শিরোনাম

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, ২ ডিসেম্বর, ২০২৫ (বাসস) : চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) ক্যাম্পাসের ভেতর লিজকৃত জমিতে দীর্ঘদিন ধরে মদ উৎপাদন ও বন্যপ্রাণী শিকারচক্র সক্রিয় ছিল, এমন তথ্য উদঘাটন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টরিয়াল বডি।
সোমবার গভীর রাতে অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ বাংলা মদ ও বন্যপ্রাণী শিকারের অস্ত্রসহ সুমন চাকমা নামের এক ব্যক্তিকে আটক করা হয়েছে।
জানা যায়, সুমন চাকমা প্রায় ১৫ বছর ধরে জীববিজ্ঞান অনুষদের পেছনে লিজ নেওয়া জমিতে বসবাস ও চাষাবাদ করলেও তার প্রকৃত কর্মকাণ্ড ছিল সম্পূর্ণ ভিন্ন।
গোয়ালঘরের পেছনে লম্বা বারান্দা জুড়ে গোপন মদ তৈরির কারখানা গড়ে তোলেন তিনি।
অভিযোগ রয়েছে, তিনি শুধু মদই তৈরি করতেন না, দেশীয় তৈরি অস্ত্র দিয়ে আশপাশের জঙ্গল থেকে বন্য শুকর, হরিণ ও বন্য মুরগি শিকার করে মাংস বিক্রি করতেন।
সহকারী প্রক্টর নুরুল হামিদ কানন জানান, বায়োলজিক্যাল সায়েন্স ফ্যাকাল্টি এলাকার পুকুরপাড়ে কিছু বহিরাগত ও কয়েকজন শিক্ষার্থীর অস্বাভাবিক উপস্থিতি নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের সন্দেহে ফেলে। কয়েকদফা নজরদারি শেষে সোমবার রাত ১২টা ২০ মিনিটে অভিযান পরিচালনা করা হয়।
অভিযানে সুমনের ঘর থেকে প্রায় ৩০ লিটার সদ্য প্রস্তুত বাংলা মদ, ৫ লিটার ডেকচি, ডেলিভারির জন্য প্রস্তুত বোতল, মদ তৈরির সরঞ্জাম, মদ বিক্রির খাতা ও বন্যপ্রাণী শিকারের দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করা হয়। অভিযানের সময় সুমন চাকমার সঙ্গে থাকা এক নারীকে আটক করা হলেও জিজ্ঞাসাবাদের পর তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়। তিনি সুমনের স্ত্রী নন বলেও জানান।
বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী নিয়মিত এই অবৈধ ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন বলে অভিযোগ উঠেছে। সন্দেহজনক কয়েক শিক্ষার্থীকে নজরদারিতে রাখা হয়েছে বলেও জানায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
সহকারী প্রক্টর নুরুল হামিদ কানন বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের লিজকৃত জমিতে অবৈধভাবে এই ব্যবসা চালানোর ঘটনায় লিজ বাতিলের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। অনুমতিহীনভাবে গাছ কাটার অভিযোগে লিজগ্রহীতা ব্যক্তিকে আর্থিক জরিমানা করা হবে।
অভিযানের সময় বিশ্ববিদ্যালয় পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ আবু হেনা মোস্তফা কামালের নেতৃত্বে পুলিশ দল সহায়তা করে। পরে থানা পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে আলামত সংগ্রহ করে। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন, বন্যপ্রাণী হত্যা এবং অসামাজিক কার্যকলাপে জড়িত থাকার অভিযোগে তার বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে।