বাসস
  ০৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ২১:৩৩

মাতুয়াইল স্যানিটারি ল্যান্ডফিলের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা চুক্তি স্বাক্ষর

ঢাকা, ৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ (বাসস) : ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) মাতুয়াইল স্যানিটারি ল্যান্ডফিলের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা আধুনিক ও পরিবেশবান্ধব করার জন্য ডিএসসিসি ও কোরিয়ান কোম্পানি বি এন্ড এফ কোম্পানি লিমিটেডের মধ্যে পাইলট প্রকল্প বাস্তবায়নের চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে।

আজ বৃহস্পতিবার নগর ভবন অডিটোরিয়ামে ডিএসসিসি প্রশাসক মো. মাহমুদুল হাসান চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।

‘সাসটেইনেবল ল্যান্ডফিল রিক্লেমেশন (এসএলআর) থ্রু ল্যান্ডফিল গ্যাস (এলএফজে) এক্সট্রাকশন এন্ড ৩ আর রিসোর্স সার্কুলেশন সেন্টার (আরসিসি) পাইলট প্রজেক্ট’ শীর্ষক চুক্তির এই পাইলট প্রকল্পের মেয়াদ পাঁচ বছর, যা ১০ বছর পর্যন্ত নবায়নযোগ্য। এই প্রকল্পের মাধ্যমে আগামী ১৫ বছরে পুনঃচক্রায়নের মাধ্যমে ডিএসসিসি এলাকায় দৈনিক সৃষ্ট বর্জ্য শূন্য-বর্জ্যে রূপান্তরিত করার পরিকল্পনা রয়েছে। কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা আইন ২০২১ এর আওতায় কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য এই প্রকল্পটি গ্রহণ করা হয়েছে।

২০২৪ সালের জুন মাসে বাংলাদেশ ও দক্ষিণ কোরিয়া সরকার ইন্টারন্যাশনালি ট্রান্সফ্রিড মিটিগেশন আউটকামস (আইটিএমও) এ স্বাক্ষরিত সমঝোতা স্মারকের ধারাবাহিকতায় দক্ষিণ কোরিয়া ভিত্তিক প্রতিষ্ঠান বি এন্ড এফ কোম্পানি লিমিটেড ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মধ্য মাতুয়াইল স্যানিটারি ল্যান্ডফিলে সমীক্ষা জরিপ পরিচালনার জন্য আরেকটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়।

এই সমীক্ষায় ল্যান্ডফিলে গ্যাস উত্তোলন ও রিসাইক্লিন প্লান্ট স্থাপনের উপর বিস্তারিত সম্ভাব্যতা যাচাই শেষে পাইলট প্রকল্প গ্রহণের জন্য বি এন্ড এফ কোম্পানি লিমিটেডের সঙ্গে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের আজ সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে। ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের পক্ষে প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. জহিরুল ইসলাম ও বি এন্ড এফ কোম্পানি লিমিটেডের পক্ষে পার্ক চং উয়ান চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন।

ডিএসসিসি চুক্তির আওতায় বি এন্ড এফ কোম্পানি লিমিটেডকে মাতুয়াইল স্যানিটারি ল্যান্ডফিলে চার একর জমি প্রকল্প সময়ের জন্য লিজ হিসেবে প্রদান করবে। এছাড়াও প্রতিদিন গড়ে ৩০০ মেট্রিক টন কঠিন বর্জ্য বি এন্ড এফ কোম্পানি লিমিটেডকে ব্যবস্থাপনার জন্য দেয়া হবে। প্রকল্প সম্পর্কিত সকল ব্যয় বি এন্ড এফ কোম্পানি লিমিটেড কর্তৃক বহন করা হবে। প্রকল্পে ডিএসসিসির কোনো আর্থিক সংশ্লেষ নেই। তবে, প্রকল্প হতে যখনই আয় শুরু হবে, সেই আয়ের ২০ শতাংশ ডিএসসিসি প্রাপ্ত হবে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা করে জৈব সার, বায়োগ্যাস, আরডিএফ, বায়ো ফুয়েল, সিমেন্টের কাঁচামাল ও অন্যান্য ব্যবহারযোগ্য পণ্য তৈরি করা হবে।

পরিবেশবান্ধব এই প্রকল্পটি মেয়াদ শেষে বিল্ড-ওন-অপারেট এন্ড ট্রান্সফার (বিওওটি) মডেল অনুসরণ করে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের কাছে হস্তান্তরিত হবে।

চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ডিএসসিসি প্রশাসক বলেন, ‘ডিএসসিসির প্রযুক্তিনির্ভর ও পরিবেশবান্ধব বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় এই চুক্তিটি একটি মাইলফলক। এর ফলে একদিকে যেমন পরিবেশ ও প্রতিবেশের উপর বর্জ্য দূষণজনিত ঝুঁকি হ্রাস পাবে, তেমনি বর্জ্যকে সম্পদ হিসেবে ব্যবহার করা সম্ভব হবে।’ 

চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠান ডিএসসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. জহিরুল ইসলাম, সচিব মোহাম্মদ নাছিম আহমেদ, প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা এয়ার কমোডর মো. মাহাবুবুর রহমানসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।