমাতা ফটো গ্যালারি  

॥ মনোজ কুমার সাহা ॥
টুঙ্গিপাড়া (গোপালগঞ্জ), ৯ আগস্ট, ২০২২ (বাসস): মহিয়সী নারী বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিবেকে নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে যাত্রা শুরু করেছে গোপালগঞ্জে ‘বঙ্গমাতা’ ফটো গ্যালারি।
‘মহীয়সী বঙ্গমাতার চেতনায় অদম্য বাংলাদেশের প্রেরণা’ এই প্রতিপাদ্যে তাঁর ৯২তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে গোপালগঞ্জ বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব চক্ষু হাসাপাতাল ও ট্রেনিং ইনস্টিটিউটে সোমবার এই ফটো গ্যালারির উদ্বোধন করা হয়। প্রধানমন্ত্রীর সাবেক স্বাস্থ্য উপদেষ্টা প্রফেসর ডা. সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী প্রধান অতিথি হিসেবে গ্যালারির উদ্বোধন করেন। অনুষ্ঠানে হাসপাতালের পরিচালক প্রফেসর ডা. নাহিদ ফেরদৌসী ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব আলী খান বক্তব্য রাখেন।
ফটো গ্যালারিতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আজীবন সহযাত্রী বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের অনেক অজানা অধ্যয় প্রকাশ করা হয়েছে। সেখানে স্থির চিত্রে তাঁর জীবন, কর্ম, সাহস ও ত্যাগের ইতিহাস ফুটিঁয়ে তোলা হয়েছে। এখানে বঙ্গমাতার দুর্লভ সব ছবি প্রদর্শন করা হয়েছে। বঙ্গমাতাকে লেখা বঙ্গবন্ধুর চিঠি ও বিভিন্ন ঐতিহাসিক ঘটনার বর্ণনা ফটো গ্যালারিতে স্থান পেয়েছে। এখানে এসে দর্শনার্থীরা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের অজানা অধ্যয়কে জানতে পারছেন। 
গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার গোবরা গ্রামের গৃহবধূ নার্গিস সুলতানা বলেন (৩৫), আমরা জানতাম শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব ছিলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সহধর্মিনী। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মাতা। তিনি গৃহিনী ছিলেন বলেই জানতাম। কিন্তু  শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব চক্ষু হাসপাতালের ডাক্তার দেখাতে এসে ‘বঙ্গমাতা’ ফটো গ্যালারি দেখে আমার সে ধারণা বদলে গেছে।তিনি সরাসরি রাজনীতি করেননি। কিন্তু তাঁর মধ্যে রাজনৈতিক দূরদর্শিতা ছিলো। তাই তিনি বঙ্গবন্ধুকে পেছন থেকে রাজনীতিতে প্রেরণা জুগিয়েছেন। শেখ মুজিবকে বঙ্গবন্ধু ও জাতির পিতা হতে সহযোগিতা করেছেন। তাঁর এই অসামান্য অবদান আমরা ফটো গ্যালারির ছবি, বিভিন্ন ধরণের ধারা বর্ণনা ও শেখ ফজিলাতুন্নেছাকে লেখা বঙ্গবন্ধুর চিঠি পড়ে জানতে পেরেছি। ধন্য এই মহিয়সী নারী, আমাদের সামনের দিকে পথ চলার নতুন প্রেরণার উৎস।
গোপালগঞ্জ শহরের শেখ হাসিনা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় এ্যান্ড কলেজের ১০ম শ্রেণির শিক্ষার্থী হালিমা খাতুন বলে, মুজিববর্ষ থেকে আমরা স্কুল, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সহ বিভিন্ন কার্যালয়ে বঙ্গবন্ধু কর্ণার দেখছি। সেখান থেকে বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনী পড়েছি। এখন আমি চক্ষু হাসপাতালের বঙ্গমাতা গ্যালারি থেকে বঙ্গমাতা সম্পর্কে অনেক কিছুই জানতে পেরেছি। তিনি ৬৬ এর ৬ দফা আন্দোলন, ৬৯ এর গণ আন্দোলন ও ৭১ এর মুক্তিযুদ্ধে বঙ্গবন্ধুকে পরামর্শ, প্রেরণা দিয়েছেন। গণ আন্দোলন সংগঠিত করতে অসামান্য অবদান রেখেছেন। তাই এই মহিয়সী নারীর প্রতি আমার শ্রদ্ধাবোধ বেড়ে গেছে। পাঠ্যপুস্তকে তাঁর এই অসাধারণ অবদান অর্ন্তভূক্ত করার দাবি জানাচ্ছি।
গোপালগঞ্জে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ^বিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী রায়হানুল ইসলাম সৈকত বলেন, চক্ষু হাসপাতালের বঙ্গমাতা ফটো গ্যালারি আমাদের কাছে বঙ্গমাতা সম্পর্কে অজানা অনেক নতুন নতুন তথ্য উপস্থাপন করছে। এখান থেকে আমরা বঙ্গমাতার অদম্য সাহস, বঙ্গবন্ধুর মামলা পরিচালনা করা, ছেলে-মেয়েদের উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত করা, রাজনৈতিক প্রজ্ঞা, সমাজিক দায়বদ্ধতা ও দায়িত্ব কর্তব্য পরায়ণতা সম্পর্কে জানতে পারেছি। গ্যালারিতে চমৎকার ভাবে বঙ্গমাতার সমৃদ্ধ ইতিহাস উপস্থাপন করা হয়েছে। এজন্য আমরা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানাই।
গ্যালারির উদ্যোক্তা হাসপাতালের পরিচালক প্রফেসর ডা. নাহিদ ফেরদৌসী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মায়ের নামে নামকৃত শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব চক্ষু হাসাপাতাল ও ট্রেনিং ইনস্টিটিউট। বঙ্গমাতা সারাজীবন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে আন্দোলন সংগ্রামে প্রেরণা জুগিয়েছেন। তাঁর এই অসামান্য অবদান আমরা ফটো গ্যালারির মাধ্যমে উপস্থাপন করার চেষ্টা করেছি। এই হাসপাতালে দেশের অন্তত ৩৫টি জেলা থেকে রোগীরা চিকিৎসা সেবা নিতে আসেন। তারা এখানে এসে চিকিৎসা সেবার পাশাপাশি বঙ্গমাতা ফটো গ্যালারিতে সময় কাটাতে পারবেন। জানবেন বঙ্গমাতা সম্পর্কে নতুন-নতুন অধ্যয়। এছাড়া নতুন প্রজন্মকে বঙ্গমাতা সম্পর্কে জানান দিতেই আমাদের এই প্রয়াস। এটি মাত্র যাত্রা শুরু করেছে। আমরা এই ফটো গ্যালারিকে আরো আকর্ষণীয় ও সমৃদ্ধ করে গড়ে তুলব। 
 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়