শিরোনাম

\ বিপুল ইসলাম \
লালমনিরহাট, ১৮ নভেম্বর, ২০২৫ (বাসস) : শীতের তীব্রতা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে লালমনিরহাটে লেপ, তোশক, জাজিম ও কম্বলের চাহিদা বেড়েছে। এসব তৈরিতে শহরের কারিগররা ব্যস্ত সময় পার করছেন।
আজ মঙ্গলবার সরেজমিনে জেলা শহরের বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ক্রেতারা বিভিন্ন ধরনের তুলা ও কাপড় বেছে নিচ্ছেন, আর দোকানিরা অর্ডার নিচ্ছেন। শহরের ১৪ থেকে ১৫টি লেপ-তোশক কারখানায় সকাল থেকে রাত পর্যন্ত কাজ চলছে।
ব্যবসায়ীরা জানান, সব ধরনের পণ্যের দাম বাড়ায় লেপ-তোশক তৈরির উপকরণের খরচও বৃদ্ধি পেয়েছে। এ মৌসুমে লেপ তৈরির প্রতি গজ কাপড়ের দাম ৫০ থেকে ৬০ টাকা, তোশকের কাপড় ৪৫ থেকে ৫০ টাকা এবং জাজিম ১২০ থেকে ১৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রকারভেদে গার্মেন্টস তুলা কেজিপ্রতি ৫০ থেকে ১০০ টাকা, ফোম তুলা ২০০ টাকা এবং শিমুল তুলা ৩০০ থেকে ৫০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। জুটের দাম কেজিপ্রতি ৩৫ থেকে ৪০ টাকা। তুলার দাম এবার প্রায় সব প্রকারে ২০ থেকে ১০০ টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে।
তারা জানান, বর্তমানে রেডিমেড লেপ বিক্রি হচ্ছে ৯০০ থেকে ২ হাজার টাকায়, তোশক ৮০০ থেকে ১ হাজার ৭০০ টাকা, জাজিম ২ হাজার ৫০০ থেকে ৪ চার হাজার টাকা এবং বালিশ ১০০ থেকে ২০০ টাকায়।
জেলা শহরের মোগলহাট রেলগেট এলাকার মেসার্স জামাল ক্লাথ স্টলের প্রবীণ কারিগর মো. আমিন (৬৫) ও সাত্তার আলি (৬৮) জানান, শীতের তীব্রতা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কাজের চাপও বেড়ে গেছে।
তারা বলেন, সকাল থেকে রাত পর্যন্ত কাজ করলেও মহাজনের চাহিদা মেটানো কঠিন হয়ে গেছে। এবারে গভীর রাত পর্যন্ত কাজ করতে হচ্ছে।
এছাড়া বড়বাড়ী বাজারের লেপ-তোশক কারিগররা জানান, প্রতিবছরের মতো এবারও শীতের আগে ব্যস্ততা বেড়েছে।
২২ বছর বয়সী শরিফুল ইসলাম ও ৩৫ বছর বয়সী মাসুদ বলেন, সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত লেপ-তোশক তৈরিতে সময় কাটে। একটি লেপ বানিয়ে আকারভেদে ২০০ থেকে ২৫০ টাকা এবং একটি তোশক তৈরি করলে ১৫০ থেকে ৩০০ টাকা মজুরি পাওয়া যায়।
ক্রেতা আকবর (৫৪) বলেন, দোকানে গিয়ে আমি দুটি লেপ অর্ডার দিয়েছি, যার খরচ হয়েছে ৪ হাজার ৪০০ টাকা। রাতে শীতের তীব্রতা বেড়ে যায়, কাঁথা দিয়ে শীত নিবারণ হয় না। তাই অল্প খরচে লেপ বানাচ্ছি।
প্রবীণ কারিগর আমজাদ হোসেন (৬০) বলেন, বছরের বেশির ভাগ সময় আমাদের বসে থাকতে হয়, কিন্তু শীতের তিন মাসে ব্যস্ততা বেড়ে যায়। এবারে মৌসুম আগেভাগে এসেছে। প্রতিদিন গড়ে একজন কারিগর ৪ থেকে ৫টি লেপ বানাতে পারে, যার মাধ্যমে ৫০০ থেকে ৬৯৯ টাকা আয় হয়। তবে এই আয় দিয়ে চলতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।