শিরোনাম

আবদুস সালাম আজাদ জুয়েল
চাঁদপুর, ৩ ডিসেম্বর ২০২৫ (বাসস): ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন যতই ঘনিয়ে আসছে মাঠে ততই সক্রিয় হয়ে উঠছেন প্রার্থীরা। গত নভেম্বর মাস থেকেই চাঁদপুরের পাঁচটি আসনের নির্বাচনী এলাকায় ভোটার ও সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছার চেষ্টা করছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি), জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ ও ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থীরা। অন্য দলের সম্ভাব্য প্রার্থী থাকলেও তাদের গণসংযোগ চোখে পড়ার মত নয়।
চাঁদপুর-১ (কচুয়া) আসনে বিএনপি থেকে কয়েকজন মনোনয়ন প্রত্যাশী থাকলেও মাঠে রয়েছেন সাবেক প্রতিমন্ত্রী আ ন ম এহসানুল হক মিলন। তিনি ঢাকায় থাকলেও এখন নিয়মিত কচুয়ায় যাতায়াত করছেন।
একই আসনে জামায়াত মনোনীত প্রার্থী মুহাদ্দিস আবু নছর আসরাফী নিজ এলাকায় থাকেন। তিনি নিজেই প্রতিদিন দাঁড়িপাল্লার পক্ষে জনসমর্থন বৃদ্ধি এবং তার বক্তব্য সাধারণ ভোটারদের আকৃষ্ট করছে। তিনি ফ্যাসিবাদ ও চাঁদাবাজ বিরোধী বক্তব্য দিয়ে এলাকায় আলোড়ন সৃষ্টি করেছেন।
চাঁদপুর-২ (মতলব উত্তর ও মতলব দক্ষিণ) আসনে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন বেশ কয়েকজন। এর মধ্যে ড. জালাল উদ্দিনকে সম্ভাব্য প্রার্থী ঘোষণা করা হলেও এখনও প্রার্থীতা চূড়ান্ত হয়নি। এই পরিস্থিতিতে নীরবে গণসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন জামায়াত মনোনীত প্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. আব্দুল মোবিন। প্রবীণ এই নেতা ন্যায়, ইনসাফ ও কল্যাণ রাষ্ট্র গঠনের জন্য সাধারণ মানুষকে আহ্বান জানাচ্ছেন।
চাঁদপুর-৩ (সদর-হাইমচর) আসনে জেলা বিএনপির সভাপতি শেখ ফরিদ আহমেদ মানিক ব্যাপক গণসংযোগ করছেন। হাইমচর ও সদর উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে ভোটারদের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা ও সমস্যার সমাধান করবেন এমন আশ্বাস দিয়ে তাকে নির্বাচিত করার আহ্বান জানাচ্ছেন।
এই আসনে জামায়াত মনোনীত প্রার্থী জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট মো. শাহজাহান মিয়া।
সদর উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবে তিনি সাধারণ ভোটারদের কাছে পরিচিত মুখ।
ভোটারদের কাছে তিনি নতুন বাংলাদেশ গঠনে দাঁড়িপাল্লা প্রতিকের গুরুত্ব তুলে ধরছেন।
ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী শেখ মো. জয়নাল আবেদিনও এই আসনে সক্রিয়ভাবে প্রচারণা চালাচ্ছেন। এই আসনে ইসলামি ফ্রন্ট বাংলাদেশের প্রার্থী সাংবাদিক এ এইস এম আহসান উল্ল্যাহ আগেভাগেই গণসংযোগে নেমেছেন।
চাঁদপুর-৪ (ফরিদগঞ্জ) আসনে বিএনপি থেকে মনোনয়ন পেয়েছেন সাবেক এমপি মো. হারুনুর রশিদ। তবে এই আসনে গণসংযোগে এগিয়ে আছেন জামায়াত মনোনীত প্রার্থী জেলা জামায়াতের আমির মাওলানা বিল্লাল হোসেন মিয়াজী। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত উপজেলার প্রত্যেক পাড়া মহল্লায় তার গণসংযোগ অব্যাহত রয়েছে।
তিনি দুর্নীতি, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজ ও দখলবাজদের বিরুদ্ধে বক্তব্য দিয়ে সাধারণ মানুষকে আকৃষ্ট করছেন।
চাঁদপুর-৫ (শাহরাস্তি-হাজীগঞ্জ) আসনে বিএনপি থেকে মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি প্রকৌশলী মমিনুল হক। তিনি এলাকায় গণসংযোগ শুরু করেছেন।
এই আসনে জামায়াত মনোনীত প্রার্থী শাহরাস্তি উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবুল হোসাইন মাঠে সক্রিয়। নেতাকর্মীদের নিয়ে তিনি নিয়মিত গণসংযোগ করছেন।
এছাড়া এনসিপি থেকে পাঁচটি আসনের বেশ কয়েকজন দলের মনোনয়ন পত্র সংগ্রহ করলেও মাঠে তাদের উপস্থিতি নেই। সদর আসনে গণঅধিকার পরিষদ, গণফোরাম ও ইসলামী ফ্রন্ট মনোনীত প্রার্থীরা গণসংযোগ শুরু করেছেন।
চাঁদপুর জেলা জামায়াতের প্রচার সম্পাদক অ্যাডভোকেট মো. শাহজাহান মিয়া বলেন, জামায়াত মনোনীত প্রার্থীদের পরিবর্তন কিংবা অন্য ইসলামী দলের সাথে সমঝোতার বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোনো নির্দেশনা আসেনি। সংগঠনের পক্ষ থেকে কোনো সিদ্ধান্ত আসলে তা মেনে নিতে কোনো দ্বিমত থাকবে না।
চাঁদপুর জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সলিম উল্লাহ সেলিম বলেন, জেলার পাঁচটি আসনে যাদের সম্ভাব্য প্রার্থী ঘোষণা করা হয়েছে, তারাই মূলত চূড়ান্ত প্রার্থী।
বর্তমান পরিস্থিতিতে প্রার্থী পরিবর্তন করা কঠিন বিষয়। তারপরেও দলের উচ্চ পর্যায়ের নেতাদের সিদ্ধান্তে পরিবর্তন হতেও পারে। তবে ধানের শিষের বিজয় নিশ্চিত করতে দলের সব নেতাকর্মী ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টা চালিয়ে যাবে।
২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে। এই নির্বাচনকে সামনে রেখেই সারাদেশে নির্বাচনী প্রচারণা জমে উঠতে শুরু করেছে।