শিরোনাম

।। বিপুল আশরাফ।।
চুয়াডাঙ্গা, ২২ ডিসেম্বর ২০২৫ (বাসস): জেলায় টানা তিন দিন পর সূর্যের দেখা মিললেও কমেনি শীত। আবহাওয়া অধিদপ্তর চুয়াডাঙ্গার তথ্য অনুযায়ী আজ সকালে জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল চুয়াডাঙ্গায়।
এর আগে টানা তিন দিন কুয়াশার চাদরে ঢাকা ছিল পুরো জেলা। সঙ্গে মৃদু বাতাস যোগ হওয়ায় শীতের তীব্রতা আরও একধাপ বাড়িয়ে দিয়েছে। ঘন কুয়াশা ও মেঘাচ্ছন্ন আবহাওয়ার কারণে দিনভর বেড়েছে শীতের প্রকোপ। কার্যত ঘরবন্দি হয়ে পড়েছে জেলার লাখো মানুষ।
বিশেষ করে নিম্ন আয়ের খেটে খাওয়া মানুষের দুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে । তবে আজ সোমবার সকাল ১০ টার দিকে সূর্যের দেখা মিলেছে। চুয়াডাঙ্গায় আজ সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১১ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ সময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৯৫ শতাংশ। ঠাণ্ডা র প্রভাবে আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে শীতজনিত রোগ। শিশু ও বয়স্কদের মধ্যে সর্দি-কাশি, জ্বর ও শ্বাসকষ্টের রোগীর সংখ্যাও বাড়ছে।
সরেজমিনে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল গিয়ে দেখা যায়, ডায়রিয়া ওয়ার্ডে ৩০ আসনের বিপরীতে ৮৯ জন রোগী ভর্তি রয়েছে। এদের মধ্যে ৮০ জন শিশু। গতকাল ভর্তি ছিলো ১২৯ জন রোগী। চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে তত্ত্বাবধায়ক ডা. বিদ্যুৎ কুমার জানান, রোটা ভাইরাসের কারণে মানুষ বেশি ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছে। তিনি বিশুদ্ধ পানি পান করা ও উষ্ণ স্থানে থাকার পরামর্শ দিয়েছেন।
শীতের কারণে খেটে খাওয়া মানুষকে বেশি বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে। বেলা বাড়লেও গুড়ি গুড়ি বৃষ্টির মত কুয়াশা ঝরছে। গত দুই দিন সড়কে হেডলাইট জ্বালিয়ে যানবাহন চলাচল করছে। তীব্র ঠাণ্ডার কারণে মানুষ প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের হচ্ছে না। গতকাল রোববার (২১ নভেম্বর) দিবাগত রাতে চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামাল হোসেন দুস্থ ও শীতার্ত মানুষের মাঝে কম্বল বিতরণ করেছেন।
চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার ঈদগাহ পাড়ার রাজমিস্ত্রি কালাম হোসেন বলেন, ‘সকাল সাড়ে ছয়টার সময় কাজে এসেছি। তীব্র ঠাণ্ডা ও বাতাসের কারণে শরীরে কাঁপুনি ধরে যাচ্ছে। তবুও কিছু করার নেই। পেটের দায়ে কাজে আসতে হচ্ছে। দ্রব্যমূল্যের যা দাম একদিন কাজে না আসলে আর খাবার জুটবে না।’
রিকশাচালক সাইদুর বলেন, তীব্র শীতে মানুষজন কেউ বাহির হচ্ছে না। প্যাসেঞ্জার পাওয়া যায় না এবং ভাড়া ঠিকমতো হয় না। আর যে কয়েকজন প্যাসেঞ্জার পাওয়া যায় তা দিয়ে সংসার চালানো যাচ্ছে না। শীত বাড়ার সাথে সাথে আমাদের দুর্ভোগ বেড়েছে।
দিনমজুর সাত্তার আলী বলেন, সূর্যের তাপ না থাকায় শীত বেশি পড়ছে। এই তীব্র শীতে সকালে কাজে যাওয়া কষ্টকর। কিন্তু কাজ না করলে খাবার জুটবে না।
চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জামিনুর রহমান বলেন, কয়েক দিন ধরেই চুয়াডাঙ্গাতে শীতের তীব্রতা বেড়েছে। আকাশ মেঘাচ্ছন্ন থাকায় সূর্যের আলো প্রায় নেই বললেই চলে। আজ সোমবার সকাল থেকে সূর্যের আলো দেখা দিয়েছে। মেঘ কেটে গেলে তাপমাত্রা আরো কমে যেতে পারে। এদিকে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রার ব্যবধান কমে যাওয়ায় বেশী শীত অনুভূত হচ্ছে।