শিরোনাম
/কামরুল হাসান /
কুমিল্লা, ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ (বাসস) : সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজার প্রস্তুতি কুমিল্লায় চলছে পুরোদমে। নগরী ও জেলার বিভিন্ন মণ্ডপে প্রতিমা তৈরি, প্যান্ডেল নির্মাণ এবং সাজসজ্জার কাজে শিল্পী ও কারিগররা ব্যস্ত সময় পার করছেন। এখন পূজায় মেতে উঠার অপেক্ষায় হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন।
সরেজমিনে দেখা যায়, মণ্ডপে মণ্ডপে চলছে ব্যাপক প্রস্ততি। প্রথম পর্যায়ের প্রস্তুতি শেষ। শেষ পর্যায়ে প্রতিমায় রং তুলির আঁচড়ের কাজ চলছে। অন্য দিকে সাজসজ্জা, আলোকসজ্জা, প্যান্ডেল তৈরি ও ডেকারেশনসহ অন্যান্য কাজগুলো এগিয়ে চলছে। দুর্গা প্রতিমা ছাড়াও মণ্ডপের জন্য তৈরি করা হচ্ছে লক্ষ্মী, সরস্বতী, কার্তিক, গণেশ, অসুর, সিংহ, মহিষ, পেঁচা, হাঁস, সর্পসহ প্রায় ১২টি প্রতিমা। অর্থাৎ পুরোদমে চলছে দুর্গোৎসব উদযাপনের প্রস্তুতি।
একইসঙ্গে নগরীর শপিংমলগুলোতেও বেড়েছে ক্রেতাদের ভিড়। সব মিলিয়ে দুর্গাপূজা উপলক্ষে উৎসবের নগরী হয়ে উঠেছে কুমিল্লা।
জানা গেছে, এ বছর কুমিল্লায় মণ্ডপের সংখ্যা বেড়েছে ৬৪টি। জেলার ১৭ উপজেলায় মোট ৮১৮ মণ্ডপ স্থাপন করা হয়েছে। এর মধ্যে ৭৬৫টি প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া হবে।
ঠাকুরপাড়া এলাকার প্রতিমাশিল্পী রতন পাল বলেন, চার মাস আগে থেকে প্রতিমা তৈরির কাজ শুরু করেছি। এখন চলছে শেষ মুহূর্তের তুলির আঁচড়। একেকটি প্রতিমা ২৫ হাজার টাকা থেকে দেড় লাখ টাকায় বিক্রি করি। কোনো কোনো পূজা কমিটি এরই মধ্যে প্রতিমা ডেলিভারি নিতে শুরু করেছে।
প্রতিমা তৈরির কারিগর অসীম কুমার সেন বলেন, ৮ বছর ধরে প্রতিমা বানানোর কাজ করছি। এ বছর ৫টি প্রতিমার অর্ডার পেয়েছি। প্রতিমা তৈরির প্রকার ভেদে ২০ হাজার থেকে ৪০ হজার টাকা মজুরি পাই। তবে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস পত্রের দাম বৃদ্ধি হওয়ার প্রতিমা তৈরিতেও খরচ বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে তেমন একটা লাভ হবে না।
মুরাদনগর হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি শঙ্কর দেবনাথ জানান, মুরাদনগরে ১২২ টি পূজামণ্ডপ স্থাপিত হয়েছে। যা কোনো একটি উপজেলায় সর্বোচ্চ। এখানে প্রশাসনের লোকজন তৎপর। কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়াই এবারের পূজা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হবে আশা করি।
কুমিল্লা পূজা উদযাপন ফ্রন্টের সদস্য সচিব সঞ্জীব দেবনাথ বলেন, আমরা তিন মাস আগে থেকেই পূজার প্রস্তুতি নিয়েছি। পূজায় উৎসবের মাত্রা বাড়বে। এবারের পূজায় বিঘ্ন ঘটার আশঙ্কা নেই।
এ দিকে পূজা উদযাপনের সার্বিক নিরাপত্তায় সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। অধিকাংশ মণ্ডপে লাগানো হচ্ছে সিসিটিভি ক্যামেরা। এছাড়া পূজামণ্ডপে সার্বক্ষণিক নিজস্ব স্বেচ্ছাসেবী টিম থাকবে বলে জানিয়েছে পূজা উদযাপন কমিটি।
এ বিষয়ে পুলিশ সুপার নজির আহমেদ খান বলেন, সনাতন ধর্মাবলম্বীদের দুর্গাপূজা উপলক্ষে জেলা পুলিশ ৩ টা অংশে কাজ করবে। পূজার প্রস্তুতিকালীন, পূজা চলাকালীন ও বিসর্জনের সময়। ৯৫০ জন পুলিশ সদস্য ছোট ছোট টিম করে সার্বক্ষণিক নিরাপত্তায় নিয়োজিত থাকবে। গুরুত্বপূর্ণ ও ঝুঁকিপূর্ণ মণ্ডপে ফিক্সড পুলিশ স্ট্যান্ড থাকবে। এছাড়াও ডিবির কুইক রেসপন্স টিম থাকবে। ৯৯৯ সেবা সর্বদা অব্যাহত থাকবে।