শিরোনাম

ঢাকা, ২০ ডিসেম্বর, ২০২৫ (বাসস): বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক, বীর-উত্তম খেতাবপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা, মুক্তিবাহিনীর ডেপুটি চিফ অব স্টাফ, স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম বিমান বাহিনী প্রধান এবং সাবেক মন্ত্রী এয়ার ভাইস মার্শাল (অব.) আবদুল করিম খন্দকারের (এ কে খন্দকার) মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক উপদেষ্টা ফারুক ই আজম, বীর প্রতীক।
আজ এক শোক বার্তায় উপদেষ্টা বলেন, মরহুম এয়ার ভাইস মার্শাল বীর উত্তম এ কে খন্দকার ১৯৭১ সালে ঢাকাস্থ পাকিস্তান বিমান বাহিনী ঘাঁটিতে সেকেন্ড ইন কমান্ড হিসেবে নিযুক্ত থাকাকালীন স্বাধীনতা যুদ্ধ শুরু হলে ১৯৭১ সালের ১২ মে ঢাকা থেকে ত্রিপুরার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হন এবং ১৫ মে ত্রিপুরার মতিন নগরে পৌঁছান।
তিনি বলেন, তৎকালীন প্রবাসী বাংলাদেশ সরকার (মুজিবনগর সরকার) তাকে মুক্তিবাহিনীর ডেপুটি চিফ অব স্টাফ পদে নিযুক্ত করেন। তার নেতৃত্বেই ১৯৭১ সালের সেপ্টেম্বরে বিমান বাহিনীর ঐতিহাসিক ‘কিলোফ্লাইট’ এর অপারেশন সমূহ পরিচালিত হয়েছিল। মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকার জন্য তিনি ১৯৭২ সালে ‘বীর উত্তম’ খেতাবে ভূষিত হন।
বীর উত্তম এ কে খন্দকার ১৯৮৬ সালে রাষ্ট্রপতির উপদেষ্টা ও পরবর্তীতে সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হন এবং বাংলাদেশ সরকারের পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসেবে সফলতার সাথে দায়িত্ব পালন করেন।
উপদেষ্টা বলেন, মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনায় মুক্তি বাহিনীর ডেপুটি চিফ অব স্টাফ হিসেবে তার অসামান্য অবদান, স্বাধীনতা উত্তর বাংলাদেশ বিমান বাহিনীকে একটি সুসংগঠিত ও কার্যকরী বাহিনী হিসেবে গড়ে তোলা এবং সর্বোপরি স্বাধীন বাংলাদেশের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে অধিষ্ঠিত থেকে দেশ গঠনে অক্লান্ত পরিশ্রম ও অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ ২০১১ সালে তাকে স্বাধীনতা পুরস্কারে ভূষিত করা হয়।
তিনি আরও বলেন, বীর উত্তম এ কে খন্দকার নিঃসন্দেহে পেশাগত জীবনে অনন্য বৈশিষ্ট্যের অধিকারী এবং অনুসরণীয় পেশাদার বৈমানিক ছিলেন। বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর প্রথম প্রধান এই বীর মুক্তিযোদ্ধা অত্যন্ত সততা, নিষ্ঠা ও দক্ষতার সাথে অর্পিত দায়িত্ব ও কর্তব্য পালন করেছেন। ক্ষণজন্মা এই সাবেক বিমান বাহিনী প্রধানের অসামান্য অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ তার নামে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি ঘাঁটির নামকরণ করা হয়েছে।
শোকবার্তায় উপদেষ্টা মরহুম এ কে খন্দকারের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন এবং শোক সন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করেন।
বীর উত্তম এ কে খন্দকার আজ সকালে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন। তার বয়স হয়েছিল ৯৫ বছর ১১ মাস ২০ দিন। তিনি ২ ছেলে ১ মেয়ে এবং অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।