শিরোনাম

ঢাকা, ১৭ ডিসেম্বর, ২০২৫(বাসস) : মানুষকে বন্যপ্রাণী সম্পর্কে সচেতন করতে সরকার দেশব্যাপী এলাকা ভিত্তিক বন্যপ্রাণীর একটি তালিকা প্রণয়নের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সম্প্রতি পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বন্যপ্রাণী উপদেষ্টা বোর্ডের ৪১তম সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
এ লক্ষ্যে বন বিভাগ দেশব্যাপী এলাকা ভিত্তিক বন্যপ্রাণীর তালিকা প্রণয়নের প্রক্রিয়া শুরু করবে এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্ন মাধ্যমে বন্যপ্রাণী বিষয়ে জনসচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করবে।
২০১২ সালের বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইনের অধীনে গঠিত বন্যপ্রাণী অ্যাডভাইজরি বোর্ডটি একটি গুরুত্বপূর্ণ সংস্থা। এটি পুরোনো আইনসমূহের পরিবর্তে গঠিত হয় এবং বন্যপ্রাণী, জীববৈচিত্র্য ও বন সংরক্ষণ, উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা বিষয়ে দিকনির্দেশনা প্রদান করে। এ বোর্ডে সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রের বিশেষজ্ঞরা রয়েছেন; যারা নীতিমালা, সংরক্ষিত এলাকা এবং অবৈধ বাণিজ্য প্রতিরোধ বিষয়ে সরকারকে পরামর্শ দিয়ে থাকেন।
বাসস-এর কাছে থাকা একটি সরকারি নথি অনুযায়ী, বোর্ড দেশের বিভিন্ন হাটে পাখিসহ বন্যপ্রাণী বিক্রি বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণেরও সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, বন বিভাগ, জেলা প্রশাসন এবং অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বাজারে বা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ অন্য কোনো মাধ্যমে পাখিসহ কোনো বন্যপ্রাণী কেনা-বেচা যাতে না হয়, সে বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে। শীতকালে পরিযায়ী পাখি ও অন্যান্য পাখি শিকারে বন্দুক ব্যবহারের বিরুদ্ধে জনসচেতনতা বাড়াতে বন বিভাগ প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেবে।
এ বিষয়ে পাখির আবাসস্থলের তালিকা পাঠাতে এবং সচেতনতা বৃদ্ধিমূলক কার্যক্রম গ্রহণ করতে জেলা প্রশাসকদের অনুরোধ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এছাড়া লাইসেন্স নবায়নের সময় বন্দুকের লাইসেন্স ব্যবহার করে পাখি শিকার করা হচ্ছে কি না, তা বিবেচনায় নিতে জেলা প্রশাসকদের অনুরোধ করার সিদ্ধান্তও নেওয়া হয়েছে।
সভায় হাতির আক্রমণের বিষয়টিও গুরুত্বের সঙ্গে আলোচিত হয়। সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের সঙ্গে এর আগে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকের সিদ্ধান্তের আলোকে, হাতির সঙ্গে মানুষের সংঘাত নিরসনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বন বিভাগকে নির্দেশ দেওয়া হয়।
দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চল (চট্টগ্রাম) এবং উত্তরাঞ্চলের (শেরপুর, ময়মনসিংহ) এলাকায় মানুষ-হাতি সংঘাত একটি গুরুতর ও ক্রমবর্ধমান সমস্যা। আবাসস্থল ধ্বংস ও বনভূমি খণ্ডিত হওয়ার কারণে এ সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে, যার ফলে ফসল নষ্ট, সম্পত্তির ক্ষতি এবং বহু মানুষ ও হাতির মৃত্যু ঘটছে।