বাসস
  ২১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৮:০০

রাজশাহীতে বেড়েছে শীতের তীব্রতা, ২ দিন সূর্যের দেখা মেলেনি

রাজশাহী মহানগর ও আশপাশের উপজেলায় উত্তরের হিমেল হওয়ার পাশাপাশি চারপাশ দুপুর পর্যন্ত কুয়াশায় ঢাকা থাকছে। ছবি : বাসস

।।ওমর ফারুক।।

রাজশাহী, ২১ ডিসেম্বর, ২০২৫ (বাসস): রাজশাহী মহানগর ও আশপাশের উপজেলায় হঠাৎ করে বেড়েছে শীতের তীব্রতা। একদিকে উত্তরের হিমেল হওয়া, অন্যদিকে সূর্যের আলো নেই। গভীর রাত থেকে দুপুর পর্যন্ত কুয়াশায় ঢাকা থাকছে। আজ রোববার রাজশাহীতে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৩ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস, চলতি মৌসুমে জেলায় সর্বনিম্ন।

এদিকে হঠাৎ করেই শীত বাড়ায় দুর্ভোগ বেড়েছে সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষের। চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন ছিন্নমুল মানুষ। প্রতিদিনই কমছে তাপমাত্রার পরিমাণ।

রাজশাহী আবহাওয়া অফিস জানায়, আজ রোববার রাজশাহীতে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৩ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এদিন সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ১৮ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস ও সকাল ৬টায় বাতাসের আদ্রতা ছিল ১০০ শতাংশ।

গতকাল শনিবার রাজশাহীর সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৪ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস ও সর্বোচ্চ তাপমসাত্রা ছিল ২০ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বাতাসের আর্দ্রতা ছিল সকাল ৬টায় ৯৮ শতাংশ ও সন্ধ্যায় শতভাগ।

এর আগের দিন শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) সর্ননিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ১৫ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গত এক সপ্তাহ থেকে ১৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কাছাকাছি তাপমাত্রা বিরাজ করছে রাজশাহীসহ উত্তরাঞ্চলে। 

তাপমাত্রা কমে যাওয়ার কারণে রাজশাহী অঞ্চলে তীব্র শীত জেঁকে বসছে বলে মনে করছে আবহাওয়া অফিস।
রাজশাহী আবহাওয়া অফিসের পর্যবেক্ষক তারেক রহমান জানান, শুক্রবার রাত থেকে হঠাৎ করেই তাপমাত্রা কমে গেছে। সঙ্গে যুক্ত হয়েছে ঘনকুয়াশা। গতকাল শনিবার সকাল ১০টা পর্যন্ত দেখা মেলেনি সূর্যের। বিকেল হওয়ার সাথে সাথে আবারো সূর্য মুখ লুকিয়ে নেয়। শুরু হয় ঘনকুয়াশা। তাপমাত্রা খুব বেশি না কমলেও তীব্র শীত অনুভ’ত হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, চলতি মাস থেকেই মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ শুরু হতে পারে। এই অবস্থা থাকবে আগামী ১৫ থেকে ২০ জানুয়ারি পর্যন্ত। এবার শৈত্যপ্রবাহের স্থায়িত্ব বেশি হতে পারে বলেও ধারণা করা হচ্ছে।

এদিকে তীব্র শীত পড়ায় রাজশাহী নগরীর রাস্তা-ঘাটে মানুষের উপস্থিতি কমে গেছে। সকালে ব্যবসায়ীরা দোকানপাটও খুলছেন দেরিতে। আবার রাত ১০ টার পর নগরীতে লোকজনের উপস্থিতি কমে যাচ্ছে। একইসাথে যানবাহনের পরিমাণও কমছে। রাত ১১টা পর ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে পুরো নগরী। বন্ধ হয়ে যাচ্ছে দোকানপাট। গ্রামাঞ্চলে রাত ৮টার পর আর লোকজন বাইরে থাকছে না। রাত ১০টার মধ্যে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে সব ধরনের দোকানপাট। আবার পরের দিন বেলা ১০টার আগে দোকানপাট খুলছেন না ব্যবসায়ীরা।

জানা গেছে, তীব্র শীতের কারণে নগরীর গরম কাপড়ের দোকানগুলোতে বেড়েছে ভিড়। অভিজাত মার্কেট থেকে শুরু করে রাস্তার ফুটপাতেও গরম কাপড়ের দোকানে লোকসমাগম দেখা যাচ্ছে।

শীত বেড়ে যাওয়ায় দুর্ভোগ বেড়েছে নিম্নআয়ের মানুষের। প্রতিদিন নগরীর ভদ্রা ও রেলগেটে শ্রমিক শ্রেণির সাধারণ মানুষদের কাজের সন্ধানে বসে থাকতে দেখা যায়।  দুপুর পর্যন্ত বসে থেকেও কাজের সন্ধান পাননি তারা। আবার শীতের কারণে অনেকেই বাড়ি থেকে বের হননি। যারা বের হয়েছেন তাদেরও আসতে দেরি হয়েছে। যার কারণে কাজের সন্ধানে নগরীর বিভিন্ন মোড়ে মোড়ে বসে থাকা শ্রমিকদের সংখ্যা অনেক কমেছে।

কাজের সন্ধানে নগরীর রেলগেট এলাকায় বসে থাকা নাজমুল হোসেন বলেন, শীত বাড়ার কারণে সকালে এইখানে আসতে দেরি হয়েছে। যার কারণে আজ আর কাজ পাননি তিনি। সঙ্গে থাকা পবার পারভেজ বলেন, তীব্র শীত পড়লে তাদের অনেক কষ্টে দিন পার করতে হয়। একদিকে থাকে কাজ না পাওয়ার আশঙ্কা, অন্যদিকে শীতের মধ্যে কাজ করা নিয়েও দুশ্চিন্তা।

কাজ না করলে পরিবার পরিজন নিয়ে চলা মুশকিল হয়ে যায় বলে তারা সকাল সকাল রেলগেটে এসে বসে থাকেন। বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলের শ্রমিকরা শীতের কারণে বেশি বেকার হয়ে পড়েছেন। দিনের বেশিরভাগ সময় কুয়াশা থাকছে। সেই সঙ্গে শীতের তীব্রতা  গ্রামেও বেশি। এতে গ্রামের শ্রমিকরা কাজে যেতে পারছেন না। যারা কাজ করছেন তাদের শীতের কারণে কষ্ট বেড়েছে।