শিরোনাম

ঢাকা, ২০ নভেম্বর, ২০২৫ (বাসস) : ‘আন্তর্জাতিক প্রতারণা সচেতনতা সপ্তাহ’ উপলক্ষে ভিসা জালিয়াতি প্রতিরোধে সমন্বিত প্রচারণা শুরু করেছে অস্ট্রেলিয়া ও তার বৈশ্বিক অংশীদাররা। বিশ্বব্যাপী ভিসা আবেদনকারীদের লক্ষ্য করে বাড়তে থাকা প্রতারণামূলক অভিবাসন কার্যক্রমের উদ্বেগ তুলে ধরতে এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
ঢাকায় অস্ট্রেলিয়ান হাইকমিশন জানিয়েছে, ১৬-২২ নভেম্বর সপ্তাহব্যাপী এ কর্মসূচিতে তারা তাদের আন্তর্জাতিক অংশীদারদের সঙ্গে কাজ করছে। এর লক্ষ্য হলো- ভুয়া ভিসার নিশ্চয়তা, জাল নথি ও অবৈধ অভিবাসন এজেন্টদের বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি করা-যেসব প্রতারণা আর্থিক ক্ষতি, মানসিক চাপ এবং দীর্ঘমেয়াদি ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
হাইকমিশন জানায়, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, নিউজিল্যান্ড, যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রের মন্ত্রীরা গত সেপ্টেম্বরের ফাইভ কান্ট্রি মিনিস্টেরিয়াল (এফসিএম) বৈঠকে অভিবাসন ও সীমান্ত ব্যবস্থাপনা সুরক্ষায় তাদের যৌথ প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছেন।
সেই প্রতিশ্রুতির অংশ হিসেবে এ সপ্তাহে ‘ভিসা জালিয়াতির বিরুদ্ধে লড়াই’ নামে চার দেশের উদ্যোগ চালু করা হয়েছে, যা অভিবাসীদের সুরক্ষা ও সীমান্তের অখণ্ডতা জোরদার করবে। যদিও যুক্তরাষ্ট্র এ বছরের উদ্বোধনে অংশ নিচ্ছে না, তবে তারা উদ্যোগটির প্রতি সমর্থন জানিয়েছে।
প্রচারণাটি এফসিএম অংশীদারদের যৌথ সংকল্পেরই প্রতিফলন, যা ভিসা জালিয়াতি প্রতিরোধ ও জনসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে পরিচালিত হচ্ছে। আন্তর্জাতিক প্রতারণা সচেতনতা সপ্তাহ সরকার, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও সামাজিক সংগঠনগুলোকে শিক্ষামূলক কার্যক্রম ও প্রতিরোধমূলক বার্তার মাধ্যমে প্রতারণার প্রভাব কমাতে একসঙ্গে কাজ করতে উৎসাহিত করে।
হাইকমিশনের মতে, সমন্বিত প্রচারণার বার্তাগুলো ভিসা আবেদনকারীদের প্রতারকদের কৌশল সম্পর্কে সচেতন করবে, বৈশ্বিক ভিসা জালিয়াতি কমাবে এবং অভিবাসন সেবার ক্ষেত্রে নিরাপদ আচরণকে উৎসাহিত করবে।
স্থানীয় চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা এবং আচরণগত পরিবর্তনকে উৎসাহিত করার জন্য এই প্রচারণা ২০২৬ সাল পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে।
হাই কমিশন সতর্ক করে বলেছে, জালিয়াতিকারীরা প্রায় সময়ই বৈধ পেশাদার হিসেবে নিজেদের পরিচয় দিয়ে কাজ করে। তাই জনসাধারণকে ঝুঁকি সম্পর্কে সচেতনতা ছড়িয়ে দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।
ভিসা আবেদনকারীদের ভিসা জালিয়াতি শনাক্ত এবং রিপোর্ট করার পদ্ধতি শিখতে homeaffairs.gov.au/visascams ওয়েবসাইটটিতে প্রবেশের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। অস্ট্রেলিয়া সরকার কখনো সোশ্যাল মিডিয়া বা অনানুষ্ঠানিক প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে অর্থ চায় না বলেও জানানো হয়।
বাংলাদেশে নিযুক্ত অস্ট্রেলিয়ার ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনার ক্লিনটন পপকে বলেন, ‘ ভিসা জালিয়াতকারীরা প্রকৃত আগ্রহী ব্যক্তিদের ঠকায়, যারা অস্ট্রেলিয়ায় ভ্রমণ করতে বা পড়াশোনা করতে চায়। অনলাইন এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচুর ভুয়া ভিসা তথ্য রয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘ঢাকায় নতুন হোম অ্যাফেয়ার্স অফিস স্থাপনের মাধ্যমে আমরা ভিসা আবেদনকারীদের সঞ্চয় হারানো থেকে রক্ষা করতে এবং অস্ট্রেলিয়ার অভিবাসন ব্যবস্থার অখণ্ডতা বজায় রাখতে কাজ করছি।’
পপকে যোগ করেন, ‘অস্ট্রেলিয়া ভিসা জালিয়াতি প্রতিরোধে আন্তর্জাতিক অংশীদারদের সঙ্গে দাঁড়াতে পেরে গর্বিত। ‘আন্তর্জাতিক প্রতারণা সচেতনতা’ প্রচারণার স্পষ্ট বার্তা হচ্ছে- আপনি ভিসার জন্য আবেদন করলে সর্বদা বিশ্বস্ত ও সরকারি সূত্র ব্যবহার করুন এবং শর্টকাট বা নিশ্চয়তার প্রতিশ্রুতি দেওয়া কাউকে সতর্কভাবে এড়িয়ে চলুন।’