বাসস
  ২৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ২১:১৫

বিশ্ব গণমাধ্যমে তারেক রহমানের ঐতিহাসিক স্বদেশ প্রত্যাবর্তন

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। ছবি : বিএনপির ফেসবুক পেইজ

ঢাকা, ২৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ (বাসস) : দীর্ঘ ১৭ বছরের নির্বাসিত জীবনের অবসান ঘটিয়ে আজ বৃহস্পতিবার দেশে ফিরেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। বাংলাদেশের রাজনীতির এই পালাবদলকে অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে কাভার করেছে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলো। 

বিবিসি, রয়টার্স, আল জাজিরা, সিএনএন, দ্য ডন থেকে শুরু করে প্রতিবেশী ভারতের শীর্ষস্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলো তারেক রহমানের দেশে ফেরার খবরটিকে প্রধান শিরোনাম করেছে। তারেক রহমানের ঢাকায় অবতরণ থেকে শুরু করে জনসমাবেশে ভাষণ, পুরো ঘটনাপ্রবাহের ওপর আন্তর্জাতিক কয়েকটি গণমাধ্যম তাদের ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে সরাসরি (লাইভ) সংবাদ প্রচার করেছে।

বিশ্বের প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যমগুলোর প্রতিবেদনে তারেক রহমানকে আগামী নির্বাচনে বাংলাদেশের ‘সম্ভাব্য প্রধানমন্ত্রী’ এবং ‘গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের শীর্ষ নেতা’ হিসেবে অভিহিত করা হয়েছে। 

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি তাদের শিরোনামে লিখেছে, ‘বাংলাদেশের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হওয়ার দৌড়ে এগিয়ে থাকা শীর্ষ নেতা ১৭ বছরের নির্বাসিত জীবন কাটিয়ে দেশে ফিরেছেন।’ 

প্রায় ১৭ বছর পর তারেক রহমানের প্রত্যাবর্তনকে রাজনৈতিকভাবে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলে বিশেষভাবে উল্লেখ করা হয় সংবাদমাধ্যমটিতে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রভাবশালী জিয়া পরিবারের অন্যতম সদস্য ৬০ বছর বয়সী তারেক রহমান ২০০৮ সাল থেকে লন্ডনে বসবাস করছেন। আসন্ন নির্বাচনে দলকে ক্ষমতায় ফিরিয়ে আনতে পারেন এবং বিএনপি জয়ী হলে তিনিই হতে পারেন দেশের নতুন প্রধানমন্ত্রী।

ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স তাদের প্রধান শিরোনামে লিখেছে, ‘নির্বাচনের আগে নির্বাসন থেকে দেশে ফিরেছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসেবে বিবেচিত নেতা’। 

প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রায় দুই দশকের নির্বাসন শেষে ঢাকায় ফেরা তারেক রহমানকে ঘিরে তার দল বিএনপি উজ্জীবিত এবং আগামী ১২ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে তাকেই প্রধানমন্ত্রী পদের শীর্ষ দাবিদার হিসেবে দেখা হচ্ছে। 

মধ্যপ্রাচ্যের প্রভাবশালী গণমাধ্যম আল জাজিরা তাদের প্রতিবেদনে শিরোনাম করেছে, ‘১৭ বছরের নির্বাসিত জীবন শেষে বিরোধী দলীয় নেতা তারেক রহমান বাংলাদেশে ফিরেছেন’। 

সংবাদমাধ্যমটি তাকে বাংলাদেশের দীর্ঘকালীন শাসক পরিবারের উত্তরাধিকারী এবং দেশের সবচেয়ে শক্তিশালী দলের নেতা হিসেবে উল্লেখ করেছে। 

তুরস্কের আনাদোলু এজেন্সি লিখেছে, ‘১৭ বছর নির্বাসিত থাকার পর দেশে ফিরেছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর পদপ্রার্থী তারেক রহমান।’ 

মার্কিন সংবাদমাধ্যম দ্য নিউইয়র্ক টাইমস, এপি এবং হংকংভিত্তিক সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টও এ নিয়ে বিশেষ প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। 

প্রতিবেশী দেশ ভারতের গণমাধ্যমেও বিষয়টি গুরুত্বের সাথে উঠে এসেছে। ভারতের এনডিটিভি তাদের শিরোনামে লিখেছে, ‘খালেদা জিয়ার পুত্র তারেক রহমান বাংলাদেশে ফিরেছেন: নির্বাসনের সময়টি যেমন ছিল’।

দ্য টাইমস অব ইন্ডিয়া এবং হিন্দুস্তান টাইমস তারেক রহমানের দেশে ফেরার পর দেওয়া বক্তব্যের একটি বিশেষ অংশকে শিরোনাম করেছে। 

দ্য টাইমস অব ইন্ডিয়া লিখেছে, “আই হ্যাভ এ প্ল্যান’: ১৭ বছর পর বাংলাদেশে ফিরে মার্টিন লুথার কিংকে স্মরণ করলেন বিএনপির তারেক রহমান।” 

এ ছাড়া ইন্ডিয়া টুডে ও দ্য উইক তারেক রহমানের ফেরা ভারতের জন্য কী বার্তা বহন করছে এবং তার ‘বাংলাদেশ ফার্স্ট’ নীতি নিয়ে বিশ্লেষণধর্মী প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। 

কলকাতার আনন্দবাজার পত্রিকা লিখেছে, ‘সপরিবার বাংলাদেশে ফিরলেন তারেক রহমান! ১৭ বছর পর খালেদা-পুত্রের প্রত্যাবর্তন আশা জোগাচ্ছে বিএনপিকে’।

আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকদের বরাত দিয়ে গণমাধ্যমগুলো উল্লেখ করেছে যে, ৫ আগস্টের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর তারেক রহমানের এই স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দক্ষিণ এশিয়ার ভূ-রাজনীতিতে একটি বড় ঘটনা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।