বাসস
  ১৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৩:২১

মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় সারাদেশে প্রথম  নরসিংদীর শান্ত

সারাদেশে প্রথম স্থান অর্জন করেছেন নরসিংদীর জাহাঙ্গীর আলম শান্ত।  ছবি : বাসস

নরসিংদী, ১৭ ডিসেম্বর, ২০২৫ (বাসস) : ২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষে সরকারি ও বেসরকারি মেডিকেল ও ডেন্টাল কলেজে ভর্তি পরীক্ষায় সারাদেশে প্রথম স্থান অর্জন করেছেন নরসিংদীর জাহাঙ্গীর আলম শান্ত। 

শান্ত নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান হিসেবে জীবনে অনেক ঘাত প্রতিঘাত সহ্য করতে হয়েছে।

রোববার (১৪ ডিসেম্বর) বিকেলে প্রকাশিত ফলাফলে ১ লাখ ২০ হাজার ৪৪০ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে সর্বোচ্চ নম্বর পেয়ে তিনি দেশসেরা হন। তিনি পড়াশোনা শেষ করে অসহায় মানুষদের সেবায় নিজেকে নিয়োজিত করতে চান।

জানা যায়, রাজধানীর শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ কেন্দ্র থেকে পরীক্ষায় অংশ নিয়ে শান্ত ৯১ দশমিক ২৫ নম্বর অর্জন করেন। এ বছর ভর্তি পরীক্ষায় পাসের হার ছিল ৬৬ দশমিক ৫৭ শতাংশ।

জাহাঙ্গীর আলম শান্ত জেলার বেলাবো উপজেলার নারায়ণপুর ইউনিয়নের খামারেরচর গ্রামের বাসিন্দা। তিনি তিন ভাই-বোনের মধ্যে বড়। তার বাবা মো. মিজানুর রহমান একজন মুদি ব্যবসায়ী এবং মা ফেরদৌসী বেগম গৃহিণী।

সাফল্যের অনুভূতি জানাতে গিয়ে শান্ত বলেন, ‘শুরুর দিকে মেডিকেলে পড়ার পরিকল্পনা ছিল না। প্রকৌশলী হওয়ার ইচ্ছা ছিল। পরে, মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষার প্রস্তুতি নিয়ে আত্মবিশ্বাস আসে। নিয়মিত পড়াশোনা ও অনলাইন কোচিংয়ের মাধ্যমে প্রস্তুতি নিই। প্রস্তুতির সময় ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হলেও চেষ্টা চালিয়ে যাই।’

তিনি আরও বলেন, ‘এই অর্জনের পেছনে মা-বাবার দোয়া, শিক্ষকদের সহযোগিতা এবং নিজের অধ্যবসায় সবচেয়ে বড় ভূমিকা রেখেছে। ভর্তি পরীক্ষায় ভালো করতে হলে দীর্ঘদিনের ধারাবাহিক পড়াশোনা প্রয়োজন।’

ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সম্পর্কে শান্ত জানান, মেডিকেল পড়াশোনা শেষে ক্যানসার বা অনকোলজি বিষয়ে বিশেষজ্ঞ হয়ে কাজ করতে চান।

তিনি বলেন, ‘চিকিৎসা পেশার মাধ্যমে সাধারণ মানুষের সরাসরি সেবা করা যায়। সমাজের পিছিয়ে পড়া ও অসহায় মানুষের জন্য কাজ করাই আমার লক্ষ্য।’

শান্তের বাবা মো. মিজানুর রহমান  বলেন, ‘ছোট একটি মুদি দোকানের আয় দিয়েই সন্তানদের পড়াশোনা করাচ্ছি। শান্ত ছোটবেলা থেকেই মেধাবী ও শান্ত স্বভাবের। সে যেন ভবিষ্যতে মানুষের সেবায় নিজেকে নিয়োজিত করে—এটাই আমাদের প্রত্যাশা।’
মা ফেরদৌসী বেগম বলেন, ‘শান্ত প্রাথমিক স্তরে বৃত্তি পেয়েছে। এসএসসি ও এইচএসসিতে গোল্ডেন জিপিএ-৫ অর্জন করেছে। তার কাছ থেকে আমরা সবসময় ভালো কিছুই প্রত্যাশা করি।’

শান্তর বেড়ে উঠা বারৈচা রেসিডেন্সিয়াল মডেল হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক মনিরুজ্জান জানান, শান্ত ২০২৩ সালে এই প্রতিষ্ঠান থেকে গোল্ডেন জিপিও ৫ পেয়ে এসএসসি উত্তীর্ন হয়েছে। এই প্রতিষ্ঠানের সাবেক শিক্ষার্থী মেডিকেলে দেশসেরা হয়েছে এটা স্কুলের জন্য গর্বের ও অহঙ্কারের। আমরা আশা করি সে সমাজে আলো ছাড়াবে।

শান্ত প্রাথমিক শিক্ষা সম্পন্ন করেন বারৈচা অক্সফোর্ড একাডেমী থেকে। তিনি ২০২৩ সালে বারৈচা রেসিডেন্সিয়াল মডেল হাই স্কুল থেকে গোল্ডেন জিপিএ-৫ পেয়ে এসএসসি এবং তেজগাঁও সরকারি বিজ্ঞান কলেজ থেকে গোল্ডেন জিপিএ-৫ পেয়ে এইচএসসিতে উত্তীর্ণ হন।