বাসস
  ০৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৮:১৩

ফেনী হর্টিকালচার সেন্টারে পরীক্ষামূলকভাবে গোলমরিচ চাষ শুরু 

ছবি : বাসস

মোহাম্মদ শাহাদাত হোসেন 

ফেনী, ৩ ডিসেম্বর ২০২৫ (বাসস): পরীক্ষামূলকভাবে গোলমরিচ চাষের উদ্যোগ নিয়েছে ফেনী হর্টিকালচার সেন্টার। এ উদ্যোগ সফল হলে গোলমরিচের পাশাপাশি গোলমরিচের চারা উৎপাদন ও বাণিজ্যিকভাবে গোলমরিচ চাষে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করবে হর্টিকালচার সেন্টার কর্তৃপক্ষ।

সরেজমিনে ফেনী হর্টিকালচার সেন্টারে গিয়ে দেখা যায়, প্লাস্টিকের নেটের সঙ্গে সারি সারি প্যাঁচানো লতা। 

দেখলে মনে হয় পানের পাতা। আসলে তা গোলমরিচের গাছের লতা ও পাতা। জেলার পাঁচগাছিয়া ইউনিয়নের হর্টিকালচার সেন্টারের বাগানে গোলমরিচের গাছ দেখতে এখন অনেকেই ভিড় করছেন। 

হর্টিকালচার সেন্টারের উপপরিচালক কৃষিবিদ নয়ন মনি সূত্র ধর বাসসকে জানান, ফেনীর এ সেন্টারটিতে চলতি বছরের অক্টোবর মাসে ৬টি গোলমরিচের মাতৃগাছ রোপণ করা হয়। গাছগুলো রক্ষাণাবেক্ষণ করছে কর্তৃপক্ষ। দ্রুত সময়ে বড় হচ্ছে গাছগুলো। সরাসরি সূর্যের আলো, রোদ, বাতাস এবং শক্তিশালী উর্বর মাটি পেলে এ গাছ দ্রুত বেড়ে উঠতে পারে। 

তিনি বলেন, ‘এই হর্টিকালচার সেন্টার গোলমরিচ চাষে সফল হলে আগামীতে এ ধরনের মশলা জাতীয় মূল্যবান গাছ ও চারা উৎপাদনের উদ্যোগ নেওয়া হবে। কৃষি উদ্যোক্তাদেরও গোলমরিচ চাষে উদ্বুদ্ধ করা হবে।  

তিনি জানান, দেশের বিভিন্ন হর্টিকালচার সেন্টারে এখন বহু মশলা জাতীয় পণ্যের গাছ বিদেশ থেকে আমদানি করা হয়েছে। বেশ কয়েকটি মশলা চাষে সফলতাও এসেছে। ফেনী হর্টিকালচার সেন্টারে যে ৬টি গোলমরিচ গাছ লাগানো হয়েছে সেগুলো আগামী ফাল্গুন মাসে ফুল ও পর্যায়ক্রমে মরিচে পরিণত হবে। এতে সফল হলে আস্তে আস্তে গোলমরিচ চাষ ও বাগান বৃদ্ধি করা হবে। 

হর্টিকালচার সেন্টারের উপসহকারী উদ্যান কর্মকর্তা মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন জানান, ফেনীতে প্রথমবারের মতো পরীক্ষামূলক গোলমরিচ চাষের প্রদর্শনী করা হয়েছে। গোলমরিচের লতাগুলো যে কোনো গাছের সঙ্গে পেঁচিয়ে দিলেই গাছটি বড় হয়ে বেড়ে উঠে। 

উপসহকারী উদ্যান কর্মকর্তা জয়নাল আবেদীন বলেন, হর্টিকালচার সেন্টারের এই বাগানে পরীক্ষামূলকভাবে  গোলমরিচ চাষ শুরু  হয়েছে। অল্প খরচে এ মশলা চাষ করা সম্ভব। এই বাগানের মাটি গোলমরিচ চাষের উপযোগী। খালি জায়গায় সেড দিয়ে গোলমরিচের গাছ লাগানো হয়েছে। 

উপপরিচালক নয়ন মনি সূত্র ধর বলেন, মাটির গুণগত মান যত ভালো হবে, গাছও তত বেশি শক্তিশালী ও বড় হয়ে উঠবে। অল্প পুঁজি দিয়ে যে কোনো কৃষি উদ্যোক্তা সহজে এ চাষে এগিয়ে আসতে পারেন। দেশে এ খাতে উৎপাদন বাড়লে বিদেশ থেকে মশলা জাতীয় পণ্য আমদানিও কমে আসবে।

কৃষি বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, গোলমরিচ একটি মসলা জাতীয় অর্থকরী ফসল। আমাদের দেশে রান্না এবং বিভিন্ন ভেষজ ওষুধের সাথে গোলমরিচ ব্যবহার করা হয়।

এটি লতা জাতীয় উদ্ভিদ। পান গাছ, ওদাল, বেত ইত্যাদির মত গোলমরিচ এক পরাশ্রয়ী গাছ। এজন্য গোলমরিচের অন্য গাছের আশ্রয় প্রয়োজন হয়। আম, সুপারি, কাঁঠাল, মান্দার, তেঁতুল, নারিকেল, তাল, সিলভার, অক, টিক, খেজুর ইত্যাদি গাছ গোলমরিচের আশ্রয়ী হিসেবে ব্যবহার করা হয়। এছাড়া অমসৃণ ছাল থাকা গাছ গোলমরিচ গাছ ওঠার জন্য সুবিধাজনক।