শিরোনাম
নিউইয়র্ক, ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ (বাসস) : প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) এর সম্ভাব্য বিপদের বিষয়ে সতর্ক করেছেন, যদিও এর অনেক সুবিধা রয়েছে।
তিনি বলেন, তথ্য-ভিত্তিক সূক্ষ্মদৃষ্টির ফলে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সংঘাত প্রতিরোধ, শান্তিরক্ষা, সংঘাত-পরবর্তী পুনরুদ্ধার, আগাম সতর্কতা ব্যবস্থা এবং আরো যথাযথ মানবিক প্রতিক্রিয়ার জন্য একটি শক্তিশালী সহায়ক হতে পারে। একইসঙ্গে এআই-এর সম্ভাব্য বিপদগুলোও ক্ষতিকর এবং এই বিপদগুলো থেকে রক্ষার জন্য আমাদেরকে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক উভয় পর্যায়ে উপযুক্ত নীতিগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজন।
বুধবার জাতিসংঘ সদর দফতরে ‘কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এবং আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তা’ শীর্ষক নিরাপত্তা পরিষদের উচ্চ-পর্যায়ের উন্মুক্ত বিতর্কে তিনি এ কথা বলেন।
লুৎফে সিদ্দিকী বলেন, স্বচালিত অস্ত্র, অপতথ্য প্রচার, ডিপ-ফেক ভিডিও ও অ্যালগরিদমিক পক্ষপাতিত্বের ক্ষেত্রে এআই ব্যবহারের মাধ্যমে শান্তি এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে বিপন্ন করা যেতে পারে, যা বিশ্বাস ভঙ্গ, অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি এবং গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ বিশ্বের সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ দেশ। এর একটা বৃহৎ অংশ তরুণ।
লুৎফে সিদ্দিকী বলেন, ঘনবসতি এলাকায় অনলাইনে অপতথ্য খুব দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে এবং বাস্তব জগতে মারাত্মক পরিণতি বয়ে আনতে পারে। বিশেষ করে যখন এই অপতথ্য আমাদের সীমান্তের বাইরে থেকে পরিচালিত হয়, তখন নীতিগত চ্যালেঞ্জগুলো ব্যাপক, যদি না আমরা আন্তর্জাতিকভাবে একসঙ্গে কাজ করি।
তিনি বলেন, জাতিসংঘের কাছে একটি সুযোগ রয়েছে। সেটা হলো সকল সদস্য রাষ্ট্র আন্তর্জাতিক সীমানা পেরিয়ে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অপতথ্য প্রতিরোধে একটি গঠনমূলক ভূমিকা পালন করতে পারে।
তিনি আরো বলেন, জাতিসংঘ বৈশ্বিক প্ল্যাটফর্ম বা প্রযুক্তি কোম্পানি ও সরকারগুলোর মধ্যে আরো সহযোগিতা নিশ্চিত করতে একটি অনুঘটকের ভূমিকা পালন করতে পারে।
বিশেষ দূত বলেন, সদস্য রাষ্ট্রগুলো তাদের জনগণকে এআই দ্বারা প্রস্তুতকৃত অপতথ্য সম্পর্কে সচেতন করতে অভিজ্ঞতা ভাগাভাগি করার জন্য একসঙ্গে কাজ করতে পারে।
তিনি বলেন, আমরা দায়িত্বশীলতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে মানুষের কেন্দ্রীয় ভূমিকার গুরুত্বের ওপর জোর দিই এবং রাষ্ট্রগুলোকে আন্তর্জাতিক আইন মেনে চলার আহ্বান জানাই। শান্তিরক্ষা এবং শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য নিরাপত্তা পরিষদকে এআই ব্যবহারের ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা এবং মানুষের তত্ত্বাবধানে উৎসাহিত করা উচিত।
সিদ্দিকী বলেন, বাংলাদেশ জাতিসংঘ ও বহুপক্ষীয় চলমান উদ্যোগগুলোর প্রতি সমর্থন জানায়, এর মধ্যে জাতিসংঘ মহাসচিবের গ্লোবাল ডিজিটাল কম্প্যাক্টের আহ্বান, সম্প্রতি চালু হওয়া গ্লোবাল ডায়ালগ অন এআই গভর্নেন্স এবং একটি স্বাধীন আন্তর্জাতিক বৈজ্ঞানিক প্যানেল প্রতিষ্ঠার বিষয়ও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
তিনি বলেন, আমরা বিশ্বাস করি, এই উদ্যোগ কেবল শান্তি ও নিরাপত্তার জন্যই গুরুত্বপূর্ণ নয়, এগুলো সবার জন্য এআই এর উপকারিতা লাভ এবং ঝুঁকিপূর্ণ ব্যক্তিদের ক্ষতি থেকে রক্ষা করবে।
বিশেষ দূত বলেন, বাংলাদেশ এই উদ্যোগগুলোর অংশ হতে প্রস্তুত।