বাসস
  ১৮ নভেম্বর ২০২৫, ২১:০৩

তৃণমূলের সাংবাদিকদের দক্ষতা বৃদ্ধিমূলক প্রশিক্ষণ তাদের প্রতি আমাদের দায়িত্ববোধের প্রতিফলন : ইসি সানাউল্লাহ

নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ। ফাইল ছবি

ঢাকা, ১৮ নভেম্বর, ২০২৫ (বাসস) : নির্বাচন কমিশনার (ইসি) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ বলেছেন, নানা সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও প্রতিকূলতাকে জয় করে কাজ করে যাওয়া তৃণমূল পর্যায়ের সাংবাদিকদের দক্ষতা বৃদ্ধি করতে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ ও শিক্ষার ব্যবস্থা করাকে নির্বাচন কমিশন তার মহৎ দায়িত্ব বলে মনে করে।

তিনি বলেন, ‘তৃণমূল স্তরে কাজ করা অনেক সাংবাদিককে দেখার পর, আমি বুঝতে পেরেছি যে সাংবাদিকতার উপর তাদের আরও প্রশিক্ষণ এবং শিক্ষার প্রয়োজন। তা কিন্তু তাদের নানান সীমাবদ্ধতা রয়েছে-সে কারণে নয়, তারা তো সত্যিই তাদের যথাসাধ্য চেষ্টা করছেন। এর পেছনে সবচেয়ে বড় কারণ হচ্ছে তাদের প্রতি আমাদেরও একটা দায়িত্ব রয়েছে।’

আজ দুপুরে রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে ‘অ্যাডভান্সিং মিডিয়া ক্যাপাসিটি অ্যান্ড ইনফরমেশন ইন্টেগ্রিটি’ প্রকল্পের আওতায় একটি চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে তিনি আজ এ কথা বলেন।

শহরে যারা সাংবাদিকতা করেন তাদের আধুনিক সুযোগ সুবিধার তুলনায় তৃণমূল পর্যায়ের সাংবাদিকদের নানা সীমাবদ্ধতা ও চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার বিষয়টি তুলে ধরে তিনি বলেন, আপনারা সবসময় হয়তোবা একটা স্ব-আরোপিত ন্যূনতম মানদণ্ড নিজেদের উপর ধারণ করেন। তবে মাঠ পর্যায়ে কতটুকু এটা প্রতিফলিত হয়, তা ভাববার বিষয়।

ইসি সানাউল্লাহ আরও বলেন, আমি মনে করি আজ এই চুক্তি স্বাক্ষরের যে মহৎ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, তা অবশ্যই একটি অত্যন্ত ইতিবাচক ফলাফল বয়ে আনবে। শহরের বাইরে যারা তৃণমূল পর্যায়ে সাংবাদিকতা করেন-তাদের এ ধরনের আধুনিক ও সময়োপযোগী সাংবাদিকতার শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের খুবই প্রয়োজন রয়েছে। কারণ তারাও আমাদের কাছে অন্যান্য সকলের মতই সমানভাবে গুরুত্বপূর্ণ।

ত্রয়োদশ জাতীয় নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এবারের নির্বাচন অতীতের যেকোনো নির্বাচনের চেয়ে একেবারেই আলাদা এবং তা কেন, সেই প্রেক্ষাপট আমরা সবাই জানি।

এটি দেশের ইতিহাসের একটি নিরূপক নির্বাচন। এ ব্যাপারে আমি নিশ্চিত যে, এই নির্বাচনকে স্বচ্ছ হতে হবে এবং তা-ই হবে। স্বচ্ছতার মানে হচ্ছে- যেখানে লুকানোর কিছু নেই। আমাদের সকলেরই সত্য প্রচার বা প্রকাশ করায় দায়িত্বশীল একটি ভূমিকা রয়েছে। সত্য প্রচার বলতে তা কেবল সত্যকেই বোঝাচ্ছে, অর্ধসত্যকে নয়।

তিনি আরও বলেন, নির্বাচন সম্পর্কিত সাংবাদিকতার মান উন্নত করার সুযোগ থাকলে আমরা আপনাদেরকে সমস্ত সহায়তা প্রদানের আশ্বাস দিচ্ছি। এটি নির্বাচন কমিশনের প্রতিশ্রুতি। এটি দেশ ও জাতির জন্য একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত। আজ আমরা সকলেই একটি অত্যন্ত মহৎ ও ভালো উদ্যোগের অংশ হতে পেরেছি।

এই মহৎ উদ্যোগের জন্য ইউএনডিপি, এমআরডিআই এবং আরএফইডিকে অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, ব্যক্তিগতভাবে আমি মনে করি নির্বাচনের জন্য বা এই ধরনের সকল উদ্যোগের পেছনে যে অর্থ এবং সময় ব্যয় করা হয় তা আসলে ব্যয় নয়, ভবিষ্যতে ভালো কিছু পাওয়ার জন্য করা একটি মহৎ বিনিয়োগ।

উল্লেখ্য, ইসি বিটের সাংবাদিকদের পেশাগত দক্ষতা উন্নয়নে এবং গণমাধ্যমের তথ্য-অখণ্ডতা ও নির্বাচনী সংবাদ পরিবেশনের মানোন্নয়নে আজ দুপুরে যৌথভাবে প্রশিক্ষণ কর্মসূচি পরিচালনার জন্য সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করেছে রিপোর্টার্স ফোরাম ফর ইলেকশন অ্যান্ড ডেমোক্রেসি (আরএফইডি) এবং মিডিয়া রিসোর্সেস ডেভেলপমেন্ট ইনিশিয়েটিভ (এমআরডিআই)।

জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচির (ইউএনডিপি) সহায়তায় এই উদ্যোগকে নির্বাচন সংক্রান্ত সাংবাদিকতায় নতুন দিগন্ত হিসেবে দেখা হচ্ছে।

আরএফইডির সভাপতি কাজী এমাদউদ্দীন জেবেল এবং এমআরডিআইয়ের নির্বাহী পরিচালক হাসিবুর রহমান মুকু সমঝোতা স্মারকে স্বাক্ষর করেন। 

এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ, ইউএনডিপি বাংলাদেশের টেকনিক্যাল অ্যাডভাইজার আন্দ্রেস ডেল ক্যাস্তিলো সানচেজ, আরএফইডির সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানীসহ আরও অনেকে।