শিরোনাম

চট্টগ্রাম, ২৬ অক্টোবর, ২০২৫ (বাসস): চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও এনিম্যাল সাইন্সেস বিশ্ববিদ্যালয় (সিভাসু) গবেষণায় নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে উল্লেখ করে অর্ন্তবর্তী সরকারের শিক্ষা উপদেষ্টা প্রফেসর ড. চৌধুরী রফিকুল আবরার বলেছেন, বাংলাদেশসহ সারাবিশ্বে উদ্ভাবন, সহযোগিতা ও অভিজ্ঞতা বিনিময়ে ভেটেরিনারি শিক্ষা ও গবেষণার ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্ল্যাটফর্ম হিসেবে গড়ে উঠছে।
তিনি আরো বলেন, নতুন প্রযুক্তি, আধুনিক কারিগরি জ্ঞান ও দক্ষ স্নাতক তৈরির মাধ্যমে এ খাতে এখন দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে সিভাসু।
আজ রোববার বিকালে সিভাসু’র অডিটোরিয়াম হলে ১৭তম আন্তর্জাতিক বৈজ্ঞানিক সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অনলাইনে যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিক্ষা উপদেষ্টা এসব কথা বলেন।
প্রফেসর ড. চৌধুরী রফিকুল আবরার বলেন, আমরা যে চ্যালেঞ্জগুলোর মুখোমুখি হই, তা কেবল একটি ডিসিপ্লিন বা সেক্টরের দ্বারা সমাধান করা সম্ভব নয়। জলবায়ু পরিবর্তন, ইমার্জিং ডিজিজেজ এবং পরিবেশগত ক্ষতি মোকাবিলায় প্রাণী চিকিৎসক, খাদ্যবিজ্ঞানী, মৎস্য বিশেষজ্ঞ, বায়োটেকনোলজিস্ট এবং নীতিনির্ধারকদের এক সঙ্গে কাজ করতে হবে।
সিভাসু অনেক গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে অবদান রাখছে উল্লেখ করে শিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, সিভাসু যেমন দক্ষ ভেটেরিনারিয়ান তৈরি করছে, তেমনি নিরাপদ ও পুষ্টিকর খাদ্যের চাহিদা মেটাতেও কাজ করছে। এটি সুনীল অর্থনীতি, সামুদ্রিক সম্পদের ব্যবহার এবং টেকসই জলজ চাষ প্রযুক্তির বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।
তিনি আরো বলেন, বর্তমানে সিভাসু সত্যিকারার্থে একটি সেন্টার অব এক্সেলেন্স হয়ে উঠেছে। এটি এখন আর শুধু একটি একাডেমিক প্রতিষ্ঠান নয়, এটি উদ্ভাবন, ফলিত গবেষণা এবং শিল্পের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ অংশদারিত্বের কেন্দ্র হয়ে উঠেছে।
শিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশের ভেটেরিনারি শিক্ষার ইতিহাসের দিকে তাকালে দেখা যায়, গত দুই দশকে এ খাতে ব্যাপক পরিবর্তন ঘটেছে। ১৯৯৯ সালের পর থেকে দেশের পশুসম্পদ ও পোল্ট্রি খাত অসাধারণ উন্নতি লাভ করেছে। একসময় পারিবারিক চাষাবাদে সীমিত এই খাত এখন বৃহৎ শিল্পে পরিণত হয়েছে, যা স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করছে।
সিভাসু’র উপাচার্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ লুৎফুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. আলিমুল ইসলাম এবং স্টেট ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. আখতার হোসেন খান।
অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন যুক্তরাজ্যের প্রখ্যাত ভেটেরিনারি এপিডেমিওলজিস্ট এবং ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. আলাসডেয়ার অ্যালেক্স জে. কুক। স্বাগত বক্তব্য রাখেন, সম্মেলনের আহ্বায়ক এবং সিভাসু’র ওয়ান হেলথ ইনস্টিটিউটের পরিচালক প্রফেসর ড. মো. আহসানুল হক। শেষে পোস্টার প্রেজেন্টেশন ও প্রদর্শনী স্টল উদ্বোধন করেন উপাচার্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ লুৎফুর রহমান।
এবারের বৈজ্ঞানিক সম্মেলনে বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল, ভিয়েতনাম, থাইল্যান্ড ও যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান থেকে ৫ শতাধিক গবেষক অংশগ্রহণ করছেন। তিন দিনের সম্মেলনে ১৬০টি গবেষণা প্রবন্ধ উপস্থাপন করা হবে। আগামী ২৮ অক্টোবর ২০২৫ মঙ্গলবার বিকেল ৪টায় সম্মেলনের সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার।