শিরোনাম

ঢাকা, ১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ (বাসস) : স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা-এর যৌথ উদ্যোগে আজ বাংলাদেশে অসংক্রামক রোগ, মানসিক স্বাস্থ্য এবং আঘাত প্রতিরোধে বহুখাতীয় কর্ম অগ্রগতি ত্বরান্বিত করতে জাতিসংঘ সংস্থাসমূহের সঙ্গে একটি উচ্চপর্যায়ের পরামর্শ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভায় জাতিসংঘ সংস্থার প্রতিনিধিরা সরকারের নেতৃত্বের প্রশংসা করেন এবং বাংলাদেশের জাতীয় বহুখাতীয় কর্মপরিকল্পনা এবং ‘যৌথ ঘোষণা’-এর সঙ্গে তাদের কর্মসূচি সামঞ্জস্যপূর্ণ করার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন।
বাংলাদেশ সচিবালয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের পুরাতন সম্মেলন কক্ষে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব মো. সাইদুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই সভায় সরকারি উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাবৃন্দ এবং জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থা যেমন- জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয় অফিস, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, ইউনিসেফ, ইউএনডিপি, ডব্লিউএফপি, ইউএনএফপিএ, এফএও, আইওএম, আইএলও, ইউএনওপিএস ও ইউএনআইডিও-এর প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
বর্তমানে বাংলাদেশে মোট মৃত্যুর ৭১ শতাংশ বা এর বেশি মৃত্যুর জন্য হৃদরোগ, ডায়াবেটিস, ক্যান্সার, দীর্ঘস্থায়ী শ্বাসতন্ত্রের রোগ এবং মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যাসহ অসংক্রামক রোগসমূহ দায়ী। যার মধ্যে অর্ধেকেরও বেশি অকালমৃত্যু। এ ক্রমবর্ধমান রোগ দেশের অর্থনৈতিক উৎপাদনশীলতা, পারিবারিক আর্থিক নিরাপত্তা এবং জাতীয় উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের ওপর উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলছে।
সভাপতির বক্তব্যে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব উল্লেখ করেন, পরিস্থিতির গুরুত্ব অনুধাবন করে, বাংলাদেশ সরকার ২০২৫ সালের আগস্ট মাসে ৩৫টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগের যৌথ অংশগ্রহণে একটি ‘যৌথ ঘোষণা’ স্বাক্ষর করে যা অসংক্রামক রোগ, মানসিক স্বাস্থ্য এবং আঘাত প্রতিরোধে একটি সমন্বিত পদ্ধতির ঐতিহাসিক মাইলফলক স্থাপন করে। এ ‘যৌথ ঘোষণা’ বাস্তবায়নের মাধ্যমে বাংলাদেশ একটি শক্তিশালী বহুখাতীয় ভিত্তি গড়ে তুলেছে, তবে এর সফল বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজন জাতিসংঘ সিস্টেমের মধ্যে সমন্বিত, সুসংগঠিত এবং সামঞ্জস্যপূর্ণ সহায়তা।
তিনি বলেন, ২০টিরও বেশি জাতিসংঘ সংস্থা খাদ্য ব্যবস্থা, শিক্ষা, নগরায়ণ, জলবায়ু সহনশীলতা, শ্রম, লিঙ্গ সমতা এবং সামাজিক সুরক্ষাসহ এমন বহু ক্ষেত্রে কাজ করছে যা সরাসরি বা পরোক্ষভাবে অসংক্রামক রোগের নির্ধারকদের সঙ্গে সম্পর্কিত। পুনরাবৃত্তি এড়াতে এবং সব মন্ত্রণালয়ে অভিন্ন বার্তা পৌঁছানো নিশ্চিত করতে অধিকতর সমন্বয় ও সামঞ্জস্য বাড়ানোর আহ্বান জানান তিনি।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বাংলাদেশ উপ-প্রতিনিধি ডা. রাজেশ নারওয়াল, সরকার ও জাতিসংঘের অংশীদারদের সহায়তায় সমন্বিত এবং বহুখাতীয় প্রতিক্রিয়া গড়ে তুলতে কারিগরি সহায়তা ও নীতিগত পরামর্শ প্রদানে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিশ্রুতি তুলে ধরেন। তিনি বলেন যে অসংক্রামক রোগ মোকাবিলায় সব নীতিতে স্বাস্থ্য নিশ্চিত করা প্রয়োজন, যা সব খাতের ধারাবাহিক ও সক্রিয় সম্পৃক্ততা দাবি করে।
আলোচনায় অংশগ্রহণকারীগণ সমন্বয় জোরদার করা, যৌথ কর্মসূচি শক্তিশালী করা এবং টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) ও সর্বজনীন স্বাস্থ্য সুরক্ষা (ইউনাইটেড হেল্থ কভারেজ)-সহ জাতীয় ও বৈশ্বিক লক্ষ্যসমূহের অর্জনকে ত্বরান্বিত করার বিষয়ে তাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখার আশাবাদ ব্যক্ত করেন।