শিরোনাম
বরিশাল, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫ (বাসস): মৃৎশিল্পে অবদানের জন্য বরিশালে ১২ জন মৃৎশিল্পীকে সম্মাননা প্রদান করা হয়েছে। এ উপলক্ষে বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্তের মৃৎ শিল্পীদের অংশগ্রহণে সম্মেলন, মৃৎ শিল্প প্রদর্শনী ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। আজ সোমবার সকাল সাড়ে দশটায় বরিশাল নগরীর রজনীগন্ধা কমিউনিটি সেন্টারে ১৬তম দক্ষিণাঞ্চলীয় মৃৎশিল্পী সম্মেলন উপলক্ষে এ সম্মাননা দেওয়া হয়। সম্মাননা অনুষ্ঠানে রাজশাহী, কিশোরগঞ্জ, টাঙ্গাইল, ফরিদপুর, রাজবাড়ী ও বরিশাল বিভাগের বিভিন্ন প্রান্তের ৬৫ জন মৃৎশিল্পী অংশ নেন। মৃৎশিল্পী সম্মাননা ও সংবর্ধনা আয়োজক কমিটি এ অনুষ্ঠান আয়োজন করে।
বরিশালের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোহাম্মদ ওবায়দুল্লাহ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন আজীবন মৃৎশিল্পী সম্মাননা তুলে দেন শরীয়তপুর জেলার কাইলেরা গ্রামের কালীপ্রসন্ন পালের হাতে।
অন্যান্যের মধ্যে সংগ্রামী সুধীর সেন মৃৎশিল্পী সম্মাননা (গুনরাজ বিভাগ) পেয়েছেন সুজন চন্দ্র পাল এবং সাথী রাণী দে মৃৎশিল্পী সম্মাননা (মৃৎপাত্র বিভাগ) পেয়েছেন রানী বালা পাল। রাজশাহীর সঞ্জয় কুমার পাল পেয়েছেন শিক্ষক নারায়ণ সাহা মৃৎশিল্পী সম্মাননা (চিত্রিত হাঁড়িশখের হাঁড়ি বিভাগ)। শহীদ জায়া বন্দনা গুপ্তা মৃৎশিল্পী বিশেষ সম্মাননা পেয়েছেন টাঙ্গাইলের শোভা রানী পাল। বিমলা নাথ মৃৎশিল্পী সম্মাননা (চিত্রিত হাঁড়িমনসা ঘট বিভাগ) পেয়েছেন রুমা রানী পাল।
এ ছাড়া মুক্তিযোদ্ধা কুমুদ বন্ধু রায় চৌধুরী (নাটু বাবু) মৃৎশিল্পী সম্মাননা (মৃৎপুইন বিভাগ) পেয়েছেন যুবরাজ পাল এবং সুনীতি রানী দাস মৃৎশিল্পী সম্মাননা (মৃৎপুতুল বিভাগ) পেয়েছেন ময়মনসিংহের খোকন চন্দ্র পাল। ফজিলাতুন্নেছা বেগম মৃৎশিল্পী সম্মাননা পেয়েছেন মায়া রানী পাল, আর শৈলবালা ঘোষ মৃৎশিল্পী সম্মাননা (গুনরাজ বিভাগ) পেয়েছেন গণেশ চন্দ্র পাল। একইভাবে মা মৃৎশিল্প স্মারক সম্মাননা পেয়েছেন উত্তম পাল এবং দৈনিক শাহনামা মৃৎশিল্পী সম্মাননা পেয়েছেন বরিশালের গৌরনদী উপজেলার গৈলা পালপাড়ার যুথিকা পাল।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ ওবায়দুল্লাহ বলেন, ‘মৃৎপণ্য যেমন ঐতিহ্যশালী, তেমনি পরিবেশসম্মত। আমরা যদি এগুলো ব্যবহার করি তবে মৃৎশিল্পীরা উপকৃত হবেন। সম্মেলনে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের সহযোগী অধ্যাপক আবদুস সাত্তার তৌফিক, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ফোকলোর বিভাগের অধ্যাপক উদয় শঙ্কর বিশ্বাস, প্রবীণ চিত্রশিল্পী কাজী মোজাম্মেল হোসেন ও দীপঙ্কর চক্রবর্তী। সম্মেলনে স্বাগত বক্তব্য দেন আয়োজক সংগঠনের আহ্বায়ক সুশান্ত ঘোষ।
সম্মেলনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের সহযোগী অধ্যাপক আবদুস সাত্তার তৌফিক বলেন, মৃৎশিল্প রক্ষায় সরকারের এগিয়ে আসা জরুরি। পাশাপাশি দৈনন্দিন জীবনে মৃৎপণ্যের ব্যবহার বাড়াতে তিনি সবার প্রতি আহ্বান জানান। অনুষ্ঠানের শুরুতে প্রান্তিক সংগীত বিদ্যালয় ও চারুকলার শিক্ষার্থীদের আয়োজনে সংগীত, নৃত্য ও আবৃত্তি পরিবেশন করা হয়।
মৃৎশিল্পী সম্মেলন ও সম্মাননা উৎসবের আয়োজক সুশান্ত ঘোষ বলেন, ‘গত ১৬ বছর ধরে আমরা এই আয়োজন করে যাচ্ছি। এ শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে এবং শিল্পীরা যাতে আরও সমৃদ্ধি লাভ করতে পারে সে লক্ষ্যে প্রতি বছর আমরা এ উৎসবের আয়োজন করি। এবারও তার ব্যতিক্রম নয়।’