বাসস
  ০১ অক্টোবর ২০২৫, ১৭:৩৫

মানিলন্ডারিংয়ের অভিযোগে ছয়জনের বিরুদ্ধে সিআইডি’র মামলা

ঢাকা, ১ অক্টোবর, ২০২৫ (বাসস) : মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকের সঙ্গে আর্থিক প্রতারণা, হুন্ডি কার্যক্রম পরিচালনা ও স্বর্ণ চোরাচালানের মাধ্যমে প্রায় ৬০৮ কোটি টাকা মানিলন্ডারিংয়ের অভিযোগে ছয়জনের বিরুদ্বে মামলা করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।

মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ (সংশোধিত ২০১৫) এর ৪(২)/৪(৪)/৮(২) ধারায় ডিএমপির কোতয়ালী থানায় গতকাল এ মামলা দায়ের করা হয়েছে। 

মামলায় অভিযুক্তরা হলেন- মনীন্দ্র নাথ বিশ্বাস (৫০), ওয়াহিদুজ্জামান (৫২), মো. গোলাম সারওয়ার আজাদ (৫১), মো. তরিকুল ইসলাম ওরফে রিপন ফকির (৪৯), রাজীব সরদার (৩৭) এবং উজ্জ্বল কুমার সাধু (৩৮)। এছাড়া অজ্ঞাতনামা আরও ৫/৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।

সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার (মিডিয়া) জসীম উদ্দিন খান আজ এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

এতে বলা হয়, একজন মার্কিন নাগরিকের সঙ্গে প্রতারণার অভিযোগে সিআইডি ছয়জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে। 

ডেবোরাহ রামলোর সঙ্গে সখ্য গড়ে তুলে প্রতারকচক্রটি ড্রাগ এনফোর্সমেন্ট এজেন্টের (ডিইএ) পরিচয়ে ২ লাখ ২২ হাজার ডলার আত্মসাৎ করে। এ অর্থ বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের মাধ্যমে আমেরিকা থেকে পাঠানো হয় এবং তাদের অভিভাবকদের কাছ থেকে টাকা সংগ্রহ করা হয়। যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থার তথ্যের ভিত্তিতে সিআইডি তদন্ত শুরু করে। অভিযুক্তরা হুন্ডি, মানিলন্ডারিং ও দীর্ঘদিন ধরে প্রতারণা কার্যক্রম চালিয়ে আসছিল।

এই সংঘবদ্ধ প্রতারণা ও হুন্ডি কার্যক্রম পরিচালনায় অভিযুক্তগণ নামসর্বস্ব বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নামে ব্যাংক একাউন্ট খুলে দীর্ঘদিন ধরে বড় অংকের টাকা লেনদেন করে আসছে। অনুসন্ধানে উঠে আসে আইনক্স ফ্যাশনের নামে ইউসিবিএল-এ একটি ব্যাংক একাউন্ট, ভাই-ভাই এন্টারপ্রাইজের নামে ঢাকা ব্যাংক, ওয়ান ব্যাংক, এবি ব্যাংক ও এনআরবিসি ব্যাংকে পৃথক চারটি ব্যাংক একাউন্ট, জামান এন্টারপ্রাইজের নামে ব্র্যাক ব্যাংকে একটি ব্যাংক একাউন্ট এবং নোহা এন্টারপ্রাইজের নামে সাউথ-ইস্ট ব্যাংকে একটি ব্যাংক একাউন্টের অস্তিত্ব পাওয়া যায়। এসব ব্যাংক একাউন্টে বিপুল পরিমাণ জ্ঞাত আয়-বহিঃর্ভূত লেনদেনের রেকর্ড রয়েছে। এছাড়াও মামলায় অভিযুক্ত মনীন্দ্র নাথ বিশ্বাস নামীয় একাউন্টেও অবৈধ লেনদেনের তথ্য উঠে এসেছে।

মার্কিন নাগরিকের প্রতারিত হওয়ার অভিযোগটির অনুসন্ধানকালে আরও উঠে আসে অভিযুক্তরা স্বর্ণ চোরাচালান কারবারের সঙ্গেও জড়িত। তারা বিশেষ যোগাযোগের মাধ্যমে মধ্যপ্রাচ্য থেকে আসা ব্যক্তি ও ঢাকার তাঁতীবাজারসহ অন্যান্য স্থানের বিভিন্ন দোকান হতে ভাঙ্গারি স্বর্ণ সংগ্রহ করে তা গলিয়ে পাকা সোনার বার আকারে রূপান্তরিত করে দীর্ঘদিন ধরে পাচার করে আসছে। এসব পাচারকৃত সোনার বার মূলত সাতক্ষীরা সীমান্ত দিয়ে ভারতে পাচার করা হয়।

প্রাথমিক অনুসন্ধানে আরও জানা যায় যে, এসব কার্যক্রমের মাধ্যমে অভিযুক্তরা মোট প্রায় ৬০৮ কোটি ৩৩ লাখ ৩০ হাজার ৩৭২ টাকা টাকা হস্তান্তর, স্থানান্তর ও রুপান্তর করে ভোগ-বিলাস, অর্থ পাচারসহ নামে-বেনামে সম্পত্তির মালিক হয়েছে।

মামলার পূর্ণ রহস্য এবং অজ্ঞাতনামা অন্যান্য আসামিদের নাম-ঠিকানা উদ্ঘাটন ও শনাক্তপূর্বক সব আসামিকে আইনের আওতায় আনতে মামলার তদন্ত কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে বলেও জানানো হয়েছে।