শিরোনাম

খুলনা, ৬ নভেম্বর ২০২৫ (বাসস): জেলার দাকোপ উপজেলার পানখালী ইউনিয়নের মৌখালী গ্রামে ঝপঝপিয়া নদীর ভয়াবহ ভাঙন দেখা দিয়েছে। এতে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে ৬টি গ্রামের প্রায় ২০ হাজার মানুষ। এ পরিস্থিতিতে বড় কোনো দুর্যোগের আগেই ঝুঁকিপূর্ণ এ বাঁধ দ্রুত সংস্কারে খুলনা পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
স্থানীয় বাসিন্দাদের সাথে কথা বলে জানা যায়, দাকোপ উপজেলাধীন পাউবোর ৩১ নং পোল্ডারের পানখালী ইউনিয়নের মৌখালী গ্রামে গত দুইদিন ধরে গাজী বাড়ির সামনে ২০০ মিটার বেড়িবাঁধে ভয়াবহ ফাঁটল দেখা দিয়েছে। সেখান থেকে ইতোমধ্যেই এক তৃতীয়াংশ বাঁধ ঝপঝপিয়া নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। এ ভাঙনকে কেন্দ্র করে ইউনিয়নের মৌখালী, পানখালী, লক্ষ্মীখোলা, খাটাইল, কাটাবুনিয়া ও হোগলাবুনিয়া গ্রামের প্রায় ২ হাজার পরিবারের ২০ হাজার মানুষ আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়েছে।
এছাড়াও উপজেলার ভদ্রা, আন্ধারমানিক, পশুর, ঢাকী ও শিবসা নদীর পানি ৩ থেকে ৪ ফুট বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে পাউবোর ৩১নং পোল্ডারের পানখালী ইউনিয়নের লক্ষ্মীখোলা, পানখালী জাবেরের খেয়াঘাটের পশ্চিম পাড়, খোনা, তিলডাঙ্গা ইউনিয়নের ঝলবুনিয়া, মোজাম নগর, আন্ধার মানিক, চালনা পৌরসভার খলিশা নামক স্থানে নতুন করে নদী ভাঙন ও ফাঁটল শুরু হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত স্থানগুলো দ্রুত সংস্কার করা না হলে যে কোনো মুহূর্তে ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধের একটি অংশ নদীগর্ভে বিলীন হয়ে প্লাবিত হবে গ্রামের পর গ্রাম।
স্থানীয় মুদি ব্যবসায়ী তৈয়বুর রহমান বাসসকে বলেন, গত কয়েকদিন আগে মৌখালী গাজী বাড়ির সামনে ভয়াবহ ফাঁটল দেখা দিলে তখন এটা সংস্কারের জন্য স্থানীয় জনপ্রতিনিধিকে অবহিত করা হয়। তিনি সংশ্লিষ্ট পাউবো কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি তাৎক্ষণিক মুঠোফোনের মাধ্যমে অবগত করেন। এরই মধ্যে গত দুইদিনে বেড়িবাঁধটির অনেকাংশ নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। এ কারণেই মৌখালী গ্রামের শত শত পরিবার আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়েছে।
পানখালী ইউপি চেয়ারম্যান শেখ সাব্বির আহম্মেদ বাসসকে জানান, ক্ষতিগ্রস্ত পাউবোর এ বাঁধটি খরস্রোতা ঝপঝপিয়া নদীর ভয়াবহ ভাঙনে অধিক ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। দ্রুত বিকল্প বাঁধ নির্মাণের জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেছি। তারা এলাকায় এসে বাঁধটি পর্যবেক্ষণ করেছেন। আশা করা হচ্ছে অতিদ্রুত পাউবো এ ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধটি রক্ষায় কাজ শুরু করবেন।
পাউবো-২ খুলনার উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মধুসূদন পাল বলেন, ঝপঝপিয়া নদীগর্ভে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া বেড়িবাঁধটি সরেজমিনে পর্যবেক্ষণ করেছি। দ্রুত পদক্ষেপ নিতে সমীক্ষা শুরু হয়েছে। এছাড়া আশপাশের কয়েকটি স্থানে নদী ভাঙন রোধে পরিকল্পনা গ্রহণ করার জন্য পাউবোর ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি অবগত করা হয়েছে।
এ বিষয়ে খুলনা পানি উন্নয়ন বিভাগ-২ এর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আশরাফুল আলম বাসসকে বলেন, দাকোপের ঝপঝপিয়া নদীর ৭০ মিটারের মতো বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে এখনও মূল নদী থেকে ১৫ মিটারের মতো দূরত্বে রয়েছে। ফলে বাঁধ ভেঙে নদীতে বিলীন হওয়ার আশঙ্কা নেই। তবে, বাঁধের বাইরে একটি মসজিদ রয়েছে। এটা কিছুটা ঝুঁকিপূর্ণ। সবকিছু মিলে আমরা একটা সার্ভে করছি। সার্ভে শেষ হলে বাঁধ রক্ষায় জরুরি পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।