বাসস
  ২৬ অক্টোবর ২০২৫, ২০:৩০

জনগোষ্ঠীর নিরাপদ ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করতে সর্বজনীন পেনশন স্কিম : মন্ত্রিপরিষদ সচিব

ছবি : বাসস

খুলনা, ২৬ অক্টোবর, ২০২৫ (বাসস) : মন্ত্রিপরিষদ সচিব ড. শেখ আব্দুর রশীদ বলেছেন, বাংলাদেশ বর্তমানে জনমিতিক লভ্যাংশের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। ২০৩৩ সালের মধ্যে বয়সজনিত কারণে নির্ভরশীল জনগোষ্ঠীর সংখ্যা যেমন বাড়বে, তেমনি গড় আয়ুও বৃদ্ধি পাবে। এই বিপুল জনগোষ্ঠীর সম্মানজনক ও নিরাপদ ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করতে সর্বজনীন পেনশন স্কিম চালু করা হয়েছে।

আজ রোববার খুলনা বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ের অডিটোরিয়ামে সর্বজনীন পেনশন মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, দুস্থ ও অসহায় জনগোষ্ঠীর সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সরকারের ১৪৩টি কর্মসূচি চলমান ছিল। এবারের বাজেটে কিছু কর্মসূচি কমিয়ে ভাতার পরিমাণ বাড়ানো হয়েছে। তবে উপকারভোগীদের জন্য তা এখনও অপ্রতুল। এসব কর্মসূচি সম্পূর্ণভাবে সরকারের একক ব্যয়ের ওপর নির্ভরশীল।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব আরও বলেন, ‘আমাদের শিক্ষকরা খুব সামান্য পেনশন পান, সেটাও পেতে তাদের কষ্ট করতে হয়। বেসরকারি চাকরিজীবীরা চাকরি হারানোর আশঙ্কায় থাকেন। মাত্র ১৪ লাখ সরকারি কর্মচারী সরকারিভাবে পেনশনের আওতায় রয়েছেন। ফলে দেশের একটি বড় জনগোষ্ঠী এই সুবিধার বাইরে। তাদের জন্য এই স্কিম একটি সুযোগ।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের দুর্ভাগ্য যে উন্নত দেশের তুলনায় পেনশন স্কিম চালু করতে অনেক দেরি হয়ে গেছে। তবে নতুন এই উদ্যোগে বেশ কিছু উৎসাহব্যঞ্জক সুবিধা রয়েছে। গ্রাহকরা নিজের জমাকৃত তহবিল থেকে ঋণ নিতে পারবেন। কমপক্ষে ১০ বছর চাঁদা জমা করলেই পেনশন সুবিধা পাওয়া যাবে। এটি রাজনৈতিক কর্মসূচি নয়, বরং সরকার শতভাগ নিশ্চয়তা দেবে।’

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. ফাহিমুল ইসলাম বলেন, ‘জনগণের প্রতি রাষ্ট্রের দায়িত্ব থেকেই সর্বজনীন পেনশন উদ্যোগের সূচনা হয়েছে।’

খুলনার বিভাগীয় কমিশনার (ভারপ্রাপ্ত) মো. ফিরোজ শাহের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষের নির্বাহী চেয়ারম্যান মো. মহিউদ্দীন খান, খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. জুলফিকার আলী হায়দার, সদস্য (ফান্ড ম্যানেজমেন্ট) মো. গোলাম মোস্তফা এবং অতিরিক্ত ডিআইজি মোহাম্মদ বেলায়েত হোসেন। স্বাগত বক্তব্য দেন অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (সার্বিক) মো. হুসাইন শওকত।

এর আগে সর্বজনীন পেনশন মেলা উপলক্ষ্যে মন্ত্রিপরিষদ সচিবের নেতৃত্বে খুলনা আঞ্চলিক লোক প্রশাসন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র থেকে একটি বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের হয়, যা বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ে এসে শেষ হয়। শোভাযাত্রায় বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশ নেন।

দিনব্যাপী মেলায় সরকারি-বেসরকারি দপ্তর ও ব্যাংকের ৫০টি স্টলে সর্বজনীন পেনশন সংক্রান্ত সেবা প্রদান করা হয়।

পরে বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়ের সম্মেলনকক্ষে অনুষ্ঠিত কর্মশালায় মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘একটি কল্যাণ রাষ্ট্রের প্রধান দায়িত্ব হলো সকল নাগরিকের জন্য আর্থিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। খুলনার উপকূলীয় অঞ্চলে মানুষের জীবন কঠিন। তারা যদি এই স্কিমের আওতায় আসে, সম্মানের জীবন পাবে। তাদের ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করার জন্যই এই সর্বজনীন পেনশন উদ্যোগ।’

এ সময় তিনি বিভাগীয় পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।